ব্রিট বাংলা ডেস্ক : সময়টা ছিল ১৯৯৪ সাল। এ বছরটা ভারতীয় নাগরিকদের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে।এ সময়টাকে সেসব মানুষদের পক্ষে ভোলা কঠিন যারা সৌন্দর্যের চুলচেরা বিশ্লেষণ করেন।এই সন্ধিক্ষণকে ভুলতে পারবে না ভারতের সেসব মডেল, ফ্যাশান ডিজাইনার, মেকআপ আর্টিস্ট, বিউটি পার্লার আর স্পায়ের নক্ষত্ররা, যারা ভারতীয় মেয়েদের নিজেদের কাজের দৌলতে ‘রূপ কা রানী’ বানিয়ে ফেলতেন। আর ভুলতে পারবে না ১০০ কোটি মানুষের দেশ ভারতবর্ষ। কারণ, এই সালে (১৯৯৪) ভারত পেয়েছে দু-দুজন বিশ্বসুন্দরীকে।
সুস্মিতা সেন আর ঐশ্বরিয়া রাই।দুই ভারতসুন্দরীর মাথায় উঠেছিল বিশ্বসুন্দরীর মুকুট। তারপর সিন্ধু-গঙ্গা-যমুনা দিয়ে অনেক জল বয়ে গেছে। গোটা বিশ্ব আজও এই দুই সুন্দরীকে মাথা ঝুঁকিয়ে স্যালুট জানায়। আজও দুইজন বিশের অন্যতমা সেরা দুই সুন্দরী। কিন্তু তাঁদের নিয়ে মাঝেমধ্যেই এমন কিছু সংবাদ দেশের মিডিয়ায় ভেসে ওঠে যা নিয়ে ছোটখাটো একটা ভূমিকম্প তৈরি হয়ে যায়। ঠিক এখন যেমনটি হলো।
সুস্মিতা আর ঐশ্বরিয়া কারও কাছেই ১৯৯৪ সালের গুরুত্বটা কিছু কম নয়। দুজনই ওই বছর নাম দিয়েছিলেন মিস ইন্ডিয়া প্রতিযোগিতায়। যদিও তার আগে কেউ কাউকে সেভাবে চিনতেন না।
প্রতিযোগিতায় সুস্মিতা প্রথম হয়ে জেতেন ‘মিস ইন্ডিয়া ইউনিভার্স’ খেতাব আর দ্বিতীয় হয়ে ঐশ্বরিয়া জেতেন ‘মিস ইন্ডিয়া ওয়ার্ল্ড’ খেতাব। তারপর সুস্মিতা ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন ‘মিস ইউনিভার্স’ প্রতিযোগিতায় আর ঐশ্বরিয়া ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ প্রতিযোগিতায়।
দুজনই বিশ্ববাসীকে চমকে দিয়ে জিতে নেন বিশ্বসুন্দরীর দুই খেতাব।
সেই শুরু। তারপর থেকে এই দুইজনের কাঁধেই ভর দিয়ে ধীরে ধীরে বদলে যেতে থাকে গোটা দক্ষিণ এশিয়ার ‘গ্ল্যামার ওয়ার্ড’ আর ইন্ডাস্ট্রি। ঘরে ঘরে ঢুকে যায় বিউটি পার্লার, স্পা, পেডিকিওর, ফেসিয়াল। সেই দুই সুন্দরীর মধ্যেকার সম্পর্ক কিন্তু বরাবরই বড্ড শীতল থেকেছে।
সম্প্রতি একটি বেসরকারি সংবাদ সংস্থার তাঁদের প্রকাশিত রিপোর্টে দাবি করেছে যে, তাদের কাছে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে সুস্মিতা বলেছেন, ‘যে বছর আমি ‘মিস ইন্ডিয়া’র টাইটেল জিতি, সেই বছর যখন আমি এই প্রতিযোগিতায় নিজের নাম এন্ট্রি করতে যাই তখন শুনেছিলাম যে ঐশ্বরিয়াও এই কনটেস্টে অংশগ্রহণ করতে চলেছে। আমার সঙ্গে থাকা আরও ২৫ জন ওর নাম শুনেই পিছিয়ে আসে। কারণ সেই সময় ঐশ্বরিয়া মডেলিং ইন্ডাস্ট্রিতে খুব জনপ্রিয় ছিল। ফলে ভয়ে আমিও পিছিয়ে আসি। কিন্তু সেই সময় আমার মা আমায় জিজ্ঞেস করেন তুমি কাকে ভয় পাচ্ছো? যদি ঐশ্বরিয়ার কাছে হেরেও যাও, তাহলে তুমি লড়াই করেই হারবে। আগে প্রতিযোগিতায় নামটা তো দাও। মা ভরসা দেওয়ার পরেই আমি মিস ইন্ডিয়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করি। আর তারপরেই ‘মিস ইন্ডিয়া-১৯৯৪’ টাইটেল জিতি।
তিনি বলেন, সে সময় মা যদি ভরসা না দিতেন তাহলে এই ঘটনাটাই আমার জীবনে ঘটত না।
হয়তো সত্যিই ঘটত না। কিন্তু ঐশ্বরিয়ার নাম শুনে সুস্মিতা ভয় পেয়েছিলেন-এই বিষয়টা নিয়েই এখন ভারতজুড়ে শুরু হয়েছে বড়সড় বিতর্ক।
তবে, দুই সুন্দরীর কেউই এখনও পর্যন্ত এটা নিয়ে মুখ খোলেননি।