মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চির বিরুদ্ধে উসকানির মামলায় রায় আগামী মঙ্গলবার ঘোষণা হতে পারে।রোববার থাইল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম ব্যাংকক পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামরিক সরকারের বিশেষ আদালতে সু চির বিরুদ্ধে আনা বেশ কয়েকটি মামলার মধ্যে উসকানির মামলার রায় দেয়া হতে পারে।মিয়ানমারে গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। গ্রেফতার করা হয় অং সান সু চিসহ তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) শীর্ষ নেতাদের। তখন থেকে ৭৬ বছর বয়সী সু চিকে গৃহবন্দি রাখা হয়েছে।এ ঘটনায় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে নজিরবিহীন বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে মিয়ানমার। বিক্ষোভ দমনে কঠোর হয় সেনাবাহিনী।স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স -এর মতে, সেনাবিরোধী আন্দোলনে দেশটিতে ১২০০ শ’র বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং গ্রেফতার হয়েছেন ১০ হাজারের বেশি।প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সেনাবিরোধী আন্দোলনে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হলে সু চির ৩ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ রকম অনেকগুলো অভিযোগ ও তা প্রমাণের মাধ্যমে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে এই গণতান্ত্রিক নেত্রীকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে।সামরিক সরকারের বিশেষ আদালতে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি সু চির আইনজীবীদের সংবাদমাধ্যমে কথা বলা নিষেধ করা হয়েছে।
সু চিকে নিয়ে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের পরিকল্পনা স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা। রায় বিলম্বিত হতে পারে বলেও শঙ্কা জানিয়েছেন তারা।অভ্যুত্থানের কিছুদিন পর সু চির বিরুদ্ধে প্রথমে অনিবন্ধিত ওয়াকিটকি রাখা এবং ২০২০ সালের নির্বাচনের সময় মহামারিকালীন স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনে সেনাবাহিনী। এরপর ধাপে ধাপে অন্য মামলাগুলো করে জান্তা।প্রায় প্রতিদিনই আদালতে হাজিরা দিতে দিতে সু চি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।সাবেক জান্তা সরকারের আমলে ইয়াঙ্গুনে ঔপনিবেশিক আমলে পারিবারিক সূত্রে প্রাপ্ত বাড়িতে অনেক বছর গৃহবন্দি ছিলেন সু চি। সে সময় বাড়ির সামনে জড়ো হওয়া লাখো জনতার সামনে মাঝে মাঝে বারান্দা দিয়ে দেখা দিতেন তিনি।বর্তমানে অতি সুরক্ষিত রাজধানীতে অজ্ঞাত স্থানে সু চিকে বন্দি করে রেখেছে সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং নেতৃত্বাধীন শাসকগোষ্ঠী। সু চির সঙ্গে আছে হাতে গোনা কয়েকজন কর্মী।এখন বহির্বিশ্বের সঙ্গে সু চির যোগাযোগ নিজের আইনজীবীদের সঙ্গে শুনানিপূর্ব বৈঠকেই সীমিত।সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির অন্য শীর্ষ পদধারী নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা শেষের দিকে। চলতি মাসেই সাবেক এক মুখ্যমন্ত্রীকে ৭৫ বছর আর সু চির এক ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে জান্তা সরকার।