সামাজিক দুরত্ব মানে সামাজিক বিচ্ছিন্নতা নয়। ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীরা কোন পাপ করেনি!

ডা. কামরুল ইসলাম শিপু

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীরা কোন পাপ করেনি। তাদের পরিবার কোন পাপ করেনি।

এটা একটা মহামারী। এতে আপনি আমি যে কেউ আক্রান্ত হতে পারি। আমরা যদি আক্রান্তদের সাথে এমন ব্যবহার করি যে তারা কোন পাপ করে ফেলেছেন তাহলে তারা মানসিক ভাবে ভেংগে পড়বেন। শারীরিক সুস্থতায় মানিসিক শক্তি অনেক বড় একটা নিয়ামক।

এটা সত্য যে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সাথে দুরত্ব বজায় রাখতে হবে। কিন্তু এর মানে এটা না তাদের সমাজ থেকে বের করে দিতে হবে। আপনি আজ একজনের সাথে এরকম ব্যবহার করবেন, আগামীকাল আপনি আক্রান্ত হলে অন্যজন আপনার সাথে, আপনার পরিবারের সাথে এরকম করবে।

যারা আক্রান্ত হবেন তারা নিজে বাচার জন্য এবং আশেপাশের মানুষকে বাচানোর জন্য কোয়ারেন্টিনে যাবেন। যারা কোয়ারেন্টিনে যাবেন তারা চিড়িয়াখানার জন্তু না যে তাদের দুর থেকে ভয় নিয়ে দেখবেন। তারাও মানুষ। কারো বাবা, মা, ভাই, বোন। তাদের প্রতি সহমর্মী হতে হবে। তারা যাতে এই দুর্যোগে ভেংগে না পরেন সেদিকে সমাজের সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে।

আপনার প্রতিবেশী আক্রান্ত হলে তাদের সচেতন করতে হবে ঘরে থাকার ব্যপারে একই সাথে তারা যাতে ঘরে থাকতে পারেন সে ব্যবস্থাও নিতে হবে। তাদের বাজার করে দিন, ঔষুধ লাগলে এনে দিন তাদের ঘরে না ঢুকেই। তাদের সামাজিকভাবে হেয় করবেন না। সোস্যাল মিডিয়ায় কারো ছবি দিয়ে, ‘এর করোনা হয়েছে’ এরকম কাজ করা থেকে বিরত থাকুন। এরকম কাজ মানুষকে ভেংগে দেয়। এরকম করাটাই বরং পাপ।

যেসব এলাকায় ব্যারিকেড দিয়েছেন, আপনারা সচেতনতা থেকেই সেটা করেছেন। কিন্তু কেউ অসুস্থ হলে সেটা নিজে দায়িত্ব নিয়ে খুলে দিতে হবে যাতে গাড়ি যেতে পারে।

সকল অসুস্থতাই করোনা নয়। অনেক হার্টের রোগী আছেন, ডায়বেটিসের রোগী আছেন। তাদের এখন ঘর থেকে বের হওয়া উচিত না। কিন্তু অসুস্থ হলে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। এসব দায়িত্ব তরুন সমাজের উপরই বেশি।

মনে রাখবেন, সামাজিক দুরত্ব মানে সামাজিক বিচ্ছিন্নতা নয়।

লেখক: লেকচারার, বায়োকেমিস্ট্রি ডিপার্টমেন্ট, নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সিলেট বাংলাদেশ

Advertisement