২৭৮ জন বাংলাদেশিকে নিয়ে লেবানন থেকে আসা একটি উড়োজাহাজ উড়ছিল আকাশে। অবতরণের অনুমতি নেই বলে এক ঘণ্টা ধরে আকাশেই থাকে সেটি। শেষমেশ মাটিতে নামার অনুমতি পায়। স্বেচ্ছায় দেশে ফেরার কর্মসূচির আওতায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে করে গতকাল রোববার রাতে দেশে আসেন এই ২৭৮ জন। এরপর তাঁদের আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছে।
অথচ করোনা সংক্রমণরোধে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী লেবাননসহ ইউরোপ ও বিশ্বের আরও ১২টি দেশ থেকে বাংলাদেশে সব ধরনের যাত্রী পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। ৩ এপ্রিল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ইউরোপ ও বিশ্বের অন্য ১২টি দেশ থেকে যাত্রী পরিবহন নিষিদ্ধ করে বেবিচক। সেই ১২ দেশের তালিকায় লেবাননও রয়েছে। ৩ এপ্রিল থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে।হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, লেবাননফেরত ব্যক্তিদের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে নেওয়ার কথা। তবে তাঁদের স্বজনেরা আজ সোমবার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে এসে কোয়ারেন্টিনবিরোধী বিক্ষোভ করেন। এ সময় স্বজনদের সঙ্গে যোগ দেন যাত্রীরাও। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিমানবন্দরে এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। যাত্রীদের স্বজনেরা ১ নম্বর আগমনী টার্মিনালের গেট ধরে টানাটানি করেন। স্বজনেরা কোয়ারেন্টিনবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেন। এদিকে যাত্রীরাও কোয়ারেন্টিনে যাবেন না বলে চিৎকার করতে থাকেন।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেরর পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ এইচ এম তৌহিদ-উল আহসান বলেন, সরকারি নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী বিমানটির দেশে আসার কথা নয়। এটা বিশেষ বিবেচনার ফ্লাইট বলে নামতে দেওয়া হয়েছে। লেবাননের করোনা অবস্থা চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাত্রীদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠাতে হবে। তিনি বলেন, এই কোয়ারেন্টিনের প্রতিবাদে লেবাননফেরত ব্যক্তিদের স্বজনেরা বিমানবন্দরের বাইরে এসে বিক্ষোভ করেছেন, ভাঙচুর করেছেন।বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গতকাল রাতে লেবানন থেকে আসায় ফ্লাইটটিকে প্রথমে অবতরণ করতে দেওয়া হয়নি। কিন্তু দূতাবাসের উদ্যোগে মানবিক বিবেচনায় পরে ফ্লাইটটি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। ফ্লাইটটির বিষয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে এয়ারলাইনস কিংবা দূতাবাস বা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগে থেকে জানানো হয়নি। প্রায় এক ঘণ্টা আকাশে অপেক্ষার পর বিশেষ বিবেচনায় ফ্লাইটটি অবতরণের অনুমতি পায়। সে সময়ে বিমানবন্দরের স্বাস্থ্যকর্মীরা অনুপস্থিত ছিলেন। সকাল সাতটার দিকে যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। পরে তাঁদের কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়।