মুঠোফোনের বৈধতা যাচাই কার্যক্রম শুরু ১ জুলাই

মুঠোফোনের বৈধতা যাচাইয়ের কার্যক্রম ১ জুলাই থেকে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এক্ষেত্রে নতুন মুঠোফোন কেনার আগে তা ক্ষুদ্র বার্তার মাধ্যমে আইএমইআই নম্বর যাচাই করে নিতে হবে। তবে এ প্রক্রিয়ায় বন্ধ হচ্ছে না চলমান মুঠোফোনগুলো। বরং স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত হয়ে যাবে ৩০ জুনের মধ্যে।বিটিআরসি সূত্রে জানানো হয়েছে, ব্যবহৃত নতুন মোবাইল ফোনের বৈধতা যাচাই করতে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্ট্রার (এনইআইআর) নামের এই কার্যক্রম চালু করেছে। তা পরিচালনার জন্য ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে দরপত্র আহ্বান বিটিআরসি। আর দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ করে এই কার্যক্রমে প্রযুক্তিগত সহযোগিতার জন্য সিনেসিস আইটি নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একই বছর নভেম্বরে চুক্তি করে বিটিআরসি।বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদুল আলম গণমাধ্যমকে জানান, চলতি বছরের ১ জুলাই পরীক্ষামূলকভাবে এনইআইআর’র কার্যক্রম উদ্বোধন করা হবে। এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিন মাস পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবস্থাটি চালানো হবে। এর মাধ্যমে চালু হলে অবৈধ সেট শনাক্ত করা যাবে।তিনি আরও জানান, গ্রাহকের অনুমতি ছাড়া অন্য কেউ সেটা ব্যবহার করতে পারবেন না। চুরি করা ডিভাইস ব্যবহার করা যাবে না। সব মিলিয়ে সরকারের রাজস্ব ও নিরাপত্তা বাড়বে।বাজার–সংশ্লিষ্টদের দাবি, দেশে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ স্মার্টফোন অবৈধভাবে আমদানি করা হয়। যে কারণে এক হাজার থেকে ১২০০ কোটি টাকার রাজস্ব হারায় সরকার।

পরীক্ষামূলকভাবে এনইআইআরের কার্যক্রম শুরু হলে গ্রাহকের জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ও সিম নম্বরের সঙ্গে ব্যবহৃত মুঠোফোনের আইএমইআই সম্পৃক্ত করে নিবন্ধন করা হবে। কার্যক্রম শুরুর পর নতুন যেসব মুঠোফোন নেটওয়ার্কে সংযুক্ত হবে, তা প্রাথমিকভাবে নেটওয়ার্কে সচল করে এনইআইআরের মাধ্যমে বৈধতা যাচাই করা হবে। বৈধ হলে মুঠোফোনটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত হয়ে নেটওয়ার্কে সচল থাকবে।বিটিআরসি বলছে, যেসব মোবাইল ফোন বৈধ নয়, সেগুলো সম্পর্কে গ্রাহককে খুদে বার্তা বা এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হবে। এরপর পরীক্ষাকালীন তিন মাসের জন্য নেটওয়ার্কে সংযুক্ত রাখা হবে। পরে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এদিকে মোবাইল ফোন কেনার ক্ষেত্রে তা যাচাই করে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বিটিআরসি। এজন্য ১ জুলাই থেকে যে কোনও মাধ্যম (বিক্রয়কেন্দ্র, অনলাইন বিক্রয়কেন্দ্র, ই-কমার্স সাইট ইত্যাদি) থেকে মোবাইল ফোন কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই মোবাইল ফোনের বৈধতা যাচাই ও রসিদ সংরক্ষণ করতে হবে।বৈধ কি-না, তা যাচাই করতে KYD<space>১৫ ডিজিটের IMEI লিখে ১৬০০২ নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি খুদে বার্তায় মোবাইল ফোনটি বৈধ কিনা তা জানানো হবে।

বিটিআরসি জানিয়েছে, বিদেশ থেকে ব্যক্তিপর্যায়ে বৈধভাবে কেনা বা উপহার পাওয়া মোবাইল ফোন স্বয়ংক্রিয়ভাবে নেটওয়ার্কে সচল হবে। এরপর ১০ দিনের মধ্যে অনলাইনে তথ্য বা দলিল জমা দিয়ে নিবন্ধন করার জন্য ব্যবহারকারীকে খুদে বার্তা পাঠানো হবে। নিবন্ধন সম্পন্ন করলে মোবাইল ফোনটি বৈধ হিসেবে বিবেচিত হবে। নিবন্ধন না করলে মোবাইল ফোন বৈধ হিসেবে বিবেচিত হবে না এবং সেগুলো সম্পর্কে গ্রাহককে খুদে বার্তার মাধ্যমে জানিয়ে পরীক্ষাকালীন নেটওয়ার্কে সংযুক্ত রাখা হবে। এরপর সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এই কার্যক্রমে নিবন্ধনের করতে গ্রাহককে neir.btrc.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট নিবন্ধন করতে হবে। এরপর Special Registration অপশনে গিয়ে মোবাইল ফোনের আইএমইআই নম্বর দিতে হবে। প্রয়োজনীয় নথির ছবি বা স্ক্যান করা অনুলিপি (যেমন পাসপোর্টের ভিসা বা ইমিগ্রেশনের তথ্যাদি, ক্রয় রসিদ ইত্যাদি) আপলোড করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করতে হবে।মোবাইল ফোনটি বৈধ হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত হবে। বৈধ না হলে খুদে বার্তার মাধ্যমে গ্রাহককে জানিয়ে পরীক্ষাকালীন নেটওয়ার্কে সংযুক্ত রাখা হবে। পরীক্ষামূলক সময় শেষ হলে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Advertisement