শিশু শিক্ষার্থীকে পেটানো সেই মাদ্রাসা শিক্ষক গ্রেপ্তার

ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে একটি মাদ্রাসায় ৮ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থীকে নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার বিকাল ৫টার দিকে হাটহাজারী উপজেলার মারকাযুল কোরআন ইসলামিক একাডেমিতে এই ঘটনা ঘটে। যার ভিডিও ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যায় গ্রামের বাড়ি রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটা থেকে হুজুর ইয়াহিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর আগে মঙ্গলবার রাতে ওই শিক্ষককে বহিষ্কার করা হয়।

হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, শিশুটিকে নির্যাতনের অভিযোগে তার বাবা বাদী হয়ে হাটহাজারী থানায় মামলা করেছেন। তারা প্রথমে মামলা করতে রাজি না হলেও পরে বুঝিয়ে রাজি করানো হয়। এই মামলায় মাদ্রাসার শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করবে পুলিশ।

জানা গেছে, হাটহাজারী পৌর এলাকার মারকাজুল কোরান ইসলামী একাডেমি মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের শিক্ষার্থী শিশু ইয়াসিন।

গত সোমবার বিকালে মা পারভিন আক্তার ও বাবা মোহাম্মদ জয়নাল মাদ্রাসায় তাদের সন্তানকে দেখতে যান। কিন্তু ফেরার সময় ছোট্ট শিশুটি মা-বাবার সঙ্গে বাড়ি যাওয়ার বায়না ধরে। এক পর্যায়ে সে মা-বাবার পিছু পিছু মাদ্রাসার মূল ফটকের বাইরে চলে আসে। আর এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন মাদ্রাসার হুজুর ইয়াহিয়া। মা-বাবার সঙ্গে মূল ফটকের বাইরে কেন গিয়েছে শুধু এই কারণে শিশুটিকে বেত দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকেন। আর শিশুটি বাঁচার আকুতি জানাতে থাকে। তারপরেও ক্ষান্ত হননি ইয়াহিয়া। শিশুটিকে বেদম মারপিট করে হুজুর ইয়াহিয়া। তবে প্রথমে ওই শিক্ষার্থীর বাবা-মা অভিযুক্ত ওই মাদ্রাসা শিক্ষককে ক্ষমা করে দিয়েছেন মর্মে একটি লিখিত বক্তব্য দেয়ায় প্রশাসন এ ঘটনায় দোষী শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি।

এ বিষয়ে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিন বলেন, ‘মাদ্রাসা শিক্ষক হাফেজ ইয়াহিয়া তার এক ছাত্রকে বেধড়ক পিটিয়েছেন। ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নজরে আসার পর মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে আমি থানা পুলিশসহ ওই মাদ্রাসায় গিয়ে হাফেজ ইয়াহিয়াকে আটক করি। অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষককে আটক করার পরপরই নির্যাতিত শিশুটির মা-বাবা আমার কাছে এসে কান্নাকাটি শুরু করেন। দুইজন আমার অফিসে এসে ওই শিক্ষককে ছেড়ে দিতে অনুরোধ করেন। তারা ওই শিক্ষককে ক্ষমা করে দিয়েছেন জানিয়ে মামলা করবেন না বলে জানান। পরে শিশুটির অভিভাবকদের মামলা দায়েরের জন্য অনুরোধ করা হয়।’

Advertisement