সিলেট অফিস :: সিলেটে বেড়েই চলছে করোনা সন্দেহভাজন রোগী। একই সাথে বাড়ছে কোভিড-১৯ আক্রান্তদের সংখ্যাও। সিলেট বিভাগের প্রতি জেলা ও উপজেলা থেকে প্রতিদিন আসছে শত শত রোগীর নমুনা। এসব নমুনা পরীক্ষা করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ওসমানী মেডিকেল কলেজে স্থাপিত ল্যাবে কর্মরতদের। সংগৃহিত নমুনার পরিমান বেড়ে যাওয়ায় পরীক্ষার রিপোর্ট দিতেও সময় লাগছে বেশি। সন্দেহভাজন রোগী বেড়ে যাওয়ায় এখন সিলেট থেকে ঢাকায় পাঠাতে হচ্ছে নমুনা। ঢাকার আইইডিসিআর থেকে রিপোর্ট আসতে প্রায় এক সপ্তাহ সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
গত ৭ এপ্রিল থেকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে স্থাপন করা ল্যাবে শুরু হয় করোনাভাইরাস সনাক্ত পরীক্ষা। প্রথম দিকে সন্দেহভাজন রোগী অর্থাৎ নমুনার পরিমাণ কম হওয়ায় ওই ল্যাবেই সিলেট বিভাগের রোগীদের নমুনা পরীক্ষা করে রিপোর্ট দেওয়া হচ্ছিল। আগের দিন সংগৃহিত নমুনার ফলাফল পরদিন পেয়ে যাচ্ছিলেন সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু দিন দিন সন্দেহভাজন রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে নমুনা পরীক্ষাও। এতে নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পেতে দেরি হতে থাকে। নমুনা সংগ্রহের পর ফলাফল জানতে রোগীকে প্রায় তিন দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে। আর পরীক্ষার সময় কোন নমুনা একবার ‘ইরোর’ দেখালে সময় লাগছে আরও একদিন বেশি।
গত কয়েকদিন থেকে হঠাৎ করে সিলেট বিভাগে বেড়ে গেছে সন্দেহভাজন রোগীর সংখ্যা। প্রতিদিন বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে কয়েক শত রোগীর নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হ”েছ ওসমানী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে। পরীক্ষার সক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি নমুনা আসায় বিপাকে পড়েছেন সংশ্লিষ্টরা। নমুনা জটের কারণে যথাসময়ে রিপোর্ট দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত নমুনা পাঠানো হচ্ছে আইইডিসিআরে। তবে সেখান থেকে রিপোর্ট আসতে অন্তত এক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন ল্যাবের দায়িত্বশীলরা। আগামী সপ্তাহে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাব চালু হলে প্রতিদিন আরও শতাধিক নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও ল্যাব প্রধান অধ্যাপক ডা. ময়নুল হক জানান, সিলেটের ল্যাবে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৯৯৬টি নমুনা এসেছে। প্রতিদিন দুই পর্বে নমুনা পরীক্ষা করা হয়। প্রতি পর্বে পরীক্ষা হয় ৯৪টি। নমুনার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় পরীক্ষার ফলাফল জানাতে দুই-তিন দিন সময় লাগছে। কিন্তু হঠাৎ করে নমুনার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ওসমানী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে মারাত্মক চাপ পড়েছে। সময়মতো পরীক্ষার রিপোর্ট দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে গত সোমবার ঢাকা আইইডিসিআরে ৬৩১টি নমুনা পাঠানো হয়েছে। আইইডিসিআরেও নমুনা জট থাকায় সিলেট থেকে পাঠানো নমুনার রিপোর্ট পেতে অন্তত এক সপ্তাহ সময় লাগবে বলে জানান তিনি।
অধ্যাপক ময়নুল আরো জানান, এক সাথে ৯৪টি কিট বসানোর পর নির্দিষ্ট সময়ের পর ৫-১০টির রিপোর্ট ‘ইরোর’ আসে। তখন এই নমুনাগুলো ফের পরীক্ষা করতে হয়। এতে সময় বেশি লাগছে।
সিলেটে আরও ল্যাবের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে ডা. ময়নুল বলেন, ওসমানী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে প্রশিক্ষিত ২০ জন লোক করছেন। কিš‘ তাদের পক্ষে প্রতিদিন ১৮৮টি বেশি নমুনা পরীক্ষা সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবটি দ্রুত চালু করা দরকার। এই ল্যাব চালু হলে প্রতিদিন আরও অন্তত ১০০টি নমুনা পরীক্ষা সম্ভব হবে।