মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ নেওয়ায় ১৫ দিনের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকার। শনিবার (১৫ মে) থেকে আগামী ৩০ মে পর্যন্ত এই বিধিনিষেধ কার্যকর থাকবে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।খবরে বলা হয়, বিধিনিষেধের এই সময়ে জরুরি পরিষেবা সংশ্লিষ্ট সংস্থা বাদে সব ধরনের অফিস বন্ধ থাকবে। বাস, মেট্রো ও ফেরি পরিষেবাও পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ট্যাক্সি এবং অটোও চলাচল করবে না। আগের মতোই বন্ধ থাকবে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।আগের লকডাউনে সাধারণ জনগণ নানা অজুহাতে বের হতো। সেটি রুখতে এবার রাত ৯টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত বাইরে বেরনো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে অতি জরুরি ক্ষেত্রে বের হওয়া যাবে। রাতে ব্যক্তিগত গাড়িও চালানো নিষেধ। তবে দিনের বেলায় নিজের গাড়ি নিয়ে টিকা নিতে যেতে পারবেন মানুষ।
রাজ্য সরকারের ঘোষণায় বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য, আদালত, বিদ্যুৎ, রান্নার গ্যাস, পানীয় জল, সংবাদমাধ্যম, পরিচ্ছন্নতা, কারাগার, পেট্রোল পাম্প, গাড়ির যন্ত্রাংশের মতো জরুরি পরিষেবা প্রদানকারী দফতর চালু থাকবে। এ ছাড়া বাকি সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি দফতর বন্ধ থাকবে। বন্ধ থাকবে শপিং মল, স্পা, সিনেমা হল, শরীরচর্চা কেন্দ্র, সুইমিং পুলও।সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকবে মিষ্টি ও মাংসের দোকান। গয়না ও শাড়ির দোকান খোলা থাকবে দুপুর ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত। বন্ধ থাকবে মদের দোকান।এছাড়া মৃতদেহ সৎকারে ২০ জনের বেশি জমায়েত হওয়া যাবে না। বিয়েবাড়িতে জমায়েত করতে পারবেন না ৫০ জনের বেশি। ব্যাঙ্ক খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে ২টা পর্যন্ত। মুদিখানা এবং বাজার খোলা থাকবে সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত। হোটেল, রেস্তরাঁ আগের মতোই বন্ধ থাকবে।তবে খাবার, ওষুধ এবং স্বাস্থ্য সরঞ্জামের মতো পণ্য বাড়িতে সরবরাহ করা যাবে। সমস্ত ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক সমাবেশ বন্ধ থাকবে।৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে খুলে রাখা যাবে চা বাগান। বন্ধ থাকবে শিল্প-কারখানা। ৩০ শতাংশ কর্মী নিয়ে চালু থাকবে চটকল। চালু থাকবে ই-কমার্স এবং রান্নার গ্যাস সরবরাহ কেন্দ্রও।ভারতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বিশ্বকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। গত একদিনে ৩ হাজার আটশর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় তিন লাখ মানুষ। পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক সংক্রমণ ২০ হাজারের পাশে ঘোরাফেরা করছে। রাজ্যটিতে দৈনিক মৃত্যু হচ্ছে শতাধিক। এমন অবস্থায় ফের লকডাউন দিল মমতা সরকার।