কবি ও লেখক হাসান মাসুমের কবিতা : মা

                        মা
আচ্ছা মাগো, বলবে তুমি কেমন করে পারতে ?
ছেলে-মেয়ে সবক’টাকে খাইয়ে আগে ছাড়তে।
সত্যি করে বলবে মাগো, খাওয়া তোমার হতো ?
পেটটা ভরে, মনটা ভরে- সবার খাওয়ার মতো !
আহার সবার তৈরি করার ডিউটি তোমার রোজ,
তোমার ক্ষুধার খবর মাগো কে বা নিত খোঁজ ?
খাওয়ার সময় কখন পেতে, বুঝবো কেমন করে ?
পুরো সময় কাটতো তোমার বাসার রান্নাঘরে !
চোখে ভাসে সে দিনগুলো, সকাল-দুপুর-সাঁঝে,
কত না সুখ পাইতে তুমি সবার সেবার মাঝে।
দশটা প্রানীর সকল চাওয়া বুঝতে কেমন করে ?
তুমি ছাড়া আর কে জুলুম সইবে এমন করে ?
অভিনয়ে এমন পাকা কেমন করে হলে ?
নিজের খাওয়াও মোদের দিতে- পেটটা ভরা বলে।
খাও না এটা, খাও না ওটা – নানান অজুহাতে,
পছন্দ সব তুলে দিতে ছেলে-মেয়ের পাতে।
শীতটা এলে পিঠে-পুলির উৎসবেতে মেতে
খাইয়ে শেষে বাঁচলে কিছু, হয়তো তুমি খেতে।
ডিমটা মাছের, ফলটা গাছের- সবটা দিতে মোদের
তোমার ঋণের এক কণাও উপায়তো নেই শোধের।
নিজের হাতে কত না পদ, তৈরি করে এনে,
আদর করে খাইয়ে দিতে কোলের কাছে টেনে।
পাঁচক তুমি, সেবক তুমি, তুমিই খেলার সাথী,
মোদের নিয়েই কাটতো সুখে তোমার দিবা-রাতি।
মর্যাদাটা মা’দের প্রভু দেননি বিনা কারণ
তাইতো মায়ের অমর্যাদা করা পুরোই বারণ।
কত না রূপ করতে ধারন, একটা মানুষ হয়ে
তোমার কথা শেষ হবে না, হাজার কথা কয়ে ॥

৩০.০৪.২০২০

 

ক্ষমা করো প্রভু

ক্ষমা করো প্রভু, ক্ষমা করো মোরে, ক্ষমা প্রার্থনা করি করজোড়ে
জুলুম করেছি নিজের উপড়ে, ভেঙেছি সকল শর্ত ;
কত নিয়ামত দিয়াছিলে ঢেলে, জীবন রেখেছ কত হেসে-খেলে
বুঝিতাম কি? বিপদ না এলে, তোমার বানীর অর্থ?

জমিনে দিয়াছ ক্ষুদার আহার, পানিতে তৃষ্ণা মেটে না কাহার?

নদী-সমুদ্র-আকাশ-পাহাড়, সবই আমাদের জন্য,
নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত থেকেছি, স্বার্থের জালে স্বপ্ন এঁকেছি
সবার উপড়ে নিজেকে রেখেছি, নিজেই হয়েছি ধণ্য।

তোমার কৃপায় সদাই রয়েছি, জীবন ভরিয়া শুধুই পেয়েছি
বছরের পর বছর হয়েছি, আশীর্বাদেতে পুষ্ট ;
তবু করি নাই শোকরানা আমি, তব ইবাদাত কতখানি দামি
সেজদাতে গিয়ে আমি দিবাযামি, তোমায় করিনু তুষ্ট।

তারপরও কিছু বন্ধ করনি, তোমায় কৃপায় ধণ্য ধরণী
আরামে বেয়েছি জীবন তরণী- আছে তব সমতূল্য ?
তোমার দয়ায় সকলই পেয়েছি, রিজিক দিয়েছ, তাইতো খেয়েছি
বুক ভরে শ্বাস পুরোই নিয়েছি- চুকাতে হয়নি মূল্য।

দুনিয়ায় যা দাম দিয়ে কিনি, এই ভবে শুধু টাকাটাই চিনি,
তোমারই কাছে সব চিরঋণী- আমরা থাকবো নয় কি ?
সবই তো দিয়াছ বিনামূল্যে, ক্ষমা করো ঋণ তোমার ভুললে
কোন কিছু, প্রভু, যে কোন মূল্যে, তোমার সমান হয় কি ?

সীমালঙ্ঘন করিয়াছি সদা, আদেশ মানিনি মোরা সর্বদা,
শাস্তি প্রদান করিও না হেথা, চুকিও না সেই মূল্য !
করো মার্জনা, করে দাও ক্ষমা, মুছে দাও যত পাপ আছে জমা
তুমি-ই প্রভু হে ! তোমার উপমা ; নেই তব সমতূল্য ।।
২৫.০৮.২০২০

Advertisement