আজ বিশ্ব শিশু ক্যানসার দিবস

আজ বিশ্ব শিশু ক্যানসার দিবস। শিশু ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ২০০২ সালে চাইল্ড ক্যান্সার ইন্টারন্যাশনাল (সিসিআই) কর্তৃক এ দিবসটি পালন শুরু হয়। সচেতনতা সৃষ্টি ছাড়াও এ দিবসটির অন্যতম লক্ষ্য হল মৃত্যুহার হ্রাস করা, এবং ক্যান্সার সম্পর্কিত ব্যথা এবং এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করা শিশুদের দুর্দশা হ্রাস করা।প্রতিবছর ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছে। শিশুদের সাধারণত ব্লাড ক্যান্সার বেশি হচ্ছে। তবে নসিকাগ্রন্থি, কিডনি এবং চোখের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়া শিশুর সংখ্যাও কম নয়। এ লক্ষ্যে ২০৩০ সালের মধ্যে সারা বিশ্বে ক্যান্সার নির্ণয় করা শিশুদের মধ্যে অন্তত ৬০ শতাংশ বেঁচে থাকার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হবে।বিশেষজ্ঞদের দাবি, বেশির ভাগ শিশুর ক্যান্সার নিরাময়যোগ্য। শনাক্ত করা গেলে ও উন্নত চিকিৎসা পেলে ৭০ শতাংশ রোগী সেরে ওঠেন। কিন্তু মাত্র ২০ শতাংশ রোগী উন্নত চিকিৎসার সুযোগ পান।বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নানা অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে।দেশে গত ১০ বছরে শিশু ক্যানসার রোগী বেড়েছে ৫ গুণ। প্রতি বছর নতুন করে ক্যানসার শনাক্ত হচ্ছে ১০ হাজার শিশুর। কিন্তু সে অনুপাতে সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে চিকিৎসাব্যবস্থা বাড়েনি। সরকারি পর্যায়ে সারা দেশে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র ৪৭ জন। আবার যেটুকু চিকিৎসাব্যবস্থা রয়েছে, তাও ঢাকাকেন্দ্রিক। ঢাকার বাইরে শিশু ক্যানসারের চিকিৎসা নেই বললেই চলে।চিকিৎসাব্যবস্থার এসব প্রতুলতার কারণে ও মানুষের সচেতনতার অভাবে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে শিশুদের ক্যানসার থেকে সেরে ওঠার হারও অনেক কম। উন্নত দেশে যেখানে ৯০ শতাংশের বেশি শিশু ব্লাড ক্যানসার রোগী ভালো হয়, সেখানে বাংলাদেশে এর পরিমাণ মাত্র ৪০-৫০ শতাংশ।

শিশু ক্যান্সার সম্পর্কে নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-
– সারা বিশ্বে প্রতি ৩ মিনিটে একটি শিশু ক্যান্সারে মারা যায়, যদিও ৮০ শতাংশেরও বেশি শিশু ক্যান্সারের সঙ্গে বেঁচে থাকতে পারে এবং মানসম্মত যত্নের সঙ্গে পূর্ণ ও সুস্থ জীবনযাপন করতে পারে।

– শিশু ক্যান্সারের মধ্যে সবচেয়ে বেশির ভাগই হলো লিউকেমিয়া (শিশুদের মধ্যে সব ক্যান্সারের এক তৃতীয়াংশ লিকিমিয়া), কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের টিউমার, নিউরোব্লাস্টোমা, নেফ্রাব্লাস্টোমা, মেডেলোব্লাস্টোমা এবং রটিনোব্লাস্টোমা ধরনের।

– শিশু ক্যান্সারের মাত্র কয়েকটি পরিচিত ঝুঁকি চিহ্নিত করা হয়েছে এবং এর মধ্যে রয়েছে- গর্ভ, চিকিৎসা পরিস্থিতি, সংক্রমণের সঙ্গে সংক্রমণ, বিকিরণের সঙ্গে যোগাযোগ, পূর্ববর্তী ক্যান্সারের চিকিত্সা, ইত্যাদি।ডাক্তাররা বিশ্বাস করে, দ্রুত এবং কার্যকর চিকিত্সার মাধ্যমে অধিকাংশ শিশু ক্যান্সার চিকিত্সাযোগ্য। প্রাপ্তবয়স্ক ক্যান্সারের তুলনায়, সাধারণভাবে, শিশুদের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে আরও সফলভাবে চিকিত্সা করা শিশুদের বৃহত্তর অনুপাতের সঙ্গে চিকিত্সা করা হয়। এটি বিশ্বাস করা হয় যে, এই পার্থক্য শৈশবের ক্যান্সার থেরাপির জন্য বেশি প্রতিক্রিয়াশীল এবং এটির কারণে, যখন প্রয়োজন হয় তখন একটি শিশু আরও তীব্র থেরাপি সহ্য করতে পারে।

Advertisement