:কাজী জাবের:
ভু-রাজনীতির কতটুকু জানি আর কতটুকু রাজনৈতিক জ্ঞান আমাদের সাধারণ মানুষের রয়েছে। তবে হ্যাঁ, আমরা অধিকাংশ বাঙালীরা কোন না কোন রাজনৈতিক দলকে মানসিকভাবে সমর্থন করি। যদিও আমার সন্দেহ রয়েছে কিছু মানুষেরই আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক দলের ‘মতাদর্শ’ কি তাও সঠিকভাবে জানা নেই।
গ্রীক দার্শনিকদের মতে, রাজনীতি হলো একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষ তৈরির করার প্রক্রিয়া।
রাস্ট্র পরিচালনার নিয়ম-কানুন, নীতি-পদ্ধতিকে সাধারণভাবে রাজনীতি বলা হয়। গ্রীক দার্শনিক এরিস্টটলের মতে, জনজীবনের বিষয়বস্তু ও গতিপথ সংক্রান্ত যৌথ সিদ্ধান্ত গ্রহনে সর্বসাধারণের অংশগ্রহণই মূলত ‘রাজনীতি’ আর রাজনীতির সারবস্তু হলো ‘জনসেবা’। আমাদের দেশের রাজনৈতিক ব্যাক্তিবর্গের রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনা, মতাদর্শ নিয়ে আলোচনা করার মতো জ্ঞান-গরীমা, প্রজ্ঞা বা অভিজ্ঞতা আমার নেই। আর আমি যেহেতু বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের একজন সাধারণ কর্মী সেহেতু আমি বাংলাদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসাবেই তাঁর প্রতিনিধিত্ব করি। আর তাই সাধারণ মানুষের দৃষ্টিকোণ থেকে আমার মনে হয় আমাদের রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনার কিছুটা হয়তো তুলে ধরতে পারবো।
আজ সমগ্র পৃথিবী করোনা ভাইরাস (কোভিড ১৯) আতঙ্কে দিশেহারা। বিশ্বনেতা, বিজ্ঞানী ও গবেষকরা আজ ঐকবদ্ধ হয়ে এই মহামারীর প্রাদুর্ভাব থেকে মুক্তির উপায় খোঁজে বেড়াচ্ছে। আর সেখানে আমরা প্রতিনিয়ত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মতো কাজ করে যাচ্ছি . রাজনৈতিক নেতা কর্মী সহ উদাহরণ সৃষ্টি করে যাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ ও ।
তবে বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম হিসাবে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। যখন যার মনে হচ্ছে, যা ইচ্ছা তাই শেয়ার করছে। সব কিছুতেই ‘কাউন্টার’ দেয়ার প্রবণতা একটা ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে।
বিশেষ করে যারা সুশীল বা ভিন্ন মতাদর্শী তারা রাজনৈতিক বা নিজ দৃষ্টিভঙ্গিতে সবকিছুর বিচার-বিবেচনা করার একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। স্বাভাবিক একটা বিষয়কে বিকৃত ও অস্বাভাবিকতার মোড়ক পড়ানো হয়। সেই সাথে গুজব তৈরি ও ছড়ানো হয়। সত্য গোপন করা ও ধামাচাপা দেওয়ার ফন্দি-ফিকির হয়। আর আমাদের দলের ভিতরের এবং বাইরের কিছু মানুষই এইসব রাজনৈতিক প্রপাগন্ডার সক্রিয় অংশীদার হয়ে নিজ নিজ ক্ষেত্র হতে তার ব্যবহার ও ‘ডিফেন্ড’ করছি। আদোও কি আমাদের এইসব কার্যকলাপ ‘রাজনীতি’ বা ‘জনসেবা’ হিসাবে বিবেচ্য? নাকি লোভ, লালসা, প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ?
বিগত কয়েকদিন ধরে ছাত্রলীগ, যুবলীগ সহ বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের অনেকেই সাধারণ মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন তা নিয়ে আমরা যেমন প্রশংসায় মাতিয়েছি, নুংরামী ও কম করিনি ।
আমাদের প্রকৃত রাজনীতিবিদরা যারা জাতির বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংকট উত্তরণের সংগ্রামের পরীক্ষায় পরীক্ষিত তাদের তো ভয় থাকতে পারে না। আজ জাতির এই সংকটময় পরিস্থিতিতে তরুণ প্রজন্মের মতো স্বাধীনতার পক্ষের সকল রাজনীতিকের ঐক্যের একান্ত প্রয়োজন।
আমরা জানি অতীতে অনেক দেশ ও জাতিকে তাদের ক্রান্তিলগ্নে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবেলা করতে দেখা গেছে যা আমাদের বাহান্নর ভাষা আন্দোলন ও একাত্তরের মুক্তি যুদ্ধের কথা মনে করিয়ে দেয়।শুধু নেত্রীর দিকে চেয়ে থাকলেই হবেনা, উনি উনার জায়গা থেকে বাংলাদেশের মানুষের আস্থা অর্জন করতে পেরেছেন, তাই
বর্তমান দুঃসময়ে আমাদের একমাত্র রাজনৈতিক ‘একতা’ বা ‘ঐক্য’ নিয়ে আসতে পারে করোনা মোকাবিলা করার সক্ষমতা।
সব শেষে একটি কথাই বলবো :
সংকটে, বিপদে মানুষই ছুটে এসে সাহায্য করবে এই প্রত্যাশা আমরা করতেই পারি। না হলে মানব-জন্ম অনেকটাই অসম্পূর্ন থেকে যাবে।
কাজী জাবের
রাজনীতিক ও সংগঠক