সিলেট অফিস :: সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে ‘নির্যাতনের ফলে’ মারা যাওয়া নগরীর আখালিয়ার যুবক রায়হান আহমদের (৪০) সঙ্গে সেই রাতে ঘটে যাওয়া ভয়ঙ্কর ঘটনার বর্ণনা দিলেন প্রত্যক্ষদর্শী এক সিএনজি অটোরিকশা চালক। ওই চালক ও তাঁর আরেক সঙ্গীর দুটি সিএনজি অটোরিকশাতেই সেই রাতে বন্দরবাজার ফাঁড়ির দুটি পুলিশ টিম টহল দেয়। এর মধ্যে একটি অটোরিকশাতেই রায়হানকে ফাঁড়িতে নিয়ে আসে পুলিশ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেই অটোরিকশা চালক সিলেটভিত্তিক একটি ইউটিউব চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, শনিবার দিবাগত (১২ অক্টোবর) রাতে সিলেট নগরীর কাষ্টঘর এলাকার একটি সুইপার কক্ষ থেকে রায়হানকে বের করে নিয়ে আসে পুলিশ। এর আগে নগরীর মাশরাফিয়া রেস্টুরেন্টের সামনে অজ্ঞাত দুইজন লোক পুলিশকে এসে খবর দেয়, কাষ্টঘরের গলিতে একটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।
সেই অটোরিকশা চালক জানান, পুলিশ গিয়ে একটি সুইপারের কক্ষ থেকে রায়হানকে ডেকে বের করে। তখন সেখানে কোনো ছিনতাই বা রায়হানকে গণধোলাইয়ের ঘটনা ঘটতে দেখেননি অটোরিকশা চালক। ওই গলি থেকে রায়হানকে বের করে দ্বিতীয় (ওই চালকের সঙ্গীর) অটোরিকশাযোগে ফাঁড়িতে নিয়ে আসে পুলিশ। তখন সুস্থ শরীরেই ছিলেন রায়হান। এসময় রায়হান পুলিশের তর্কে লিপ্ত হন এবং বলেন- আমি কোনো ছিনতাইকারী বা অপরাধী নই।
রায়হানকে পুলিশ ফাঁড়ির ভেতরে নিয়ে যাওয়ার পর দুই অটোরিকশা চালক ফাঁড়ির বাইরে অপেক্ষা করতে থাকেন। পরে সকালে রায়হানকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ওই দুই চালকের মধ্যে একজনের অটোরিকশাতে করে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ।
অটোরিকশা চালক আরও জানান, হাসপাতালে নেয়ার পর রায়হানের অবস্থা আরও খারাপ হয় এবং তাকে অক্সিজেন দেয়া হয়। এর আগে ফাঁড়ি থেকে রায়হানকে বের করার সময় তার হাটুর নিচে ও হাতের আঙ্গুলে আঘাতের চিহ্ন দেখেন ওই চালক। এসময় চালক দুই পুলিশ সদস্যকে বলতে শুনেন- ‘এমন নির্মমভাবে কেউ কাউকে মারে? স্যার আদেশ দিয়েছেন বলেই মারতে হলো।’
অটোরিকশা চালক বলেন, সেই রাতে এস.আই আকবর ফাঁড়িতেই ছিলেন এবং তার নির্দেশেই রায়হানকে মারধর করা হয়।
আকবর নিজের হাতেও নির্মমভাবে রায়হানকে নির্যাতন করেছেন বলে ওই অটোরিকশা চালক জানান।