ব্যারিস্টার মঈনুলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে যুক্তরাজ্য যুব মহিলা লীগের প্রতিবাদ সভা

৭১ টেলিভিশনের টকশোতে একজন নারী সাংবাদিক কে চরিত্রহীন বলে সকল নারী সমাজকে অপমান করার অপরাধে জামাত বিএনপির এজেন্ট ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে যুক্তরাজ্য যুব মহিলা লীগ। শনিবার ( ২৭ অক্টোবর ) পূর্ব লন্ডনের একটি ভেনুতে কমিউনিটির নারী নেতৃত্ব এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে এ প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
যুক্তরাজ্য যুব মহিলা লীগের সাধারন সম্পাদক সাজিয়া স্নিগ্ধার সভাপতিত্বে এবং সহ সাধারন সম্পাদক শাহিন লীনার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ। বিশেষ অতিথি ছিলেন যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আহাদ চৌধুরী,যুক্তরাজ্য মহিলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি নিলুফা আকতার, সহ সাধারন সম্পাদক শাহিন আকতার।


স্বাগত বক্তব্যে যুক্তরাজ্য যুব মহিলা লীগের সাধারন সম্পাদক সাজিয়া স্নিগ্ধা বলেন,সমাজে এখনও নারীকে তাঁর যোগ্যতা , মেধা , শিক্ষার মাপকাঠিতে মূল্যায়ন করা হয় না। যুক্তিহীন মানুষই সাধারণত ব্যক্তিগত আক্রমণ করে। একজন নারীর ক্ষেত্রে বিষয়টি সবসময়ে তার চরিত্রকে নির্দেশ করে আক্রমণ করা হয়।ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন সে কাজটি করেছেন।যখন দেখেছেন তার থলের বিড়াল বের হয়ে যাচ্ছে তিনি তখন গণমাধ্যমে নারীর চরিত্র হননের পথ বেছে নিয়েছেন।ব্যক্তিত্বহীন,কাপুরুষরাই নারীদের অসম্মান করে। সকল নারীর নিরাপত্তার জন্য ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির প্রয়োজন।
এরপর ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনের অতীত ইতিহাস এবং কুকীর্তির বিস্তারিত তুলে ধরেন শাহিন লিনা। সংসারে নারীর তিন রূপ- কন্যা, জায়া, জননী। সেই আদিম কাল থেকে নারীর আজকের অবস্থান তুলে ধরেন মিফাতুল নুর এবং সালমা আকতার।
প্রধান অতিথি যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ বলেন,শুধু ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন না , যারা নারীর প্রতি এমন হীন আচরন করে এবং যারা মঈনুলের সাফাই গাচ্ছে বক্তব্যে কিংবা লেখায় তারা সবাই অপরাধী। সবাইকেই বিচারের আওতায় আনা উচিত।এ মুহূর্তে ব্যারিস্টার মঈনুলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়াটা খুব জরুরি সবার জন্য।
শাহিন আকতার বলেন, শিক্ষিত নামধারী অশিক্ষিত ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন সাংবাদিক মাসুদা ভাটটিকে লাইভ শোতে চরিত্রহীন বলে সমগ্র নারী জাতিকে অপমান করেছেন। সমগ্র নারী জাতির পক্ষ থেকে তার শাস্তি দাবী করি আমরা। ফিজিক্যাল ভায়লেন্স যেমন নিন্দনীয় তেমনি প্রকাশ্যে এ ধরনের অশ্লীল বাক্য নারীকে মানসিক ভাবেও বিপর্যস্ত করে। ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন দুই অপরাধেই অপরাধী।
সাংবাদিক মাসুদা ভাটটির বন্ধু নার্গিস কবির বলেন, সাংবাদিক মাসুদা ভাটটি শুধু সামাজিক ভাবেই হেয় প্রতিপন্ন হননি তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে। সাংবাদিক মাসুদা ভাটটিকে সমাজ ছাড়া,আত্মীয় পরিজন ছাড়া এমনকি দেশ ছাড়া করার পায়তারা করা হচ্ছে। তাঁর মানসিক অবস্থার কথা ভেবে দেখেছেন একবার ? দল মত, নারী পুরুষ নির্বিশেষে অসংখ্য নারীর সম্মানহানির ক্ষতের জায়গাটি উপলব্ধি করবেন সবাই আশা করি ।
যুক্তরাজ্য যুব মহিলা লীগের অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন মাসুদা ভাট্টিকে একজন নারী বলেই সরাসরি তাকে চরিত্রহীন বলার ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। কারণ, নারীর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলা পুরুষতান্ত্রিক সমাজের সবচেয়ে বড় অস্ত্র। তিনি মাসুদা ভাট্টিকে আক্রমণ করতে গিয়ে সব নারীকে অপমান করেছেন এবং এজন্য তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি আমরা যুক্তরাজ্য যুব মহিলা লীগ দাবি করছি।’যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ করতে যে কোন কাপুরুষ ১০০ বার চিন্তা করে। সমগ্র নারী সমাজের পক্ষ থেকে ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনকে ধিক্কার জানাই।
প্রতিবাদ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য যুব লীগের সহ সাধারন সম্পাদক জামাল খান, যুক্তরাজ্য মহিলালীগের প্রচার সম্পাদক ইফফাত আরা রোজি, মিফাতুল নুর নার্গিস কবির, সালমা আকতার,মিতা কামড়ান,জুয়েল রাজ, সারয়ার কবির, রেজা খান,সাইকা, দুদু মিয়া,শোভন প্রমুখ।
উল্লেখ্য গত ১৬ অক্টোবর একাত্তর টেলিভিশনের লাইভ অনুষ্ঠানে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টি একটি প্রশ্ন করে জানতে চান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে আপনাকে শিবিরের একটি জনসভায় অংশ নিতে দেখা গেছে। সে কারণে অনেকেই প্রশ্ন করেছেন আপনি কি জামায়াতের প্রতিনিধি হিসেবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে উপস্থিত থাকছেন কিনা। ‘প্রশ্নটি শেষ করার আগেই ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে যান এবং বলেন, আপনার সাহসের প্রশংসা করতে হয়। তবে, আমি আপনাকে একজন চরিত্রহীন বলতে চাই।

Advertisement