পুলিশি জবাবদিহিতা, নীতিগত সংস্কার এবং ঐতিহাসিক পরিবর্তনগুলোর চাপে পড়ে চাকরি ছাড়ার হিড়িক পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ বিভাগে।শুধু তাই নয়, আকর্ষণ অনুভব না-করার কারণে নতুন নিয়োগের ক্ষেত্রেও তেমন সাড়া পাচ্ছে না মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ।জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের বিচারে সাবেক শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক শভিনকে ২২ বছর কারাদণ্ড দেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ বিভাগে চাকরির অনীহা আরও বেড়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়ার্ল্ড নিউজ এ খবর জানিয়েছে শুক্রবার।গত বছর শ্বেতাঙ্গ পুলিশের নির্যাতনে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর যুক্তরাষ্ট্র পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পুলিশের প্রতি জনরোষ বেড়ে গেছে সেখানে। মূলত পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে দেশটির জনগণ।ওই হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সমাজকর্মী, সাংবাদিক থেকে মানবাধিকারকর্মী-সবাই পুলিশের প্রতি বিরূপ মনোভাব পোষণ করতে শুরু করেছে।শুধ– তাই নয়, দেশটির সরকারি বাজেটে সংস্থাটির জন্য বরাদ্দ কমানোর দাবিও উঠেছে। স্থানীয়রা মনে করছেন, এমন জনরোষ থেকে বাঁচতে পুলিশ বাহিনী ছাড়ার হিড়িক পড়েছে দেশটিতে।অনেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছেন। কেউবা আগাম অবসরে যাচ্ছেন। জনগণের পুলিশ বিদ্বেষের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে সংস্থাটিতে নিয়োগের জন্য আবেদনকারীই পাওয়া যাচ্ছে না।সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত এক বছরে নর্থ ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাশভাইল শহরের ২৩৮ পুলিশ কর্মকর্তার মধ্যে ৮০ জনই চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় পুলিশ প্রধান ডেভিড জ্যাক, ‘আমরা খারাপ হয়ে গেছি’ উল্লেখ করে বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধেই বিক্ষোভ হচ্ছে। এ কারণে পুলিশ কর্মকর্তারা চাকরি ছেড়ে দিচ্ছেন। কিন্তু আমরা তো এমন অবস্থার জন্য এই বাহিনীতে যোগ দেইনি।’চলতি মাসেই ১৯৪টি পুলিশি সংস্থার ওপর জরিপ চালিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ এক্সিকিউটিভ রিসার্চ ফোরাম।গত এপ্রিলে শেষ হওয়া ওই জরিপে দেখা গেছে, বছরে দেশটিতে অবসর নেওয়ার হার আগের বছরের তুলনায় ৪৫ শতাংশ এবং পদত্যাগের হার প্রায় ২০ শতাংশ বেড়ে গেছে। পুলিশে নতুন নিয়োগ হ্রাস পেয়েছে ৫ শতাংশ।অন্যদিকে দেশটিতে মহামারির তীব্রতা এবং গুলি-হত্যা আইনি ব্যবস্থাকে নাজুক করে তুলেছে। ওয়াশিংটন বলেছে বন্দুকধারীদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও বন্দুকধারী সন্ত্রাসীদের ধরতে একের পর এক নির্দেশনা জারি করছেন। অপরাধপ্রবণ ওইসব এলাকার পুলিশ বিভাগের জন্য বাড়াচ্ছেন বরাদ্দও।এ অবস্থায় পুলিশ বিভাগকে আরও আকর্ষণীয় করে ঢেলে সাজানোর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে প্রেসিডেন্টকে। কারণ, পুলিশদের গণঅবসর আর পদত্যাগের পাশাপাশি বন্দুক সন্ত্রাসীরা আরও বেশি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।