হেফাজতের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন নায়েবে আমির

হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমীরের পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ ফরায়েজী আন্দোলনের সভাপতি ও বাহাদুরপুরের পীর মাওলানা আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ হাসান।মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তিনি। এ সময় বাংলাদেশ ফরায়েজী আন্দোলনের অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।হেফাজতে ইসলামের বিতর্কিত যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন অভিযোগসহ নানা কারণ দেখিয়ে সংগঠনটি থেকে পদত্যাগ করেন হাজী শরীয়তুল্লাহর এ উত্তরসূরি।

মাওলানা আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ হাসান বলেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ পূর্বে শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে যে কোনো কর্মসূচি ও কার্যক্রম পরিচালিত করলেও সম্প্রতি কিছু ব্যক্তির নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়নে একটি প্ল্যাটফর্ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়গুলো বিবেচনা করে আমি হেফাজতে ইসলামের ‘নায়েবে আমীর’ পদ থেকে ইস্তফা প্রদান করলাম। আমার ইস্তফা প্রদানে কে বেজার হল, কে খুশি হল এটা আমার দেখার বিষয় নয়। আমি আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বলছি, হেফাজতে ইসলাম থেকে ইস্তফা প্রদান ইসলাম, দেশ ও জাতির অধিকতর কল্যাণের লক্ষ্যে। এখন থেকে আমার সংগঠন বাংলাদেশ ফরায়েজী আন্দোলন স্বাধীন সার্বভৌম রক্ষার্থে ইসলাম ও দেশ জাতির কল্যাণে এককভাবে প্রয়োজনীয় সব কর্মসূচি গুরুত্বসহকারে পালন করে যাবে। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কোনো ধরনের কর্মকাণ্ডের দায় আমি ও আমার দলের ওপর বর্তাবে না।সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, আমি নিজের অনুভূতি ও উপলব্ধি থেকে বলছি, হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা আল্লামা শাহ আহমদ শফীর ইন্তেকালের পর হেফাজতে ইসলামে যোগ্য নেতৃত্বের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। দলাদলি সৃষ্টি হয়েছে নিজেদের মধ্যে। বিভিন্ন দল ও ভিন্ন মতাদর্শের মানুষ অনুপ্রবেশ করেছে এবং তারা তাদের রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে হেফাজতে ইসলামকে অত্যন্ত সুকৌশলে মাঠে নামানোর চেষ্টা করছে। এরই অংশ হিসেবে হেফাজতে ইসলামকে তারা অনেকটা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে সক্ষম হয়েছে। বিতর্কিত বহিরাগত সংগঠনের লোকজনই হেফাজতে ইসলামের নেতাদের অধিকাংশের মতামত উপেক্ষা করে হরতালের মতো কর্মসূচি পালনে বাধ্য করেছে।

বাহাদুরপুরের পীর বলেন, গত কয়েকদিনে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ২০ জন নিহত ও অসংখ্য আহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের সুচিকিৎসার দাবি জানাচ্ছি সরকারের কাছে। করোনা মহামারিসহ সব আজব গজব থেকে মুক্তি পেতে আল্লাহর রহমত কামনায় বিগত দিনের মতো সব কওমি মাদ্রাসা খোলা রাখার দাবি জানাচ্ছি। নিরীহ আলেমদের ওপর প্রশাসনের হামলা মামলাসহ সব ধরনের হয়রানি না করার অনুরোধ জানাচ্ছি।

Advertisement