ব্রিটবাংলা ডেস্ক : ভোটে প্রতারণা বা জ্বালিয়াতি ঠেকাতে ভোটাধিকার প্রয়োগের সময় ফটো আইডি প্রদর্শন বাধ্যতামূলক করার পরিকল্পনা করছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। ২০২৩ সাল থেকে ব্রিটেন এবং ইংল্যান্ডের সব নির্বাচনে ফটো আইডি বাধ্যতামূলক করার লক্ষ্যে আইন প্রনয়নের জন্যে একটি বিল পার্লামেন্টে উত্থাপন করা হতে পারে বলে গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক সংবাদে জানানো হয়েছে।
কিন্তু ইংলিশ নির্বাচনে বা ভোটে ফটো আইডি বাধ্যতামূলক করা হলে ভোটে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্যে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে বলে সতর্ক করেছেন গণতন্ত্রে সমঅধিকার রক্ষাকারী ক্যাম্পেইনাররা।
ব্রিটেনে প্রায় ১১ মিলিয়ন ভোটার অর্থাৎ প্রায় ২৪ শতাংশ ভোটারের পাসপোর্ট অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। এছাড়া সাম্প্রতিক এক তথ্য জানা গেছে, ইংল্যান্ডের প্রায় ২৪ শতাংশ শ্বেতাঙ্গ, ৩৯ শতাংশ এশিয়ান এবং ৪৭ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিকের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। অন্যদিকে ব্রিটেনে এখনো প্রায় ৯ মিলিয়নের বেশি মানুষ ভোটার তালিকায় নাম তুলেননি।
গবেষণা সংস্থা রানিমেইড ট্রাস্টের ডাইরেক্টর ডক্টর হালিমা বেগম বলেছেন, ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তি এবং ভোটে দাঁড়ানোর প্রবনতা বিএএমই কমিউনিটিতে এমনিতেই কম। তিনি বলেন, রাজনীতিক এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি যেখানে আস্থা এমনিতেই নি¤œগামি সেখানে এ ধরনের আইন রাজনীতিক এবং গণতন্ত্রের প্রতি আরো বেশি নেতিবাচক ধারণা তৈরী করবে।
গত সপ্তাহে শীর্ষ তিনটি মার্কিন সিভিল রাইটস গ্রুপ সতর্ক করে বলেছে, ব্রিটিশ সরকার মার্কিন রিপাবলিকান স্টাইলে আইনের পরিকল্পনা করছে। এ ধরনের আইন গণতন্ত্রকে শক্তিশালি করার পরিবর্তে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি মানুষের বিশ্বাস হ্রাসে সহায়তা করে বলে সতর্ক করেছে মার্কিন সিভিল রাইটস গ্রুপ।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যেখানে ভোটারদের অধিকার বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছেন সেখানে ব্রিটেনে এ ধরনের আইনের পরিকল্পনার সমালোচনা করেন ক্যাম্পেইনাররা।
ভোটে ফটো আইডি বাধ্যতামূলক করা হলে ব্রিটেনের জিপসি সমাজের জন্যেও বিপর্যয়কর হবে বলে মনে করছেন ক্যাম্পেইনাররা। জিপসিদের এমনিতেই মূলধারার রাজনীতিতে এতো মূল্যায়ন করা হয় না। তাই ভোটে ফটো আইডি বাধ্যতামূলক করার বিলটি পার্লামেন্টে উত্থাপনের আগে প্রকৃত সমস্যার প্রতি নজর দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দ্যা ইলেক্টরাল রিফর্ম সোসাইটি। ব্রিটেনে এখনো প্রায় ৯ মিলিয়ন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করাননি। তাই তাদের ভোটের আওতায় নিয়ে আসতে আরো জোর দেওয়ার তাগিদ দিয়েছে সংস্থাটি।
এদিকে কন্সটিটিউশন এবং ডেভোলিউশন মন্ত্রী ক্লোয়ে স্মীথ বলেছে, ২০০৩ সালে লেবার পার্টি ক্ষমতায় থাকাকালিন সময়ে নর্দর্ন আয়ারল্যান্ডে প্রথম ভোটে ফটো আইডি বাধ্যতামূলক করা হয়। কিন্তু এরপর থেকে সেখানে সংল্যালঘু বা পিছিয়ে পড়া কোনো কমিউনিটিকে ভোট দানে বিরত থাকতে বা ভোটে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো প্রতিকূলতায় পড়েছে বলে দেখা যায়নি।