চলছে আর্জেন্টিনার খেলা। কয়েক মাইল পাড়ি দিয়ে অন্য গ্রামে খেলা দেখতে গেছেন কিংবা রেডিওতে খেলা শুনছেন এমন দৃশ্যের কথা হরহামেশাই শুনি প্রবীনদের কাছে। আর্জেন্টিনা ফুটবলের এক উজ্জ্বল নাম।
কিন্তু আদোতে কী তা ছিলো? না ছিলো না। এই ম্যারাডোনাই আর্জেন্টিনাকে চিনিয়েছে বিশ্বের কাছে। ১৯৭৮, ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ জয় করেছে নীল সাদা শিবির। আবার পরের বিশ্বকাপেই ১৯৯০ সালে হার দেখে ফাইনালে। আর এই সময়টাতে দেশে টেলিভিশন গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে যায়। এলাকার ধনী শ্রেণির লোকেদের বাড়িতে আসতে শুরু করে বোকা-বাক্স। আর ফুটবলের জোয়ারতো আগে থেকেই ছিলো। এই সময়টাতে ম্যারাডোনার যাদু বাংলাদেশকে এনে দেয় এক জোয়ার। এক কথায় ফুটবলকে ভালোবাসতে শিখিয়েছেন এই খেলোয়াড়।
‘ওয়ান ম্যান শো’, কথাটার সঙ্গে আমরা সকলেই পরিচিত। এই কথাটার বাস্তব উদাহরণ হয়ে থাকবেন এই ফুটবলের বরপুত্র। তার বিদায়ে কাদছে বিশ্ব। কাদছে বাংলাদেশ। বেশ কয়েকবার ম্যারাডোনার বাংলাদেশে পা রাখবার কথা ছিলো। তা আর হয়ে ওঠেনি।
আর্জেন্টাইন আরেক তারকা মেসি। মেসি ফুটবল বিশ্বের আরেক উজ্জ্বল নাম। যার ভক্তের আভাও ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বিশ্বে। বাদ যায়নি বাংলাদেশেও। কিন্তু মেসি পারেননি বিশ্বসেরার কাপটায় চুমু দিতে। যা পেরেছেন ম্যারাডোনা। বলা হয়- একাই বাগিয়ে নিয়েছেন দুুবার কাপটা। বিশ্বকাপ এলেই সিংহভাগ সমর্থক ভাগ হয়ে যায় ব্রাজিল-আর্জেন্টিনাতে। ব্রাজিল ঘরে কাপ তুলেছে পাঁচবার। আর আর্জেন্টিনা মাত্র দুবার। তার পরেও এই এক কারণেই তাদের এতো ভক্ত সমর্থক। কারণ ওই টেলিভিশন যখন এলো দেশে তখনই দেখার সুযোগ হলো ‘ওয়ান ম্যান শো’র।
ম্যারাডোনাকে নিয়ে বিতর্কও কম ছিলো না। হাত দিয়ে গোল দেয়া, মাফিয়াদের সঙ্গে সখ্যতা, নারী বিতর্ক, মাদক ইত্যাদি। কিন্তু দিনশেষে তাকে বিশ্ব মনে রেখেছে একজন ফুটবলার হিসেবে। বিশ্বের আজ শোকের মাতম। মাতমটা এক নক্ষত্রের বিদায়ে।