স্কটল্যান্ডের নারীর সাথে চ্যাট করে খোয়ালেন ৫৫ লাখ টাকা

ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: করোনার ভ্যাকসিন তৈরির কাঁচামাল সরবরাহ করার টোপ দিয়ে স্কটিস নাগরিকের প্রেমের ফাঁদে পড়ে প্রতারিত হলেন পাঁশকুড়ার এক ব্যাবসায়ী। খোয়ালেন প্রায় ৫৫ লক্ষ টাকা। প্রতারিত ব্যাক্তির নাম আশিস সাউ।

আশিসের দাবি, গত ৬ এপ্রিল তাঁর সঙ্গে ওই নারীর প্রথম ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। নিজেকে স্কটল্যান্ডের বাসিন্দা পরিচয় দিয়ে ওই নারী আলাপ জমান। নারী নিজেকে আমেরিকার একটি ওষুধ প্রস্তুতকারি সংস্থার প্রোকিওরমেন্ট ম্যানেজার বলে পরিচয় দেন।

গত ২১জুন চ্যাট চলাকালীন ওই নারী আশিসকে জানান, তাঁদের সংস্থা করোনা প্রতিষেধক ভ্যাকসিন ও ওষুধ নিয়ে গবেষণা করছে। ভারত থেকেই নেওয়া হচ্ছে এই ওষুধের কাঁচামাল। সেই কাঁচামাল যাঁরা পাঠাচ্ছেন, তাঁরা মোটা কমিশন পাচ্ছেন। আশিসবাবুকেও সে ওই কাজে যুক্ত হওয়ার পরামর্শ দেয়। প্রথমে তিনি না করে দেন। পরে অবশ্য নারীর প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান। তারপরই ওই নারী আশিসকে সাহায্য করার জন্য উঠেপড়ে লাগেন। ভাবখানা এমন, বিদেশি বন্ধুর উপকারের জন্য জান কবুল করে দিতেও প্রস্তুত! খুব তাড়াতাড়ি কাঁচামাল প্রস্তুতকারি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়।

মহারাষ্ট্রের সেই সংস্থার ঠিকানা, ফোন নম্বর, ইমেইল-সহ যাবতীয় তথ্য দিয়ে দেয়। আশিকে জানিয়ে দেয়, ৬ জুলাই বিদেশ থেকে বিশেষ ফ্লাইট গিয়ে ওই কাঁচামাল নিয়ে যাবে। হাতে সময় কম। তাই আশিস ফোন নম্বর পাওয়া মাত্র দেরি না করে কাঁচামাল কেনার জন্য অর্ডারও দিয়ে দেন।

কিছুদিন পর মহারাষ্ট্রের সেই সংস্থা জানায়, মোট দামের ৪০শতাংশ অগ্রিম দিতে হবে। সেই টাকা পাওয়ার কিছুদিন পর ফের জানানো হয়, আরও টাকা দিতে হবে। তা না হলে কাঁচামাল পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। এইভাবে ধাপে ধাপে ৫৪লক্ষ ৬১হাজার টাকা তাঁর কাছ থেকে নিয়ে নেয়।

দিনের পর দিন অতিক্রান্ত হওয়ার পরেও কাঁচামাল তাঁর জিম্মায় আসেনি। এমনকি তার কমিশনের যে টাকা তার পাওয়ার কথা ছিল সেই সংক্রান্ত আর বি আই-এর নাম করে একটি ভুয়ো মেইল পান তিনি। তখন বুঝতে পারেন, প্রতারকচক্রের পাল্লায় পড়েছেন তিনি। এরপর বার বার সেইসব নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু, ব্যর্থ হন।

তিনি মোট তিনটি অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠান। সেইসব অ্যাকাউন্ট রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ এবং মহারাষ্ট্রের বলে পরে জানা গেছে। আশিস ইতিমধ্যেই পাঁশকুড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। সি আইডিকেও পুরো বিষয়টি জানিয়েছেন তিনি। জেলা পুলিশ সুপার সুনীল কুমার যাদবের বক্তব্য, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত চলছে।

Advertisement