কাবা পৃথিবীর প্রথম জমিন

ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: পবিত্র কাবা শরিফ পৃথিবীতে আল্লাহর জীবন্ত নিদর্শন। সৃষ্টির সূচনা থেকেই মহান আল্লাহ কাবাকে তাঁর মনোনীত বান্দাদের মিলনমেলা হিসেবে কবুল করেছেন। ভৌগোলিকভাবেই গোলাকার পৃথিবীর মধ্যস্থলে কাবার অবস্থান, যা পৃথিবীর কেন্দ্রস্থল হিসেবে বিবেচিত। এ বিষয়ে পিএইচডি করেছেন ড. হুসাইন কামাল উদ্দীন আহমদ। তাঁর থিসিসের শিরোনাম হলো—‘ইসকাতুল কুররাতিল আরধিয়্যা বিন্ নিসবতে লি মাক্কাতিল মুকাররামা।’ (মাজাল্লাতুল বুহুসুল ইসলামিয়া, রিয়াদ : ২/২৯২)

ওই থিসিসে তিনি প্রাচীন ও আধুনিক দলিল-দস্তাবেজের আলোকে এ কথা প্রমাণ করেছেন যে কাবাই পৃথিবীর মেরুদণ্ড ও পৃথিবীর মধ্যস্থলে অবস্থিত। ইসলামের রাজধানী হিসেবে কাবা একটি সুপরিচিত নাম। পানিসর্বস্ব পৃথিবীতে মাটির সৃষ্টি এ কাবাকে কেন্দ্র করেই।

উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাকেন্দ্রের পরিচালক ড. খালিদ বাবতিনের গবেষণায় দেখা গেছে, সৌদি আরবে অবস্থিত পবিত্র কাবাই পৃথিবীর কেন্দ্রবিন্দু। (আল আরাবিয়া : ২৩ জুলাই, ২০১২)

আরেকটি বিষয় হলো, বছরের বিশেষ একটি দিন দুপুরে সূর্য ঠিক মাথার ওপর থাকে। তখন পবিত্র কাবা বা মক্কায় অবস্থিত কোনো অট্টালিকায় ছায়া দৃষ্টিগোচর হয় না। যেমন—২০১৪ সালের ২৮ মে দুপুর ১২টা ১৮ মিনিটে সূর্য ছিল পবিত্র কাবার ঠিক মাথার ওপর। পৃথিবীর আর কোথাও এমনটি হয় না।

কাবাগৃহের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, তা পৃথিবীর সর্বপ্রথম ও সুপ্রাচীন ঘর। কোরআনের ভাষায়, ‘নিঃসন্দেহে সর্বপ্রথম ঘর, যা মানুষের জন্য নির্ধারিত হয়েছে, সেটিই হচ্ছে এ ঘর, যা বাক্কায় (মক্কা নগরীতে) অবস্থিত।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৯৬)

মাটিতে রূপান্তর হওয়ার আগে কাবা সাদা ফেনা আকারে ছিল। সে সময় পৃথিবীতে পানি ছাড়া কিছু ছিল না। আল্লাহর আরশ ছিল পানির ওপর। হাদিসের ভাষ্য মতে, কাবার নিচের অংশটুকু পৃথিবীর প্রথম জমিন। বিশাল সাগরের মাঝে এর সৃষ্টি। ধীরে ধীরে এর চারপাশ ভরাট হতে থাকে। সৃষ্টি হয় একটি বিশাল মহাদেশের। এক মহাদেশ থেকেই সৃষ্টি হয় অন্য সব মহাদেশ। মাটি বিছানোর পর জমিন নড়তে থাকে। হেলতে থাকে। এর জন্য মহান আল্লাহ পাহাড় সৃষ্টি করেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘তিনি পৃথিবীতে সুদৃঢ় পর্বত স্থাপন করেছেন, যাতে পৃথিবী তোমাদের নিয়ে আন্দোলিত না হয় (হেলে না যায়)।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ১৫)

এভাবেই পবিত্র কাবার বরকতে পৃথিবী স্থির হয়ে যায়। ধীরে ধীরে এখানে মানবসভ্যতার গোড়াপত্তন হয়।

Advertisement