বিশ্বজুড়ে চলমান করোনা মহামারি প্রকোপের মধ্যেও দেশে রেমিট্যান্স পাঠানো অব্যাহত রেখেছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। সদ্য সমাপ্ত মে মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ২১৭ কোটি ১১ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ১৮ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে)। যা আগের বছরের একই মাসের চেয়ে ৪৪ শতাংশেরও বেশি। গত বছর মে মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৫০ কোটি ৪৬ লাখ ডলার।
আজ মঙ্গলবার (০১ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের (জুলাই- মে) ১১ মাসে রেমিট্যান্স এসেছে দুই হাজার ২৮৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ বা ৭৭৮ কোটি ডলার বেশি। গত অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ৬৩৭ কোটি ২০ লাখ ডলার।প্রবাসীদের পাঠানো এই রেমিট্যান্স বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে। ১ জুন বিকাল নাগাদ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, প্রবাসীরা গত এপ্রিল মাসে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ২০৬ কোটি ৭০ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার। যা আগের বছরের এপ্রিলের তুলনায় প্রায় ৯৭ কোটি ডলার বেশি।
গত বছর (২০২০ সাল) এপ্রিল মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১০৯ কোটি ২৯ লাখ ৬০ হাজার। গত মাসে ঈদ থাকায় প্রবাসীরা বেশি বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন।এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর কাজী সাইদুর রহমান বলেন, গত মাসে পবিত্র রমজানের ঈদ ছিল। ঈদকে কেন্দ্র করে প্রবাসীরা ব্যাংকিং ব্যবস্থায় রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন।এর আগে, করোনা ভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে গত বছরের জুলাই মাসে মাইলফলক রেমিট্যান্স পায় বাংলাদেশ। ওই মাসে প্রবাসীরা প্রায় ২৬০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে একক মাসে এতো রেমিট্যান্স আসেনি।কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে এক হাজার ৮২০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলের প্রবাসীরা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে এক হাজার ৬৪২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসে।২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে দুই শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। অর্থাৎ কোনো প্রবাসী ১০০ টাকা দেশে পাঠালে তার সঙ্গে আরও ২ টাকা যোগ করে মোট ১০২ টাকা পাচ্ছেন সুবিধাভোগী। এছাড়া ঈদ-উৎসবে বিভিন্ন ব্যাংক ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সরকারের প্রণোদনার সঙ্গে বাড়তি এক শতাংশ দেওয়ার অফার দিচ্ছে। এতে করে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহী হচ্ছেন প্রবাসীরা।