রাজধানীতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের অবরোধ

ব্রিট বাংলা ডেস্ক : রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় সড়ক অবরোধ করেছেন মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক পুলিশ অবস্থান নিয়েছে ওই এলাকায়।

শুক্রবার সন্ধ্যায় মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের অবরোধে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কসহ যাত্রাবাড়ীর আশপাশের এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।এতে দুর্ভোগে পড়েন জনসাধারণ।

যাত্রাবাড়ী থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম কাজল বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরে আসার প্রতিবাদে সন্ধ্যায় যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালী মাদ্রাসার সামনে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করেন। এতে আশপাশের এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অবরোধ করার আধা ঘণ্টা পরেই তাদেরকে সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। আমরা সতর্ক রয়েছি।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে শুক্রবার জুমার নামাজের মোনাজাত শেষে মুসল্লিদের একাংশ বিক্ষোভের আয়োজন করেন। এই বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম এলাকায় মুসল্লি, ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী ও পুলিশের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।

জানা গেছে, মুসল্লিরা মোদিবিরোধী স্লোগান দেওয়ার কিছুক্ষণ পরই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মসজিদের উত্তর পাশের ফটকে মিছিলকারীদের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালান। এতে বিক্ষোভকারীরা পিছু হটে মসজিদের ভেতরে ঢুকে পড়ে। কিছু সময় পর বিক্ষোভকারীরা ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের ওপর পাল্টা হামলা চালায়।

এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলতে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ নিতে পুলিশ মসজিদের দিকে টিয়ার গ্যাস ও পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে।

এর আগে জুমার নামাজ শুরু হওয়ার আগ থেকেই মসজিদে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেন। কিছু কিছু নেতাকর্মী মসজিদের চারপাশে সড়কে দাঁড়িয়ে ছিলেন। পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি র‌্যাব সদস্যরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য,

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে নরেন্দ্র মোদি শুক্রবার সকালে দুদিনের সফরে ঢাকায় আসেন।

সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে মোদি জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে যান।

সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যৌথভাবে তিনি বঙ্গবন্ধু-বাপু ডিজিটাল প্রদর্শনী পরিদর্শন করার কথা রয়েছে।

সফরের দ্বিতীয় দিন, ২৭ মার্চ সকালে মোদি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ পরিদর্শন করে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

তাছাড়া, তিনি সাতক্ষীরা ও গোপালগঞ্জে দুটি মন্দির পরিদর্শন করে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত পরিসরে মতবিনিময় করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

শনিবার বিকালে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে একান্ত বৈঠক ছাড়াও প্রতিনিধি পর্যায়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় আলোচিত হবে। বৈঠকের প্রান্তিকে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে কিছু সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর এবং কয়েকটি প্রকল্প উদ্বোধনের সম্ভাবনা রয়েছে।

সমঝোতা স্মারক এবং প্রকল্প উদ্বোধনের বিষয়টি চূড়ান্তকরণের জন্য দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। উভয় প্রধানমন্ত্রী একই সঙ্গে নিজ নিজ দেশের পক্ষে বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে পৃথক দুটি স্মারক ডাকটিকিট উন্মোচন করবেন।

এছাড়া ভারতের প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তার কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। সফর শেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২৭ মার্চ রাতে দিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন।

Advertisement