সরকার পতনের আন্দোলনে তৃণমূলের জনগণকে সম্পৃক্ত করতে ইউনিয়ন পর্যায়ে ১১ ফেব্রুয়ারি পদযাত্রার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। ওই দিন সারা দেশের ইউনিয়ন পর্যায়ে শান্তি সমাবেশ করবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।দলটির নেতারা জানিয়েছেন, ১১ ফেব্রুয়ারি ইউনিয়ন পর্যায়ের কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিত থাকতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রাজধানীতে শান্তি সমাবেশ করবে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে। দুই-একটি সমাবেশে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতা উপস্থিত থাকবেন।এছাড়া বাকি ৭৬টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ৪০টিতে দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নেতাদের নিজ জেলায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রাজ্জাক ও শিক্ষা সম্পাদক শামসুন নাহার টাঙ্গাইলে, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান গোপালগঞ্জে, শাজাহান খান মাদারীপুরে, আবদুর রহমান ফরিদপুরে, এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন রাজশাহী জেলা, সিমিন হোসেন রিমি গাজীপুর জেলা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ চট্টগ্রাম উত্তরে, ডা. দীপু মনি চাঁদপুরে, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনকে জয়পুরহাট, এসএম কামাল হোসেনকে খুলনা, আফজাল হোসেনকে পটুয়াখালী, অর্থ সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খানকে বান্দরবানে, কৃষি সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলীকে লক্ষ্মীপুরে এবং বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনকে রাজবাড়ীর শান্তি সমাবেশে উপস্থিত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
যেসব জেলায় কেন্দ্রীয় নেতারা যাবেন না সেখানে জেলার নেতাদের পাশাপাশি স্থানীয় সংসদ সদস্যদের অংশগ্রহণে ইউনিয়ন পর্যায়ে শান্তি সমাবেশ করতে বলা হয়েছে বলে জানা গেছে।আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, কোনও জেলা সদরে শান্তি সমাবেশ হবে না। ইউনিয়নে কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি জেলা ও উপজেলার নেতারা উপস্থিত থাকবেন। কেন্দ্রীয় নেতারা শুধু একটি ইউপি সমাবেশে যোগ দেবেন। জেলা ও উপজেলা নেতাদেরও আলাদা ইউনিয়নের দায়িত্ব দেওয়া হবে।আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেন, ‘শান্তি সমাবেশের মাধ্যমে তৃণমূলের মানুষের কাছে শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরা হবে। বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময়ে দেশের মানুষ কী অবস্থায় ছিল সেগুলো তুলে ধরবো। দলকে ঐক্যবদ্ধ করার পাশাপাশি নির্বাচনকে সামনে রেখে কেউ যেন অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে না পারে, জনগণের জানমালের ক্ষতি করতে না পারে, সেই আহ্বান জনগণকে করবো।’
সরকার পতনের দাবিতে গত বছর থেকে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করে আসছে বিএনপি। এরমধ্যে গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনীতিতে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। সেদিন কর্মসূচি থেকে বিএনপি নৈরাজ্য করতে পারে দাবি করে রাজধানীর অলিগলিতে সতর্ক অবস্থানে ছিল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এরপর বিএনপি ঢাকায় যেদিন কর্মসূচি দিয়েছিল তার পাল্টা শান্তি সমাবেশ করেছে ক্ষমতাসীনরা।এরমধ্যে গত ৪ ফেব্রুয়ারি বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশ করে বিএনপি। ওইদিন আওয়ামী লীগও বিভাগীয় পর্যায়ে শান্তি সমাবেশ করে। ওইদিন কামরাঙ্গীরচরে অনুষ্ঠিত শান্তি সমাবেশে বিএনপির পাল্টাপাল্টি কোনও কর্মসূচি ক্ষমতাসীনরা দিচ্ছে না বলে দাবি করেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। একই সঙ্গে আগামী জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত ধারাবাহিক কর্মসূচি দিয়ে মাঠে থাকবেন বলেও জানান তিনি। ৪ ফেব্রুয়ারি বিএনপি তাদের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করলেও আওয়ামী লীগ আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও কর্মসূচি এখনও ঘোষণা করেনি। তবে জেলা পর্যায়ে নেতাদের ১১ ফেব্রুয়ারি শান্তি সমাবেশ করতে দলীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।