পূর্ব লন্ডনের বাঙালি অধ্যুষিত এলাকায় সফর করলেন ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস ও তার স্ত্রী কুইন কনসোর্ট ক্যামিলা। বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় দুপুরের দিকে তারা পূর্ব লন্ডনে পৌঁছান। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশি কমিউনিটির বিভিন্ন শ্রেণিপেশার হাজারো বাসিন্দা।ব্রিটেনে বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতি বিজড়িত আলতাব আলী পার্ক পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে পূর্ব লন্ডনের বাঙালিপাড়ায় রাজার আনুষ্ঠানিক সফর শুরু হয়। এখানে ষাট ও সত্তর দশকে বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় বাংলাদেশিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন রাজা।তীব্র শীত উপেক্ষা করে রাজা চার্লস ও তার স্ত্রীকে একনজর দেখতে উপস্থিত হয়েছিল বাংলাদেশি কমিউনিটির হাজারো বাসিন্দা। রাজাকে অভ্যর্থনা জানান টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের মেয়র লুৎফুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন ব্রিটেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম, সফরের আয়োজক ব্রিটিশ বাংলাদেশি পাওয়ার অ্যান্ড ইন্সপিরেশন-বিবিপিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা আয়েশা কোরেশী এমবিই, টাওয়ার হ্যামলেটসের কাউন্সিলর আবদাল উল্লাহসহ কমিউনিটির বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃবৃন্দ।
এরপর রাজা চলে আসেন ব্রিকলেনে। ব্রিকলেনের বাংলাটাউন গেটে রাজাকে স্বাগত জানান লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম। এসময় রাস্থার উভয় পাশে ব্রিটিশ পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে রাজাকে স্বাগত জানান বাঙালিসহ অন্যান্য কমিউনিটির লোকজন। ব্রিটিশ বাংলাদেশি নৃত্যশিল্পীরা রাজার সামনে বাঙালি নৃত্য পরিবেশন করেন। রাজা ও কুইন কনসোর্ট ক্যামিলিয়া রাস্তার উভয় পাশে দাঁড়ানো ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের সাথে করমর্দন করেন। ব্রিকলেনে প্রবেশের পর রাজা তৃতীয় চার্লস ও তাঁর স্ত্রীকে ঐতিহ্যবাহী পিঠাপুলি দিয়ে বাংলাদেশি রেস্তোরাঁ ‘গ্রামবাংলা’য় আপ্যায়ন করা হয়। ‘গ্রামবাংলা’ রেস্তোরাঁর শেফ আতিক খান বলেন, ‘রাজাকে আমরা দেশীয় পিঠাপুলি দিয়ে আপ্যায়ন করেছি। আড়াই কেজি ওজনের ইলিশ মাছ রান্না করলেও সময়স্বল্পতার কারণে রাজা খাবারগুলো নিয়ে গেছেন। ’ এ সময় তাঁরা বাংলাদেশি খাবারের ভূয়সী প্রশংসা করেন। কুইন কনসোর্টকে উপহার দেওয়া হয় বাংলাদেশি ঐতিহ্যের স্মারক জামদানি শাড়ি।এরপর রাজা আসেন ব্রিকলেন জামে মসজিদে। মসজিদ ট্রাস্টের সদস্যরা রাজ দম্পতিকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি ব্রিকলেন মসজিদের ইতিহাস তুলে ধরেন। রাজা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ঙালি অধ্যুষিত এলাকায় এটাই তার প্রথম সফর। রাজা হওয়ার আগে প্রিন্স চার্লস ২০০১ সালে ইস্ট লন্ডন মসজিদ পরিদর্শনে এসেছিলেন। তারও আগে ১৯৮৭ সালে ব্রিকলেনে একটি প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শনে এসেছিলেন। কিন্তু, বাংলাদেশি কমিউনিটির ব্রিটেনে চার প্রজন্মের সংগ্রামের ইতিহাসের পথ বেয়ে বিভিন্ন অর্জন, ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের ব্রিটেনের উন্নয়নে বিভিন্ন খাতে অভাবনীয় সাফল্যকে অনুপ্রাণিত করতে গতকালের এই সফর বিশেষ তাৎপর্য বহন করে।রাজার দায়িত্ব পালন শুরুর পর বাঙালিপাড়ায় এটিই চার্লসের প্রথম সফর। এর আগে ২০০১ সালে ইস্ট লন্ডন মসজিদ পরিদর্শন করেছিলেন তৎকালীন প্রিন্স চার্লস। তারও আগে ১৯৮৭ সালে ব্রিকলেনে একটি প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন তিনি।