করোনার তাণ্ডবে মৃত্যু ৫৩ লাখ ২১ হাজার প্রাণ নিল করোনা

চলমান মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমে হ্রাস পাচ্ছে। একই সঙ্গে আগের দিনের তুলনায় কমল প্রাণঘাতী ভাইরাসে নতুন সংক্রমিত রোগীর সংখ্যাও। গেল ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে কোভিড শনাক্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন প্রায় চার হাজার মানুষ। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে নতুন করে রোগটিতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় সোয়া চার লাখে নেমে এসেছে।সর্বশেষ এক দিনে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটল ব্রিটেনে। এ দিকে দৈনিক মৃত্যুর তালিকায় এখনো শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। আর প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো, ইউক্রেন, ফিলিপাইন এবং ভিয়েতনামের নাম। এতে বিশ্বব্যাপী রোগটিতে শনাক্তের সংখ্যা ২৭ কোটি চার লাখের ঘর ছাড়িয়েছে। অপর দিকে মৃতের সংখ্যাও এরই মধ্যে ৫৩ লাখ ২১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে মৃত্যু, আক্রান্ত ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডো মিটারস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, শেষ ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন তিন হাজার ৯৮৩ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার হ্রাস পেল। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা ৫৩ লাখ ২১ হাজার ৭২৯ জনে পৌঁছেছে।নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন চার লাখ ৩১ হাজার ৪৩৮ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় ৬৮ হাজার কমেছে। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত রোগটিতে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে ২৭ কোটি চার লাখ ১২ হাজার ৮০৯ জনে দাঁড়িয়েছে।এ দিকে শেষ এক দিনে বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ দেখেছে যুক্তরাজ্যের জনগণ। একই সময়ে দেশটিতে নতুন করে মহামারি করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৪৮ হাজার ৮৫৪ জন। আর মারা গেছেন ৫২ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত এক কোটি আট লাখ ১৯ হাজার ৮১৫ জন করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন এবং এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে এক লাখ ৪৬ হাজার ৪৩৯ জনের। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে ফ্রান্সে নতুন করে কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন ৪৩ হাজার ৮৪৮ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ৪৮ জন।

অন্য দিকে দৈনিক প্রাণ হারানোদের তালিকায় এখনো শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। গেল ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে মহামারি করোনায় সংক্রমিত হয়ে প্রাণ দিয়েছেন এক হাজার ১৩২ জন এবং নতুন করে রোগটিতে সংক্রমিত হয়েছেন ২৯ হাজার ৯২৯ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে এক কোটি এক লাখ ছয় হাজার ৮৯৬ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে দুই লাখ ৮৯ হাজার ৪৮৩ জনের।শেষ এক দিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে করোনার থাবায় নতুন সংক্রমণ ও প্রাণহানি অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। একই সময়ে দেশটিতে নতুন করে রোগটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮ হাজার ৭৮৪ জন। আর মারা গেছেন ১৬৭ জন। করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশটিতে এ পর্যন্ত সংক্রমিত হয়েছেন পাঁচ কোটি আট লাখ এক হাজার ৪৫৫ জন। আর মারা গেছেন ৮ লাখ ১৭ হাজার ৯৫৬ জন।

এছাড়া ইউরোপের দেশ জার্মানিতে নতুন করে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ২৯ হাজার ৬৩৩ জন। আর মারা গেছেন ১২৩ জন। মহামারি করোনা ভাইরাসের তাণ্ডব শুরুর পর থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত ৬৫ লাখ ৩০ হাজার ৯১২ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন এক লাখ ছয় হাজার ৩৩১ জন। একই সময়ে ইউক্রেনে নতুন করে রোগটিতে সংক্রমিত হয়েছেন পাঁচ হাজার ২৭৫ জন। আর মারা গেছেন ২৩৮ জন।করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও প্রাণ হারানোদের সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। গেল এক দিনে দেশটিতে কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ৮২ জন। আর নতুন করে রোগটিতে সংক্রমিত হয়েছেন এক হাজার ৬৮৮ জন। অপর দিকে মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দুই কোটি ২১ লাখ ৮৯ হাজার ৮৬৭ জনে পৌঁছেছে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ছয় লাখ ১৬ হাজার ৯৪১ জনের।

এ দিকে কোভিড আক্রান্তদের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারত। যদিও প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারানোদের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান এখন তৃতীয়। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট সংক্রমিত হয়েছেন তিন কোটি ৪৬ লাখ ৯৪ হাজার ১৪২ জন। আর মারা গেছেন চার লাখ ৭৫ হাজার ৪৩৪ জন।এছাড়া রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে শেষ এক দিনে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে ৬১ জন, ইউরোপের মুসলিম রাষ্ট্র তুরস্কে ১৮২ জন, পোল্যান্ডে ৬৫ জন, ফিলিপাইনে ১৮৪ জন এবং ভিয়েতনামে ২২৮ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। অন্য দিকে নির্ধারিত ২৪ ঘণ্টায় উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোতে প্রাণ হারিয়েছেন ২৩৫ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে দুই লাখ ৯৬ হাজার ৬২০ জনের।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে এশিয়ার পরাশক্তি চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ প্রাণঘাতী ভাইরাসটিকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে।

Advertisement