অনুসন্ধান বলছে ৩৩ শতাংশ ব্রিটিশ মন্ত্রিপরিষদ সদস্য ইসরায়েল থেকে টাকা পান

ব্রিটিশ ক্যাবিনেটের তিনজনের একজন এমনকি দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ইসরায়েল অথবা ইসরায়েল লবির কাছ থেকে টাকা পান। দি ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম ওয়েবসাইট বলছে বছরের পর বছর ধরে ইসরায়েল ব্রিটেনের শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের এভাবে অর্থায়িত করছে। মিডিল ইস্ট মনিটর

এধরনের প্রবণতাকে ব্রিটেনের এক সাবেক কনজারভেটিভ সিনিয়র মন্ত্রী ‘ঘৃণাপূর্ণ’ বলে অভিহিত করেছেন। ২০০৪ সালের নভেম্বর মাসে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ইসরায়েলে ৫ দিনের সফরে যান। এর ৩ বছর পর বরিস ব্রিটেনের পার্লামেন্টের সদস্যপদ লাভ করেন। ইসরায়েল সরকার ও কনজারভেটিভ ফ্রেন্ডস অব ইসরায়েল (সিএফআই) যৌথভাবে বরিসের ওই সফরের ব্যয় বহন করেছিল।প্রভাবশালী ওয়েস্টমিনিস্টার লবি গ্রুপ তাদের পেছনে ইসরায়েলি অর্থায়ন কারা করেন তা প্রকাশ করতে না চাইলেও ৮০ শতাংশ কনজারভেটিভ এমপি এধরনের অর্থায়নের কথা স্বীকার করেন। ভ্রমণ বা অন্য কোনো উপায়ে অর্থায়ন করে ইসরায়েল ব্রিটেনের ওপর প্রভাব বিস্তার করে।ইসরায়েল ভ্রমণের ৪ বছর পর বরিস জনসন ২০০৮ সালে ব্রিটিশ সংসদীয় রেজিস্টারে বিষয়টি জানান। তবে ওই ভ্রমণে কত খরচ হয়েছিল সে সম্পর্কে বরিস কিছু জানাননি। যা ব্রিটিশ পার্লামেন্টের রীতি ও নীতির লঙ্ঘন।বরিসের সঙ্গে ব্রিটেনের সাবেক চ্যান্সেলর জর্জ ওসবার্ন, যিনি এই সফরে ছিলেন, তিনি ফিরে আসার দুই সপ্তাহ পরে এটি নিবন্ধভুক্ত করেছিলেন। ২০১২ সালে সিএফআই ‘ব্যাটেল বাস’ নামে এক কর্মসূচির আয়োজন করে যাতে বরিস উত্তর লন্ডনে তার মেয়র নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন।ব্রিটিশ মন্ত্রিপরিষদের সদস্য অলক শর্মা, কোয়াসি কোয়াটাং, রবার্ট জেনরিক, অলিভার ডাউডেন ও আমান্ডা মিলিং ২০১১ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে ইসরায়েল সফর করেন। এদের মধ্যে এমপি হবার আগেই অলিভার ডাউডেন ইসরায়েল সফর করেন।

ব্রিটিশ মন্ত্রিপরিষদের আরো দুই সদস্য মাইকেল গভ ও প্রীতি প্যাটেল ওয়াশিংটন ডিসিতে আমেরিকান ইসরায়েল পাবলিক এ্যাফেয়ার্স কমিটির (এআইপ্যাক) সম্মেলনে যোগ দেন। ইসরায়েলের সঙ্গে গোপন বৈঠকে যোগ দেওয়ার অভিযোগে প্রীতি প্যাটেলকে ২০১৭ সালে বরখাস্ত করেন সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে।বরিস জনসন প্রীতি প্যাটেলকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিযুক্ত করেন। ডানপন্থী ও ইসরায়েলী থিঙ্ক ট্যাঙ্ক হেনরি জ্যাকসন সোসাইটি ২০১৩ সালে এআইপ্যাক আয়োজিত একটি ফোরামে প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দিতে প্যাটেলকে আড়াই হাজার পাউন্ড দেয়। হওয়ার জন্য ২,৫০০ ডলার (৩,৫৩০ ডলার) দিয়েছে।কনজারভেটিভ পার্টি নেতা, সাবেক সামরিক কর্মকর্তা ও মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকা বিষয়ক মন্ত্রী জেমস ক্লেভার্লি ভ্রমণের সময় বলেন ইসরায়েল একটি বিস্ময়কর দেশ, এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। অথছ বছরের পর বছর হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সহ বেশ কয়েকটি গ্রুপ ইসরাইলকে বর্ণবাদী রাষ্ট্র হিসাবে চিহ্নিত করেছে, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য দোষী করেছে।জেমস ক্লেভার্লি সাম্প্রতিক গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলকে সমর্থন করে বলেন হামাস ও অন্যান্য সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী দ্বারা সন্ত্রাসবাদের এই কর্মকাণ্ডের আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে জেমস ক্লেভার্লি ইসরায়েলি যুদ্ধাপরাধের বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে তদন্তের বিরোধিতা করেন।ব্রিটেনের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্যার অ্যালান ডানকান এধরনের ইসলায়েলি অর্থায়নের বিষয়টির নিন্দা জানিয়ে বলেন এটি ব্রিটিশ রাজনীতিতে ‘সবচেয়ে ঘৃণ্য হস্তক্ষেপ’।সূত্র: আমাদের সময়

Advertisement