ব্রিটবাংলা রিপোর্ট : ইউকেতে অর্গান ডোনেশনের ক্ষেত্রে মুসলিম তথা বাঙালী কমিউনিটির মানুষ একেবারেই পিছিয়ে। অনাগ্রহ এবং ধর্মীয় বাঁধাসহ নানান কারণে পিছিয়ে থাকলেও এক্ষেত্রে ব্যতিক্রমি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন কমিউনিটির জনপ্রিয় মূখ ও চ্যানেল এসের সিনিয়র নিউজ প্রেজেন্টার ডক্টর জাকি রেজওয়ানা আনোয়ার। নিজের শরীরের সমস্ত অঙ্গ দানের পাশাপাশি ছেলে-মেয়েকেও উতসাহিত করেছেন অর্গান ডোনেশনে। এদিকে শুধু রয়েল লন্ডন হসপিটালেই প্রায় সাড়ে তিনশ রোগি কিডনী ট্রান্সপ্লান্টেশনের জন্যে ওয়েটিং লিস্টে আছেন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশী রোগির সংখ্যাই বেশি। এর বিপরীতে বাংলাদেশী অর্গান ডোনারের সংখ্যা একেবারেই নগন্য ইউকেতে।
অর্গান ডোনেশন নিয়ে বিভ্রান্তি আছে ব্রিটিশ বাংলাদেশী কমিউনিটিতে। কেউ বলেন, দিতে সমস্যা আছে তবে নিতে সমস্যা নাই। তবে ধর্মে অর্গান ডোনেশনে কোনো বাধা নেই এটা নিশ্চিত হয়েই প্রায় ১০ বছর আগে নিজের শরীরের সমস্ত অঙ্গ দান করেছেন ডক্টর জাকি রেজওয়ানা আনোয়ার। তবে তার আগে বাংলাদেশে মেডিকেলে পড়ার সময়ই চোখ দান করেছিলেন তিনি। বিলেতে এসে চোখসহ সমস্ত অর্গান দান করেন যা থেকে তার মৃত্যুর পর ৯জন রোগি উপকৃত হবে।
মাকে দেখে নিজের একমাত্র এক মেয়েও উতসাহি হয়েছে অর্গান ডোনেশনে। আঠার বছর পূর্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একমাত্র মেয়ে প্রপা রেজোয়ানা আনোয়ারও অর্গান দান করেছেন। তবে তার আগে প্রপা নিজেও পবিত্র কোরআনে অর্গান ডোনেমনের ব্যাপারের বিষয়টি জেনে নিয়েছেন।
এদিকে অর্গান ডোনেশনে পিছিয়ে থাকা ইউকের বাঙালী কমিউনিটির মানুষকে আরো সচেতন করতে চান ডক্টর জাকি। এ জন্যে তিনি কিপ আওয়ার হার্ট বিটিং নামে একটি সংগঠনের মাধ্যমে ক্যাম্পেইন শুরু করেছেন।
ডক্টর জাকি জানিয়েছেন, ক্যান্সার রোগে আক্রান্তরাও চাইলে অর্গান ডোনেট করতে পারবেন। অবশ্যই তাদের অর্গান নেবার আগে ডাক্তার তার পরীক্ষা-নীরিক্ষা করবেন। শরীরের কিছু অর্গান আছে মৃত্যুর ৬ ঘন্টার ভেতরে ট্রান্সপ্লান্ট করতে হয় এ জন্যে প্রত্যেক অর্গান ডোনেটকারীর মৃত্যুর পর দ্রুত ডাক্তার বা এনএইচএসকে জানাতে হয়।
উল্লেখ্য ২০১৫ সালে অর্গান ডোনেশন সবার জন্যে বাধ্যতামুলক করা হয়েছে ওয়েলসে। একই স্কীম ইংল্যান্ডেও হচ্ছে। স্কটল্যান্ডেও একই স্কীম চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। এই স্কীমকে বলা হয় অপট-আউট সিস্টেম। এই স্কীমের অধিনে স্বেচ্ছায় অস্বীকৃতি না জানালে অটোমেটিক সবাই অর্গান ডোনার হয়ে যাবেন।