ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: ভারতের পশ্চিমের রাজ্য মহারাষ্ট্রে পতন হল ক্ষমতাসীন দল বিজেপির। রাজ্যটি এখন মোদি-শাহ দলের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। দেশের সবচেয়ে ধনী ও সমৃদ্ধ রাজ্যে সরকার গঠনে অপারগতা প্রকাশ করেছেন নেতারা।
ফলে সরকার গঠন নিয়ে প্রায় এক সপ্তাহের টানটান নাটকের আপাতত ইতি। কংগ্রেসের সমর্থনে জোট সরকার গঠন করতে চলেছে শিবসেনা-এনসিপি।
সোমবার কংগ্রেস দলীয় সূত্র জানায়, মহারাষ্ট্রে শিবসেনা-এনসিপি জোট সরকার গঠন করবে, তাতে বাইরে থেকে সমর্থন দেবে কংগ্রেস। খবর এনডিটিভির।
গত মাসে মহারাষ্ট্রের অনুষ্ঠিত বিধানসভা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় বিজেপি। কিন্তু ম্যাজিক ফিগারে না পৌঁছানোয় দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক মিত্র শিবসেনার সহায়তা নিয়ে সহজেই ক্ষমতা দখলের আশা করছিল দলটি।
কিন্তু ক্ষমতার ভাগাভাগি নিয়ে বিজেপি ও শিবসেনার মধ্যে লড়াই শুরু হয়। প্রায় দুই সপ্তাহের এই লড়াই শেষ পর্যন্ত তিক্ততায় রূপ নিয়েছে। বেঁকে বসেছে শিবসেনার নেতারা। লোকসভা নির্বাচনে বড় ম্যানডেট নিয়ে ক্ষমতায় এলেও শিবসেনার এই পিছুটান বিজেপির জন্য বড় আঘাত হিসেবে হাজির হয়েছে।
রোববারই বিজেপির রাজ্য সভাপতি চন্দ্রকান্ত পাতিল জানান, মহারাষ্ট্রে সরকার গঠন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার দল। কেন্দ্রীয় শাসনে শিবসেনা এখনও বিজেপির মিত্র হলেও রাজ্যে তাদের ছাড়াই সরকার গঠন করতে যাচ্ছে দলটি।
সোমবার সমর্থন চেয়ে কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধীকে ফোন করেন শিবসেনার উদ্ধব ঠাকরে। বিকেলে দলের মহারাষ্ট্রের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন সোনিয়া। তাদের মতামত জানার পরেই এনসিপি প্রধান শারদ পাওয়ারকে ফোন করে সিদ্ধান্তের কথা জানান কংগ্রেস সভানেত্রী। এদিকে কংগ্রেসের সবুজ সংকেত পেয়েই রাজভবনে পৌঁছে গেলেন শিবসেনার প্রতিনিধিরা।
সেনার পরিষদীয় দলনেতার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল রাজ্যপালের কাছে গিয়ে সরকার গঠনের দাবি করে আসে। শুক্রবার পদত্যাগ করেন মহারাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ।
শনিবার মহারাষ্ট্র বিধানসভার মেয়াদ শেষ হতেই, বিজেপিকে সরকার গঠনের আহ্বান জানান রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারি। রাজ্যপালকে তারা জানিয়ে দেন, সরকার গঠনের দাবি জানাবে না, এর পরেই বিজেপি জানায়, ‘যদি শিবসেনা মানুষের রায়কে অপমান করতে চায়, এবং এনসিপি ও কংগ্রেসের সঙ্গে সরকার গড়তে চায়, তাদের জন্য শুভ কামনা রইল।’
প্রায় ৩০ বছরের জোটসঙ্গী বিজেপি ও শিবসেনার, মহারাষ্ট্র বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় শিবসেনা-বিজেপি জোট। ১০৫ আসনে জয়লাভ করে বিজেপি, এবং শিবসেনা জেতে ৫৬টি আসনে।
সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে সেই রাজ্যে প্রয়োজন ১৪৫টি আসন। মন্ত্রিসভায় সমানভাবে বণ্টন বা ৫০:৫০ চুক্তি অর্থাৎ আড়াই বছরের জন্য তাদের মুখ্যমন্ত্রী দেয়ার লিখিত প্রতিশ্রুতি দাবি করে শিবসেনা।