ব্রিট বাংলা ডেস্ক : লন্ডন থেকে বার্মিংহাম, কেমব্রিজ। দু’দিন আগেও এখানকার পথঘাট, রাস্তাঘাট ছিল জনাকীর্ণ। গায়ে গায়ে ধাক্কা লাগার অবস্থা ছিল। কিন্তু করোনা আতঙ্কে সবই এখন ভূতুড়ে শহরের রূপ নিয়েছে। যারা ঘরের বাইরে আসছেন তারা হতভম্ব হয়ে যাচ্ছেন। এই কি সেই শহর! যেখানে হাজারো মানুষে গমগম করতো। ব্যবসা, বাণিজ্য আর যানবাহনের হুড়োহুড়িতে এক অস্থির সময় অতিক্রম হতো। করোনা আতঙ্কে এমন চিত্র দেখা দিয়েছে বৃটেনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।
এই অবস্থা কয়েক সপ্তাহ চলতে থাকলে বৃটেনে ক্যাফে, হোটেল ও বার থেকে চাকরি হারাতে পারে হাজার হাজার মানুষ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব মানুষকে ছাঁটাই করতে পারেন টিকে থাকার জন্য। এমন সতর্কতা দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বলা হয়েছে, এই ভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী ৫ কোটি মানুষ কাজ হারাতে পারেন। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন ডেইলি মেইল।
এমন অবস্থায় যদি মে মাসের আগেই আইনের পরিবর্তন করা না হয় তাহলে শুধু বৃটেনে ক্যাফে, হোটেল ও বারে কর্মরত হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়বে বলে সতর্ক করছে বাণিজ্য বিষয়ক পরিষদ ইউকে হসপিটালিটি। বৃটেনের মধ্যে লন্ডনের রাস্তাগুলো থাকে সবচেয়ে বেশি কর্মব্যস্ত। মানুষে থাকে ঠাসা। কিন্তু সকালে সেখানকার রাস্তাগুলো দেখা গেছে একেবারে ফাঁকা। অক্সফোর্ড স্ট্রিল যেন মরুভূমির রূপ নিয়েছে। এই সড়ক ধরে হাঁটছিলেন ২০ বছর বয়সী ছাত্রী সোফি। তিনি সড়কের এই অবস্থা দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন। বলেন, তিনি নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছেন না। তার ভাষায়, একেবারে নির্জন। চুপচাপ চারদিক। মনে হচ্ছে পুরো বিশ্ব অচল হয়ে গেছে। খুব উদ্ভট লাগছে। তবে এই অবস্থা ব্যবসার জন্য ভাল নয় বলে মন্তব্য করেছেন ইসাবেলা (১৮) নামের এক যুবতী। বার্মিংহাম, কেমব্রিজ ও ব্রিস্টলে শপিং এলাকাগুলোও খা খা করছে। পর্যটকদের আকর্ষণীয় স্থানগুলোতে শনিবার ছিল হাতে গোনা পর্যটক। যেমন লন্ডন আই’তে হাতে গোনা কয়েকজন পর্যটক ছিলেন। একই অবস্থা বিরাজ করেছে বৃটিশ মিউজিয়ামে। এই জাদুঘর পরিদর্শন করতে গিয়েছিলেন লিয়াম স্মিথ নামের একজন। তিনি বলেছেন, শনিবারটা একেবারে ফাঁকা লাগছে। মনে হচ্ছে সব বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু এই অবস্থায় অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক ক্ষতির বিষয় নিয়ে উদ্বিগ্ন অনেকে। এমনই একজন লাক্সারি স্পা’র মালিক হ্যারি জেমসন (৩৮)। তিনি বলেছেন, মানুষজনকে সতর্ক হতে হবে। ক্ষুদ্র ব্যবসাগুলোকে অব্যাহতভাবে কাজ চালিয়ে যেতে হবে। প্রায় সবাই মনে করছেন বিশ্বটা শেষ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমি সেটা মনে করি না। আমার মনে হচ্ছে, আমরা যে যেটা করছি তা অব্যাহত রাখা উচিত। যদি আমরা অর্থনীতির চাকাটাকে বন্ধ করে রাখি তাহলে তাতে বিপর্যয় সৃষ্টি হবে। এ জন্যই আমি বাইরে বেরিয়েছি।