ব্রিটবাংলা ডেস্ক : করোনা ভাইরাস শুরু হবার পর পহেলা জানুয়ারী থেকে ২৩ শে মার্চ পর্যন্ত মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষ আকাশ, জল এবং স্থল পথে ব্রিটেনে প্রবেশ করেছেন। আর এর মধ্যে মাত্র ৩শ মানুষ আইসলিউশনে ছিলেন।
বিশ্বে করোনায় মৃত্যুবরনকারী দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় দেশ ব্রিটেন। আর ইউরোপের মধ্যে প্রথম। ব্রিটেনে এ পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজারের কাছাকাছি মানুষের মৃত্যু হয়েছে করোনায়।
কিন্তু করোনা নিয়ন্ত্রন নিয়ে সরকারের বিলম্বিত উদ্যোগ বেশ সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। সবচাইতে বেশি সমালোচনা হচ্ছে ডাক্তার, নার্সসহ হাসপাতালের প্রথম সারির স্টাফদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমানে পার্সনাল প্রটাক্টিভ ইকুইপমেন্ট সংক্ষেপে পিপিই সরবরাহের ব্যর্থতা নিয়ে।
এছাড়া বিদেশ ফেরতদের উপর সেল্ফ আইসলিউশনে বাধ্যবাদকতার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাত্র দেড় সপ্তাহ আগে। অথচ করোনা ভাইরাস বিশ্বব্যাপী মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ার সাথে ব্রিটেন অনেক দেরিতে করলেও ইউরোপসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ লকডাউনের সাথে সাথে আকাশপথসহ সীমান্ত বন্ধ করলেও ব্রিটেন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে অনেক পরে। জানুয়ারী থেকে ইউরোপে করোনার বিস্তার হলেও ব্রিটেন লকডাউনে গেছে ২৩শে মার্চ। লকডাউনে গেলেও সীমান্ত ছিল খোলা। আকাশ পথে অবাধে মানুষ ব্রিটেনে প্রবেশ করেছে।
মঙ্গলবার লেবার দলীয় এমপি স্টিফেন ডটি জানিয়েছেন, পহেলা জানুয়ারী থেকে ২৩শে মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন দেশ থেকে ১৮ দশমিক ১ মিলিয়ন মানুষ ব্রিটেনে প্রবেশ করেছেন। এর মধ্যে চীন এবং জাপান থেকে আসা মাত্র ২শ ৭৩ জনকে সরকার আইসলিউশনে রেখেছে। বাকীদের ব্যাপারে সরকারের কাছে কোন তথ্য নেই।
এই সময়ের ভেতরে আমেরিকা, চীন, স্পেন, ইতালি, ফ্রান্স, ইরান এবং তুরস্ক থেকে আসা কতোজনকে সরকারী আইসলিউশন সেন্টারে নেওয়া হয়েছে, তা জানতে পার্লামেন্টে প্রশ্ন উত্থাপন করেছিলেন এমপি ডটি। তাকে জানানো হয়েছে, করোনা শুরু হওয়ার পর ৩১ জানুয়ারী বিশেষ ফ্লাইটে চীনের উহান থেকে ৮৩ জন, ফ্রান্স থেকে ১১ জন, ২ ফেব্রুয়ারী উহান থেকে আরো ১শ ৪৭ জন এবং ৯ ফেব্রুয়ারি জাপানের ডায়মন্ড ক্রুসশিপ থেকে আসা ৩২ জন যাত্রীকে সরকারী আইসলিউশন সেন্টারে ১৪ দিন রাখা হয়েছিল। এর বাইরে ওই সময়ের ভেতরে বিদেশ থেকে আসা কেউ আইসলিউশন করেছে কি না, তা সরকারের হিসেবে নেই।
তবে সম্প্রতি বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারতসহ সাউথ এশিয়ার কয়েকটি দেশ থেকে বিশেষ ফ্লাইটে ব্রিটিশ নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার সময় অর্থাৎ গত এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকে বিদেশ ফেরত যাত্রীদের ব্যাপারে কঠোর হয়েছে সরকার। ব্রিটেনে প্রবেশের পর প্রথম ১৪ দিন সেল্ফ আইসলিউশনে থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এমন কি এয়ারপোর্টে নামার পর কর্তৃপক্ষকে যে ঠিকানায় আইসলিউশনে থাকবেন সেই ঠিকানা সরবরাহ করতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যাত্রীদের। ১৪ দিনের ভেতরে সেই ঠিকানা অনুযায়ী যে কোন সময় নজরদারী করবে কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে সরকার আরো কঠোর হবে বলেও গত রোববার বিবিসিকে বলেছেন, ট্রান্সপোর্ট সেক্রেটারী গ্রান্টশাপ।