ইস্ট লন্ডন মসজিদের অষ্টম মুসলিম চ্যারিটি রান ২২ সেপ্টেম্বর রোববার

ইস্ট লন্ডন মসজিদের আয়োজনে অষ্টম মুসলিম চ্যারিটি রান অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর রোববার।

ওইদিন সকাল সাড়ে ১০টায় পূর্ব লন্ডনের ভিক্টোরিয়া পার্কে ৫ কিলোমিটার দৌড় অনুষ্ঠিত হবে।

এবারের মুসলিম চ্যারিটি রানে ইস্ট লন্ডন মসজিদসহ ৩১টি চ্যারিটি সংস্থা অংশগ্রহণ করছে। চ্যারিটি রানে অংশগ্রহণে আগ্রহীদের জন্য চলছে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম। আগামী ২১ সেপ্টেম্বর শনিবার পর্যন্ত রেজিষ্ট্রেশন কার্যক্রম চলবে। উক্ত চ্যারিটি রানে অংশগ্রহণ করে ফান্ডরেইজিংয়ের পাশাপাশি স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এগিয়ে আসতে কমিউনিটির ছেলে বুড়ো যুবক সকলের প্রতি আহবান জানানো হয়েছে।

গত ১২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেলে লন্ডন মুসলিম সেন্টারের সেমিনার হলে অনুষ্ঠিত মিডিয়া লঞ্চিং অনুষ্ঠানে এই আহবান জানানো হয়। ইস্ট লন্ডন মসজিদের ডাইরেক্টর দেলওয়ার খান এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মিডিয়া লঞ্চিংয়ে বক্তব্য রাখেন মসজিদের সেক্রেটারি আইয়ুব খান, ট্রাস্টি ও সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ আব্দুল বারী এমবিই এবং সিনিয়র ফান্ডরেইজিং অফিসার তজম্মুল আলী।

মিডিয়া লঞ্চিংয়ে জানানো হয় প্রতিবারের মতো এবারও ৪ ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। অনুর্ধ ১২ বছর, ১৩ থেকে ১৭ বছর, ১৮ থেকে ৩৪ বছর, ৩৫ থেকে ৫০ বছর এবং ৫১ ও ততোর্ধ বয়স ক্যাটাগরি। এতে বিজয়ীদের আকর্ষনীয় পুরষ্কার প্রদান করা হবে। দৌড়ে অংশগ্রহণে আগ্রহীরা ষষষ.বল্রফধবডদটরর্ধহরলভ.ডম.লপ ওয়েবসাইট ভিজিট অথবা ০২০ ৭৬৫০ ৩০০৮ নাম্বারে ফোন করে তাঁদের নাম রেজিষ্ট্রেশন করতে পারবেন।

মসজিদের সেক্রেটারি আইয়ূব খান তাঁর বক্তব্যে বলেন, প্রতিবছর গ্রীস্মকাল এলেই কমিউনিটির মানুষ মুসলিম চ্যারিটি রান-এর জন্য অপেক্ষায় থাকেন। কারণ এই দিনটিতে তাঁরা খোলামাঠে একত্রে সমবেত হওয়ার সুযোগ পান। দৌঁড়ে, হেঁটে, প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে আনন্দ উপভোগ করে থাকেন।

২০১২ সালে আমরা যখন ‘রান ফর ইউর মস্ক’ কর্মসূচি শুরু করা হয় তখন কেউ ভাবেননি এটা এতদূর এগিয়ে যাবে। কিন্তু নাহ, এক বছর, দুই বছর করে এবার এই কর্মসূচি অষ্টম বর্ষে পা রেখেছে। এটি হয়ে গেছে বছরের একটি সেরা কর্মসূচি।

তিনি আরো বলেন, এই কর্মসূচির লক্ষ্য শুধু ফান্ডরেইজিং নয়, কমিউনিটির মানুষকে স্বাস্থ্যসচেতন করাও একটি অন্যতম উদ্দেশ্য। এ ক্ষেত্রে ইস্ট লন্ডন মসজিদ সফল হয়েছে। অনেকেই এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহনের মধ্যদিয়ে এখন নিয়মিত দৌড়াচ্ছেন। শুরুতে একসাথে ৫ কিলোমিটার দৌড়ানোর পর পরবর্তীতে অভ্যাস করে নিয়েছেন। এখন প্রতিদিন সকালে নিয়মিত দৌড়েন এবং হাঁটেন। মানুষের মধ্যে শারিরীক ব্যায়ামের অভ্যাস গড়ে তোলার ক্ষেত্রে মুসলিম চ্যারিটি রান সত্যিকার অর্থে একটি সফল কর্মসূচি। দিনদিনই এই কর্মসূচি আরো বড় হচ্ছে।

