ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: চীনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হংকংয়ের স্থানীয় পরিষদ নির্বাচনে গণতন্ত্রপন্থী হিসেবে পরিচিত সরকারবিরোধী আন্দোলন সমর্থিত প্রার্থীরা অভূতপূর্ব সাফল্য পেয়েছে।
আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণা করা না হলেও প্রাথমিক ফলে ১৮ পৌরসভার ১৭টিতেই গণতন্ত্রপন্থীদের সাফল্যের খবর পাওয়া গেছে। খবর বিবিসির।
এবারের স্থানীয় পরিষদ নির্বাচনে ৪৫২ আসনের বিপরীতে লড়ছেন এক হাজার ১০৪ জন। এ ছাড়া আরও ২৭ আসন গ্রামীণ এলাকার প্রতিনিধিদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে।
এখন পর্যন্ত ২৭৮ আসনে গণতন্ত্রপন্থী প্রার্থীরা জয়লাভ করেছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে চীনপন্থী প্রার্থীরা জয় পেয়েছে ৪২ আসনে।
হংকংয়ে চলমান গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভের নেতিবাচক প্রভাব নির্বাচনে পড়ার আশঙ্কা করা হলেও বাস্তবে শান্তিপূর্ণভাবেই ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়।
একটি বিতর্কিত প্রত্যর্পণ বিল কেন্দ্র করে বৃহত্তর স্বাধীনতার দাবিতে কয়েক মাস ধরেই হংকংয়ে চলছে সরকারবিরোধী রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভ।
হংকংয়ে কয়েক মাস ধরে চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতি, বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের মুখে এই নির্বাচন সরকারের প্রতি জনগণের সমর্থন যাচাইয়ের পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছিল।
হংকং সরকার ও বেইজিং প্রত্যাশা করেছিল, নির্বাচনে সরকার সমর্থিত প্রার্থীদের বিজয়ী করার মধ্য দিয়ে তথাকথিত ‘নীরব সংখ্যাগরিষ্ঠ’ জনগণ সরকারের প্রতি সমর্থন জানাবে।
কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল উল্টো ঘটনা। নির্বাচনে গণতন্ত্রপন্থী প্রার্থীদের কাছে আসন খুইয়েছেন বেশ কয়েকজন ডাকসাইটে বেইজিংপন্থী নেতা।
নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর এমনই এক বিতর্কিত বেইজিংপন্থী আইনপ্রণেতা বলেন, যা ধারণা করা হয়েছিল, তার সঙ্গে বাস্তবতার ‘আসমান-জমিন ফারাক’।
এমনিতে জেলা কাউন্সিলরদের তেমন রাজনৈতিক ক্ষমতা নেই। বাস রুট বা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি স্থানীয় বিষয় দেখভাল করাই কাউন্সিলরদের মূল কাজ। তাই সাধারণত এই নির্বাচন নিয়ে আগে কখনই এতটা মাতামাতি ছিল না।
কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন। হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভ ও সংকট মোকাবেলায় হংকংয়ের প্রশাসক ক্যারি লামের পদক্ষেপের বিষয়ে প্রথমবারের মতো ব্যালট বাক্সের মাধ্যমে নিজেদের মতামত জানানোর সুযোগটা লুফে নিয়েছেন হংকংবাসী।
এবারের নির্বাচনে ভোট দেয়ার জন্য নাম তালিকাভুক্ত করেছিলেন রেকর্ডসংখ্যক হংকংবাসী। ভোট দেয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেন ৪১ লাখ মানুষ, যা হংকংয়ের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি।
শেষ পর্যন্ত ৪৫২ আসনে ভোট দিয়েছেন প্রায় ৩০ লাখ মানুষ। গত কাউন্সিল নির্বাচনে ভোট দিয়েছিলেন ৪৭ শতাংশ ভোটার, আর এবার ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন ৭১ শতাংশ ভোটার।
নির্বাচন ঘিরে চলতি সপ্তাহে প্রথমবারের মতো গত কয়েক মাসের মধ্যে বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মধ্যে কোনো ধরনের সংঘর্ষ বা সংঘাত হয়নি।
এদিকে ভোটদানের পর হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি লাম বলেন, ‘চরম চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতির মুখে আমি সন্তুষ্টচিত্তে বলছি, নির্বাচনের দিন পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে শান্ত ও শান্তিপূর্ণ ছিল।’