এজাহারে নাম না থাকলেও আবরার হত্যায় অমিত-মিজানুর জড়িত: ডিএমপি

ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে আলোচিত ছাত্রলীগ নেতা অমিত সাহা ও আবরারের সহপাঠী মিজানুর রহমান জড়িত। আবরার হত্যা মামলার এজাহারে তাদের নাম না থাকলেও তারা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। এ তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বুয়েটের শেরেবাংলা হল থেকে মিজানুর রহমানকে গ্রেফতার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম শাখা থেকে জানানো হয়, মিজানুর রহমান বুয়েটের ওয়াটার রিসোর্সেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৬তম ব্যাচের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।

ডিবি সূত্রে জানা গেছে, আবরার ফাহাদের সঙ্গে শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন মিজানুর রহমান। সেই কক্ষ থেকে আজ দুপুরে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

এর আগে আবরার হত্যার ঘটনায় বেলা ১১ টার দিকে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক উপসম্পাদক অমিত সাহাকে রাজধানীর সবুজবাগ এলাকা থেকে গ্রেফতার করে ডিবি।

অমিত বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ১৬তম ব্যাচের ছাত্র। আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর বুয়েট ক্যাম্পাসে আলোচনার শীর্ষে আছেন অমিত সাহা। সব ছাত্রছাত্রীর মুখে তার নাম। বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের উপ-আইনবিষয়ক সম্পাদক তিনি। আবরার হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই পলাতক ছিলেন তিনি। তার কক্ষেই ডেকে নিয়ে প্রথমে পেটানো হয়। ৬ অক্টোবর রাতে আবরার হত্যার ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে চক বাজার থানায় মামলা করেন তার বাবা বরকত উল্লাহ। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে ডিবি। এর মধ্যে ১২ জনের নাম মামলার এজাহারে রয়েছে।

এ বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, আবরার হত্যা মামলার এজাহারে অমিতের নাম নেই। কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে তার। অমিতের পাশাপাশি আবরারের সহপাঠী মিজানুর এবং আরাফাতেরও এ হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। এ কারণেই তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় খুন হন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ। ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করে শনিবার বিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ফাহাদ। এর জের ধরে রোববার রাতে শেরেবাংলা হলের নিজের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে ২০১১ নম্বর কক্ষে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পিটুনির সময় নিহত আবরারকে ‘শিবিরকর্মী’ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালায় খুনিরা।

তবে আবরার কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না বলে নিশ্চিত করেছেন তার পরিবারের সদস্যসহ সংশ্লিষ্টরা।

হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ না রাখতে সিসিটিভি ফুটেজ মুছে (ডিলেট) দেয় খুনিরা। তবে পুলিশের আইসিটি বিশেষজ্ঞরা তা উদ্ধারে সক্ষম হন। পুলিশ ও চিকিৎসকরা আবরারকে পিটিয়ে হত্যার প্রমাণ পেয়েছেন।

এ ঘটনায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে তার বাবা চকবাজার থানায় সোমবার রাতে একটি হত্যা মামলা করেন। বুয়েট কর্তৃপক্ষ একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে। পাশাপাশি গঠন করেছে একটি তদন্ত কমিটিও।

এদিকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ মেলায় বুয়েট শাখার সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১১ জনকে ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

Advertisement