লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের এজিএমে ইউকের পাঁচ মুক্তিযুদ্ধের সংগঠককে সম্মাননা প্রদান

ব্রিটবাংলা রিপোর্ট : বিপুল সংখ্যক সদস্য এবং অতিথিদের উপস্থিতিতে অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের বার্ষিক সাধারল সভা ও স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। ইস্ট লন্ডনের ইমপ্রেশন হলে মঙ্গলবার বিকেল ৫টা থেকে শুরু হয় অনুষ্ঠান। অভ্যর্থনা শেষে বিকেল ৬টা শেকে সাধারণ সভা শুরু হয়। সাধারণ সভা শেষে ১৯৭১ সালে বাংলাদশেরে মহান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে লন্ডনে জনমত গঠনে বিশেষ অবদানের জন্যে ৫ জন সংগঠককে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়।
২০১৭ সালের ২৯ শে জানুয়ারী নিবাচনের পর মঙ্গলবার বার্ষিক সাধারণ সভায় সদস্যদের মুখোমুখি হয় এক্সিকিউটিভ কমিটি। ক্লাব সভাপতি সৈয়দ নাহাশ পাশার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ জুবায়েরের পরিচালনায় সভায় সাধারণ সম্পাদক ও ট্রেজারের রিপোর্ট পাঠের পর শুরু হয় আলোচনা। নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রায় এক বছরের ভেতরেও ক্লাবের একটি স্থায়ী অফিস উপহার না দেওয়ার ব্যর্থতাসহ লন্ডনের বাইরের সদস্যদের জন্যে কিছু না করার সমালোচনা করেন সদস্যরা।
এর জবাবে অবশ্য ক্লাব সভাপতি সৈয়দ নাহাশ পাশা, সেক্রেটারী মোহাম¥দ জুবায়ের এবং ট্রেজারার আসম মাসুম জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই একটি স্থায়ী অফিসের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে। একই সঙ্গে আগামী এক বছরের ভেতরে লন্ডন এবং লন্ডনের বাইরে ট্রেনিংয়ের আশ্বাসও দেন তারা। তবে স্থায়ী অফিস স্থাপনের ক্ষেত্রে কিছু বাস্তব সমস্যার কথাও তুলে ধরেন তারা। ক্লাবের ইনকাম এবং স্থায়ী অফিসের মাসিক যে ভাড়া আসে তার চাইতে ইস্ট লন্ডন এলাকায় এক রুমের একটি অফিসের ভাড়া পড়ে যায় বেশি। তাই ক্লাবের উপর যাতে কোনো ধরনের অর্থনৈতিক চাপ না আসে সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই তারা একটি অফিসের জন্যে কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান।

এতিকে লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের বর্তমান সদস্য সংখ্যা ৩শ ২২ জন। নিয়মনীতির পরিবর্তন করে ক্লাবের সদস্য প্রদানের ক্ষেত্রেও কিছুটা কঠোর হওয়া কথা বলেন কেউ কেউ। এখানেও ক্লাবের নীতি বা সংবিধান পরিবর্তন পরিমার্জন করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ভাবছে বর্তমান কমিটি।

এদিকে সাধারণ সভা শেষে শুরু হয় স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান। এতে ক্লাবের সাধারণ সদস্যের সঙ্গে ক্লাবের বিপুল সংখ্যক জীবন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। সেক্রেটারী মুহাম্মদ জুবায়েরের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নাহাশ পাশা। জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে সুচনা হয় এই পর্বের।
অনুষ্ঠানে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিলেত তথা বিশ্বব্যাপি জনমত গঠনে বিশেষ ভুমিকা রাখার জন্যে ৫ জন সংগঠককে ক্লাবের পক্ষ থেকে বিশেষ সমম্মাননা জানানো হয়। তারা হলেন প্রবীন কমিউনিটি এক্টিভিস্ট আলহাজ্ব জিল্লুল হক, ইউকে আওয়ামীলীগ সভাপকি সুলতান মাহমুত শরীফ, শামসুল আলম চৌধুরী, ১৯৭১ সালে শাড়ী পরে বৃটিশ পার্লামেন্টের সামনে যে সব বাঙালী মহিলারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনে ক্যাম্পেইন করেছিলেন, তাদের একজন ফেরদৌস রহমান এবং ডক্টর মুস্তাফিজ রহমান। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইউকের বিভিন্ন হাসপাতালে কর্মরত বাঙালী ডাক্তাররা সমবেত হয়ে ক্যাম্পেইন শুরু করেন। তাদেরই একজন নিভৃতচারী ডক্টর মুস্তাফিজ। ক্যাম্পেইনের পাশাপাশি অনেক ডাক্তার দেশে গিয়ে রনাঙ্গনে আহত যোদ্ধাদের সেবা করেছেন। প্রেস ক্লাবের অনুষ্ঠানে এমন অজানা অনেকের নাম পড়ে শুনান ডক্টর মুস্তাফিজ। তাদের হাতে প্রেসক্লাবের ইসি মেম্বার, লাইফ মেম্মাবরসহ কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিরা পদক তুলে দেন।
পদক প্রদানের ফাঁকে ফাঁকে ক্লাবের নির্বাহী সদস্য ও চ্যানেল এসের সিনিয়র নিউজ প্রেজেন্টার রুপি আমিন এবং সদস্য উর্মি মাজহারের যৌথ পরিচালনায় সঙ্গে সঙ্গীত পর্ব।

Advertisement