শুরুতে এই কর্মসূচির নাম ছিলো ‘রান ফর ইউর মস্ক’। প্রথম তিন বছরের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালে এসে কর্মসূচির নাম পরিবর্তন করে মুসলিম চ্যারিটি রান করা হয়। মূল উদ্দেশ্য ছিলো, এই কর্মসূচির মাধ্যমে অন্যান্য চ্যারিটি সংস্থাকে ইস্ট লন্ডন মসজিদের সাথে সম্পৃক্ত করা। গত ৪ বছর অত্যন্ত সফলতার সাথে এটি মুসলিম চ্যারিটি রান হিসেবে পরিচালিত হয় এবং এই সময়ে অনেক চ্যারিটি সংস্থাকে ক্যাম্পেইনে সম্পৃক্ত করা সম্ভব হয়।

ইতিপূর্বে অংশগ্রহণকারীরা শুধু ইস্ট লন্ডন মসজিদের জন্য ফান্ডরেইজ করতে পারতেন। নাম পরিবর্তনের পর থেকে প্রতি বছর নিজের পছন্দের চ্যারিটির সংগঠনের জন্য মানুষ ফান্ডরেইজ করতে পারছেন।

এবারের চ্যারিটি রানে ৩১টি চ্যারিটি সংগঠন অংশগ্রহণ করছে। চ্যারিটিগুলো হচ্ছে, ইস্ট লন্ডন মসজিদ, ইন্টারপাল, মুনতাদা এইড, প্যানি অ্যাপিল, লুইশাম ইসলামিক সেন্টার, লনলী অরফান, মুসলিম কাউন্সিল অব বৃটেন, মুসলিম এইড, গ্লোবাল রিলিফ ট্রাস্ট, মুসলিম চ্যারিটি, লন্ডন ইস্ট একাডেমী এণ্ড আল-মিজান স্কুল, হাগস, হিউম্যান এইড, এমআরডিএফ, হেলপিং হিউমিনিটি, হিউম্যান কেয়ার, মুসলিম হেলপ ইউকে, হেলপ ইয়াতিম, স্টেপনী শাহজালাল মস্ক, অফ দ্যা স্ট্রিট, সিরিয়া রিলিফ, ফিন্সবারী পার্ক মস্ক, হিউম্যান অ্যাপিল, মাউন্টেন অব মার্সি, গ্লোবাল এইড ট্রাস্ট, কেন্টিশ টাউন বায়তুল আমান মসজিদ, ওয়ান ন্যাশন, হিউম্যান রিলিফ ফাউন্ডেশন, এইটথ ইস্ট লন্ডন স্কাউট গ্রুপ, দারুল আমান মসজিদ ও দারুল উম্মাহ মসজিদ ইউকে।

ইস্ট লন্ডন মসজিদের ডাইরেক্টর দেলওয়ার খান বলেন, ইউরোপের অন্যতম বৃহত্তর ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ইস্ট লন্ডন মস্ক এন্ড লন্ডন মুসলিম সেন্টার। এই মসজিদ পরিচালনায় বছরে মোটা অংকের অর্থ ব্যয়। আর এই ব্যয় সংকুলানের জন্য আমরা সারা বছরজুড়ে বিভিন্ন ফান্ডরেইজিং ক্যাম্পেইন পরিচালনা করি। সামারে চ্যারিটি রান ও ফুটবল টুনামেন্ট আয়োজন, রামাদ্বানে মসজিদে ও টেলিভিশনে বিশেষ ফান্ডরেইজিং ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। আমরা আশাবাদী, কমিউনিটির মানুষের দান অব্যাহত থাকবে এবং এই মসজিদের সেবার মান আমরা দিন দিন আরো বৃদ্ধি করতে পারবো।

মিডিয়া লঞ্চিয়ে আরো বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা সাংবাদিক কে এম আবু তাহের চৌধুরী, সাপ্তাহিক জনমত সম্পাদক ও লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি নবাব উদ্দিন, নিউহ্যাম কাউন্সিলের ডেপুটি স্পীকার ব্যারিস্টার নাজির আহমদ, কাউন্সিলার ফারুক মাহফুজ, রয়েল রিজেন্সি ব্যাংকুয়েটিং হলের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুর বারি, হ্যাকনী রোড শাহপরান জামে মসজিদের সাবেক চেয়ারম্যান কমিউনিটি নেতা আলহাজ্ব নূর বখশ, মুসলিম এইড এর ফান্ডরেইজিং অফিসার ফরহাল আহমদ, হিউম্যান এইড এর ফান্ডরেইজিং কে-অর্ডিনেটর সাবেক কাউন্সিলার আবজল মিয়া, মুনতাদা এইড এর রেজা মালিক, মুসলিম কমিউনিটি অ্যাসোসিয়েশন বো এণ্ড পপলার শাখার সভাপতি মাহফুজ নাহিদ, মুসিলম চ্যারিটির কমিউনিটি এনগেজমেন্ট অফিসার রাশিদ আলী ও স্পোর্টিং ফাউন্ডেশনের সিইও আরজ মিয়া।

Advertisement