ব্রিটবাংলা ডেস্ক : ব্রিটেনে দ্বিতীয় দফায় ব্যাপকহারে করোনার বিস্তার বাড়ছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ নতুনভাবে করোনায় সংক্রমিত হচ্ছে। বাড়ছে হাসপাতালে করোনা রোগির ভর্তি এবং করোনায় মৃতের সংখ্যা। প্রথম দফার অভিজ্ঞতাকে সামনে রেখে দ্বিতীয় দফায় করোনা রোগিদের সেবা দিতে হাসপাতালে রাখা হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। করোনার বিস্তার ঠেকাতে ইংল্যান্ডে চলছে দ্বিতীয় দফায় জাতীয় লকডাউন। স্কটল্যান্ড, ওয়েলস এবং নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডে করোনা বিস্তার ঠেকাতে স্থানীয়ভাবে নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
দ্বিতীয় দফা করোনা মোকাবেলার এতো প্রস্তুতির মাঝে ভিসা জটিলতায় ব্রিটেন ত্যাগের প্রহর গুণতে হচ্ছে এনএইচএস ওয়ার্কারদের। যদিও প্রায় ১ লাখ ২২ হাজার হেলথ এবং কেয়ারওয়ার্কারের পদ শূন্য রয়েছে শুধু ইংল্যান্ডেই। কমন্স লাইব্রেরির তথ্য অনুযায়ী, এনএইচএস ইংল্যান্ডের প্রায় ১৩ দশমিক ৮ শতাংশ ষ্টাফ ব্রিটিশ নাগরিক নয়। এছাড়া এনএইচএসের সর্বমোট স্টাফের ৫ দশমিক ৫ শতাংশ অর্থাৎ ৬৭ হাজারের বেশি স্টাফ ইইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নাগরিক।
ইউনিসন এবং ডক্টর্স এসোসিয়েশন সতর্ক করে বলেছে, ভিসার মেয়ার শেষ হওয়ার ফলে এসব বিদেশী স্টাফরা কেউ কেউ স্বদেশে ফেরত চলে যাচ্ছেন বা কেউ কেউ চলে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বিদেশী স্টাফরা এভাবে ব্রিটেন ত্যাগ করতে থাকলে দ্বিতীয় দফা করোনা মোকাবিলায় হাসপাতালগুলোতে মারাত্মক সংকট দেখা দেবে।
প্রায় ১ হাজার ৬শ ৬০ জন ডাক্তার স্বাক্ষরিত একটি যৌথ চিঠিতে, অভিবাসী হেলথ কেয়ার ওয়ার্কারদের আইএলআর বা ইন্ডেফিনিট লিভ টু রিমেইন দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়া চিঠিতে বিদেশী বা অভিবাসী এনএইচএস স্টাফদের ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্নে বিলম্বের কারণে হতাশা প্রকাশ করেছেন ডাক্তাররা। এর উদাহরণ হিসেবে, মিশরের এক কার্ডিওলজিস্ট কনসালটেন্টের কথা উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে। কার্ডিওলজিস্ট ডক্টর বাসেম এনানি করোনায় আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে মারাত্মকভাবে অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন। কিন্তু অসুস্থ্য হবার আগে তিনি ইয়র্ক হাসপাতালে অসংখ্য করোনা রোগির চিকিৎসা করেছেন। মিশরের নাগরিক ডক্টর বাসেম এবং তার পরিবার ব্রিটেনে থাকার বিষয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। কারণে আগামী মাসে তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু হোম অফিস থেকে তাদেরকে এখনো কিছুই জানানো হয়নি।
যদিও করোনা মহামারী শুরু হবার পর হোম অফিসের পক্ষ থেকে এক ঘোষণায় বলা হয়েছিল, যেসব এনএইচএস এবং কেয়ার ওয়ার্কারদের ভিসার মেয়াদ আগামী কয়েক মাসের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে, কোনো ফি বা চার্জ ছাড়াই তাদের ভিসার মেয়াদ আরো এক বছর বাড়িয়ে দেওয়া হবে। সুতরাং তারা করোনা মোকাবেলায় মনোযোগ দিতে পারবেন। কিন্তু এই ক্যাটাগরিতে প্রায় ৩ হাজার ওয়ার্কার পড়েছিলেন। কিন্তু এর বাইরে কেয়ার এসিসটেন্স, হাসপাতালের ক্লিনার, পর্টারসহ আরো কয়েক হাজার কেয়ার এবং এনএইচএস স্টাফ রয়েছেন।
ভিসা জটিলতায় ব্রিটেন ত্যাগের প্রহর গুণছেন অভিবাসী এনএইচএস স্টাফরা
Advertisement