এগুলো খান, ভালো ঘুমান

রাত একটা, দুটো, তিনটে। অন্ধকারে পাহারা দিচ্ছে একটা রাতজাগা এক অ্যানড্রয়েড ফোন আর এক জোড়া নির্ঘুম চোখ। এটা কোনো কাল্পনিক দৃশ্য নয়। আধুনিক জীবনের খুবই স্বাভাবিক চিত্র। অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, হাঁটা বা শারীরিক পরিশ্রমের অভাব, স্নায়ুচাপ, গ্যাজেটনির্ভরতা, সর্বোপরি অনলাইন আর অফলাইন জীবনের ব্যস্ততায় অনেকেই ঘুমের সমস্যায় ভুগছেন। রাতে ভালো ঘুম হয় না, আপনি কি এমন সমস্যায় ভুগছেন? অনেক সময় দেখা যায়, শরীর প্রচণ্ড ক্লান্ত, কিন্তু ঘুম আসে না। জেনে রাখুন, আপনি একা নন। এই সমস্যার সঙ্গী হিসেবে পাবেন আরও অনেককে।দিনে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঠিক সময়ে ঘুমানোর কোনো বিকল্প নেই। ঘুমহীনতায় তৈরি হয় নানা জটিলতা। তাই আপনার যদি ‘রাতে ঘুম না আসে’, তাহলে ঘুমানোর আগে এই খাবারগুলো খেয়ে দেখতে পারেন। ঘুমের জন্য যে হরমোন দায়ী, এই খাবারগুলো খেলে সেগুলো নিঃসৃত হয়।কলা, দুধ, ডিম, মিষ্টিআলু, মধু, ওটস, আখরোট, কাঠবাদাম, ডার্ক চকলেট, পালংশাক—এগুলো খেয়ে দিব্যি ঘুমাতে পারেন। আমের সময় রাতে দুটো পাকা আম খেলেও ভালো ঘুম হবে। পাকা আমে প্রচুর ট্রিপটোফ্যান থাকে; যা নিদ্রাকর্ষী রাসায়নিক হিসেবে কাজ করে। দুধেও থাকে অ্যামাইনো অ্যাসিড ট্রিপটোফ্যান। তাই আমের মৌসুমে যদি রাতের খাবার হিসেবে গরম দুধে আম মিশিয়ে খান, তাহলে তো পোয়া বারো। আখরোটেও থাকে এই ট্রিপটোফ্যান। শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব হলে ঘুম কম হয়। মস্তিষ্কের নিউরনের যে অংশ ঘুমের সহায়ক হিসেবে কাজ করে, ডিটামিন ডি সেটাকে সক্রিয় করে। আর ডিমে থাকে ভিটামিন ডি। পটাশিয়ামযুক্ত খাবারেও ঘুম পায়। কলা আর পালংশাকে আছে প্রচুর পটাশিয়াম। মধু সেরোটোনিন ও মেলাটোনিন তৈরি করে। এই দুই হরমোনই ঘুমপাড়ানি মাসি আর পিসি। তাই নিয়মিত মধু খেলে ভালো ঘুম হয়। কাঠবাদামের ম্যাগনেশিয়াম ও ট্রিপটোফ্যান স্নায়ু এবং মাংসপেশিকে শান্ত করে। ফলে ভালো ঘুম হবে।শস্যজাতীয় খাবারেও গভীর ঘুম হবে। এসবে সেরোটোনিন নামক শিথিলকরণ হরমোনের নিঃসরণ হয়, যা গভীর ঘুমের জন্য দায়ী। এ ছাড়া এতে থাকা ম্যাগনেশিয়ামও দেহের মাংসপেশি শিথিলকরণে সহায়ক। ডার্ক চকলেটেও সেরোটেনিন তৈরি হয়। অন্যদিকে ওটস খুবই উপকারী আর পুষ্টিকর একটি খাবার। এর জটিল কার্বোহাইড্রেটস হজমে বেশ সময় লাগে। ফলে রাতভর পেট ভরা থাকায় ঘুম ভালো হয়। একই কারণে এবং পটাশিয়াম সমৃদ্ধ হওয়ায় ঘুমের গুণগত মান বাড়াতে মিষ্টিআলুর জুড়ি নেই।

Advertisement