ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: রাতভর গুলির শব্দ। স্টান গ্রেনেড বিস্ফোরণের শব্দ। ঘরের পাশে বুঁট পায়ে হাঁটার আওয়াজ। কোথাও রাতের অন্ধকারে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। সব মিলে এক ভীতিকর পরিস্থিতি মিয়ানমারে। কিন্তু সেনাবাহিনীর এমন ভীতিকর পরিস্থিতিতে দমে যায়নি গণতন্ত্রের নেশায় বিভোর সাধারণ মানুষ। সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টিতে আজ তাদের সঙ্গে বিক্ষোভে যোগ দিচ্ছে মিয়ানমারের বড় বড় ট্রেড ইউনিয়নগুলো। তবে রাষ্ট্রীয় মিডিয়া থেকে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা হাসপাতালে ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উপস্থিতি ঠিক রাখতে আইন প্রয়োগ করছে।
উল্লেখ্য, এর আগে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন অনেক চিকিৎসক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। তাদেরকে হুমকি দিয়েছে সামরিক জান্তা। কিন্তু তারা তাতে পিছপা হননি। কমপক্ষে ৯টি ট্রেড ইউনিয়ন আজ থেকে বিক্ষোভে যোগ দিচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে অবকাঠামো নির্মাণ শ্রমিক, কৃষিখাত, শিল্পকারখানার শ্রমিক। তারা ১লা ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থান প্রত্যাহার করে বেসামরিক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য মিয়ানমারের সব শ্রেণির মানুষকে কাজ বন্ধ করে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তারা এক বিবৃতিতে বলেছে, ব্যবসা ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ড খোলা রাখলে তাতে সেনাবাহিনী মিয়ানমারের জনগণকে দমিয়ে রাখার শক্তি পাবে। তাই এটাই আমাদের গণতন্ত্রকে রক্ষা করার উত্তম সময়। ওদিকে সামরিক জান্তার নিন্দা জানিয়ে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালনের জন্য আহ্বান জানিয়েছে নারীদের বিভিন্ন গ্রুপ। অভ্যুত্থানের পরে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হয়েছে রোববার। এদিন পুলিশ স্টান গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে ইয়াঙ্গুনের বিক্ষোভে। একই অবস্থা হয়েছে দ্বিতীয় বৃহৎ শহর মান্দালয়ে। সেখানে হাজার হাজার মানুষ অবস্থান ধর্মঘটে অংশ নিয়েছেন। একই অবস্থা হয়েছে উত্তরের শহর লাশিওতে। এ পর্যন্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী গুলি করে কমপক্ষে ৫০ জনকে হত্যা করেছে বলে তথ্য দিয়েছে জাতিসংঘ। বিক্ষোভকারীদের নেতা মুয়াং সাংঘা ফেসবুকে নারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, সোমবার ঘর থেকে বেরিয়ে কড়া প্রতিবাদ জানাতে। নারী আন্দোলনের আয়োজক নাই চি নারীদের বিপ্লবী বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, আমাদের জনগণ নিরস্ত্র। কিন্তু তারা বুদ্ধিমান। তারা ভীতিহীনভাবে দেশ চালাতে চায়। আমরা সেই ভীতির বিরুদ্ধে লড়াই করবো।
ওদিকে রোববার দিবাগত রাতে ইয়াঙ্গুন থেকে কমপক্ষে তিন বিক্ষোভকারীকে তুলে নিয়ে গেছে নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা। রাতভর বিভিন্ন নেতার বাড়িতে চালানো হয় তল্লাশি। পুলিশি হেফাজতে মারা গেছেন অং সান সুচির স্থানীয় একজন প্রচারণা বিষয়ক ম্যানেজার খিন মুয়াং লাট। তার মাথায় ও সারা শরীরে নির্যাতনের দাগ রয়েছে। এতে বোঝা যায়, তাকে নির্মমভাবে প্রহার করা হয়েছে। পাবেদান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। তারা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।