ব্রিটেনের লকডাউন প্রত্যাহার নিয়ে ১২০০ বিজ্ঞানীর উদ্বেগ

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ইংল্যান্ডের মহামারির বিধিনিষেধ সোমবার থেকে লকডাউন শিথিল করার ঘোষণা দিয়েছেন। এই পদক্ষেপকে ‘আনলক ব্রিটেন’ হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে। কিন্তু ১২০০ আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ বলছেন, যুক্তরাজ্যের এই উদ্যোগ বিশ্বের জন্য হুমকি এবং টিকা প্রতিরোধী করোনাভাইরাসের ভ্যারিয়েন্টের আত্মপ্রকাশের উর্বর ক্ষেত্র তৈরি করবে। শুক্রবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান-এর এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানা গেছে।শুক্রবার এক জরুরি সম্মেলনে নিউ জিল্যান্ড, ইসরায়েল ও ইতালি সরকারের উপদেষ্টারা যুক্তরাজ্যের সিদ্ধান্ত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। একই সঙ্গে এই পদক্ষেপের ফলে টিকা প্রতিরোধী করোনার ভ্যারিয়েন্ট দেখা দিতে পারার আশঙ্কাকে সমর্থন জানিয়েছেন ১২০০ বিজ্ঞানী। চিকিৎসাবিষয়ক আন্তর্জাতিক জার্নাল ল্যানসেট-এ বিজ্ঞানীদের একটি চিঠিতে তারা বিষয়টি তুলে ধরেছেন।

চিঠিতে বিজ্ঞানীরা লিখেছেন, আমরা মনে করি সরকার একটি বিপজ্জনক ও অনৈতিক পরীক্ষার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা ১৯ জুলাই থেকে করোনার স্বাস্থ্যবিধি প্রত্যাহারের পরিকল্পনা স্থগিত করার আহ্বান জানাচ্ছি।

শুক্রবারের সম্মেলনে অংশ নেওয়া ক্লিনিক্যাল এপিডেমিওলজিস্ট ও কুইন ম্যারি ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের সিনিয়র লেকচারার ড. দীপ্তি গুরদাসানি বলেন, বিশ্ব তাকিয়ে দেখছে এড়ানোর সুযোগ থাকা সংকট যুক্তরাজ্যে দানা বাঁধছে।টুইটারে তিনি আরও লিখেছেন, আসুন কোনও বিভ্রান্তির মধ্যে না থাকি– আমরা এমন দেশে আছি যেটির সরকার তরুণদের একটি ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সর্বোচ্চ ঝুঁকি তৈরির পদক্ষেপ নিচ্ছে।এর আগে লকডাউন শিথিলের সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)। সংস্থাটির চেয়ারম্যান ডা. চান্দ নাগপৌল সমালোচনা করে বলেন, যুক্তরাজ্যে আগামী ১৯ জুলাই লকডাউনে যে শিথিলতা আসছে তা খুবই খারাপ হতে যাচ্ছে। ওই দিনটিকে স্বাধীনতা দিবস বলছেন অনেকে। সরকারের এ ধরনের পদক্ষেপে দেশে করোনার সংক্রমণ আবারও বৃদ্ধি পাবে।

সম্প্রতি ডাউনিং স্ট্রিটে এক সংবাদ সম্মেলনে বরিস জনসন আগামী ১৯ জুলাই যুক্তরাজ্যে করোনার সব বিধিনিষেধ তুলে দেওয়ার ঘোষণা দেন। যুক্তরাজ্যে প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশের বেশি মানুষ করোনা টিকার দুটি ডোজ নিয়েছেন এবং প্রায় ৮৮ শতাংশ এক ডোজ পেয়েছেন। সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার কমে আসলেও বিধিনিষেধ তুলে নিলে পরিস্থিতি পাল্টাতে সময় লাগবে না জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

Advertisement