হাউস অব লর্ডসে কারী শিল্প নিয়ে আলোচনা : বিসিএ’র প্রশংসা

কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় ব্যাবসা সহ অন্যান্য বেসরকারী খাতের ভূমিকা শীর্ষক লর্ড ডবস এর ভার্চুয়াল আলোচনায় ব্রিটেনের কারী শিল্পের অবদান এবং করোনা পেনডামিক সময়ে বিশেষ করে বাংলাদেশী কারী ব্যাবসায়ীদের অবদানকে তুলে ধরেছেন বাংলাদেশী বংশদ্ভোদ বারনেস পলা মঞ্জিলা উদ্দিন।

২১মে বৃহস্পতিবার হাউস অফ লডস এর বিতর্কে তিনি বলেন, লর্ড ডবস বৃন্দ অতীতে ব্রিটেনের বেসরকারী খাতে যুগান্তকারী অবদান রেখেছেন। এবং বর্তমান সংকটাপন্ন সময়েও লর্ড ডবসদের অসাধারণ অবদান থাকবে।

বারনেস উদ্দিন ব্রিটিশ কারী শিল্পের অবদান তুলে ধরে বলেন, প্রায় ১১হাজার কারী রেষ্টুরেন্ট ও টেকওয়ে প্রায় ৮০হাজার স্টাফ এর কর্মসংস্থান করে এই শিল্প ব্রিটেনের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। দীর্ঘ দিনের অর্থনৈতিক মন্দার সাথে কোভিড মহামারীতে গোটা ইন্ড্রাষ্টি মারাত্নকভাবে হুমকীর সম্মুখীন।

তিনি বলেন, সম্মানীত লর্ডরা জানেন-সরকার নির্দেশিত লকডাউনের ফলে রেষ্টুরেন্ট ও টেকওয়ে কার্যত বন্ধ অবস্থায় আছে। স্টাফরা কর্মহীন মানবেতর জীবন যাবন করছেন।

এরই মধ্যে প্রায় ৫ হাজার রেষ্টুরেন্ট এর প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোসিয়েশন বিসিএ কারী শিল্পের সংকটগুলোকে কাটিয়ে উঠতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। এবং আরও বলেন, কারী শিল্প সংশ্লিষ্ট বিশেষ করে স্টাফরা কর্মহীন হয়ে চরম অর্থকষ্টে জীবন পার করছেন। অনেক রেষ্টুরেন্ট সর্বস্ব হারিয়ে একেবারে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এই ইন্ডাষ্ট্রির সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত প্রায় একশ হাজার পরিবার বর্তমানে মারাত্নক অর্থনৈতিক সমস্যায় দিন যাপন করছেন।

লকডাউন পরবর্তী পরিস্থিতি এবং অর্থনীতি সম্পর্কে ব্যারনেস উদ্দিন বলেন, আগামীতে অনেক ব্যাবসা মন্দার মুখোমুখি হতে পারে বলে ইতিমধ্যে আশংকা প্রকাশ করা হয়েছে। বর্তমান পয়েন্ট ভিত্তিক ইমিগ্রেশন ব্যবস্থায় এই সংকট মোকাবেলা করা সম্ভব নয় উল্লেখ করে বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘোষিত ব্রেক্সিট পরবর্তি নতুন ইমিগ্রেশন পদ্ধতি দ্রুত কার্যকর করে রেষ্টুরেষ্ট স্টাফ সংকট মোকাবেলায় সরকারের দ্রুত সহায়তা করা জরুরী।

করোনা মহামারী চলাকালীন বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোসিয়েশন ( বিসিএ)র সদস্যরা ব্রিটেনের বিভিন্ন শহরে হাসপাতাল ও কেয়ারার্সদের বিনামূলে খাবার সরবরাহ এবং পরিবারের জন্য ৫০ শতাংশ ডিসকাউন্টে খাবার সরবরাহ করে আসছে।

বিসিএ‘র সদস্যভূক্ত রেষ্টুরেন্ট ব্যাবসায়ীরা লকডাউন সময় এবং বিশেষত পবিত্র রমজান মাসে ব্রিটেনের প্রায় প্রতিটি শহরের হাসপাতালের কর্মকতা-কর্মচারীদের বিনামূলে খাবার সরবরাহ করেছে।

অর্থনৈতিক সংকট সময় ও জীবনের ঝুকি নিয়ে বাংলাদেশ ক্যাটারার্স অ্যাসোসিয়েশনের এই মানবিক কাজের প্রসংসা করে বলেছেন-তারা সত্যি-ই ব্রিটেনের গর্ব।

লর্ড ডবস এর ভার্চুয়াল আলোচনায় পার্লামেন্টারি আন্ডার সেক্রেটারী অফ স্টেইট, ডিপার্টমেন্ট অফ বিজনেস, এনার্জি এন্ড ইন্ড্রাষ্টিয়াল সেক্রেটারী লর্ড কালনাল বলেছেন, আমরা স্বীকার করছি কারী শিল্প ব্যাবসায়ীরা নানাবিদ সমস্যার সম্মুখীন। আমি বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোসিয়েশন তথা মুসলিম সম্প্রদায়কে অভিনন্দন জানাই তাদের আন্তরিক সহায়তামূলক কাজের জন্য।

প্রসঙ্গত কোভিড সঙ্কট শুরু হওয়ার পর সংসদে বেসরকারী খাত নিয়ে এটিই ছিল প্রথম বিতর্ক। যেখানে বাংলাদেশী কারী শিল্পের সংকট এবং জাতীয় দুর্যোগে কমিউনিটির সেবায় পাশে থাকার অবদান কে বিশেষভাবে মূল্যায়ন করা হয়।

এদিকে বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোশিয়েশনের সভাপতি এম এ মুনিম, লর্ড ডবস এর ভার্চুয়াল আলোচনায় ব্যারনেস উদ্দিনের কারী ইন্ড্রাষ্ট্রির বর্তমান বহুমুখী সমস্যা তুলে দরার জন্য বিসিএর পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

Advertisement