কোহলির ওপর ঈর্ষান্বিত হয়ে এমনটা বলছেন গাভাস্কার’

ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: সিরিজের মাঝপথে ভারত দলকে রেখে অধিনায়ক বিরাট কোহলির অস্ট্রেলিয়া ছাড়ার বিষয়টি নিয়ে ফের নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন দেশটির সাবেক অধিনায়ক সুনীল গাভাস্কার।

সন্তানসম্ভাবা স্ত্রীর পাশে থাকতে কোহলির এই দেশে ফেরা নিয়ে শুরু থেকেই বিরোধিতা করে আসছেন গাভাস্কার।

এবার অ্যাডিলেডে প্রথম টেস্টে ৩৬ রানের ঐতিহাসিক লজ্জার ইনিংসের পর ফের বিষয়টির সমালোচনা করলেন তিনি।

সম্প্রতি টি নটরাজন এবং রবিচন্দ্রন অশ্বিনের উদাহরণ টেনে ভারতীয় ক্রিকেটে বৈষম্যের মারাত্মক অভিযোগ তুললেন গাভাস্কার।

তিনি জানান, একই ইস্যুতে নটরাজন ছুটি না পেলেও অধিনায়ক কোহলিকে ঠিকই দেয়া হলো। নটরাজনকে দিয়ে এখন নেটে বল করানো হচ্ছে। প্রথমবারের মতো বাবা হয়েও সদ্য ভূমিষ্ট মেয়েকে দেখতে আরও ৩ সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে নটরাজনকে। অথচ এখনও বাবাই হলেন না কোহলি। কিন্তু দলকে এমন খাদের কিনারায় রেখে দেশে ফিরছেন তিনি।

সম্প্রতি স্টার স্পোর্টসে এক কলামে এমনটাই লিখেছেন সুনীল গাভাস্কার।

তবে এমন কলামের জন্য কড়া সমালোচনা করে গাভাস্কারকে একরকম ধুয়ে দিচ্ছেন কোহলিসমর্থকরা।

কোহলির ওপর ঈর্ষান্বিত হয়ে গাভাস্কার এমনটা বলছেন বলে মন্তব্য করছেন তারা।

কোহলির একটি ফ্যানগ্রুপ থেকে টুইট করা হয়েছে, কোহলিকে নিয়ে গাভাস্কারের এতো ভাবনা কেন? কই রোহিত শর্মার ছুটির সময়ে কোনো কথা বের হয়নি তার মুখ থেকে।

আনিশা কালিকার নামে এক কোহলিভক্ত টুইটে লিখেছেন, গাভাস্কারের এমন কলামে অত্যন্ত হতাশ হয়েছি। বিরাট কোহলি হচ্ছেন সেই খেলোয়াড় যিনি তার বাবার মৃত্যুর পর পরই রঞ্জি ট্রফিতে খেলতে নেমেছিলেন। আপনি (গাভাস্কার) জাতীয় দলের দায়িত্ব নিয়ে বলছেন? কোহলি তার খেলার বিষয়ে যথেষ্ট অনুগত।

রাহুল শোধি লিখেছেন, কোহলির ছুটির বিষয়ে টি নটরাজনের প্রসঙ্গ তুলে আনা অবিবেচকের মতো কাজ। জাতীয় দলের ট্যুরকে অবজ্ঞা করে চোট নিয়ে রোহিত শর্মা যখন আইপিএলের ফাইনাল খেলল তখন কি গাভাস্কার ঘুমাচ্ছিলেন?

এমন অনেকের মতে, ভারত দলে জায়গা করে নিতে নটরাজন অস্ট্রেলিয়ায় থেকে নেট বোলিং করছেন। টিম ম্যানেজমেন্টের নজর কাড়ছেন। তার বিষয়টির সঙ্গে কোহলির ছুটি মেলানো ঠিক নয়।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি স্টার স্পোর্টসে সুনীল গাভাস্কার কলাম লেখেন, ‘যখন আইপিএল প্লে-অফ চলছিল, প্রথমবারের মতো বাবা হয়েছিল নটরাজন। কিন্তু তাকে অস্ট্রেলিয়া সিরিজের জন্য রেখে দেয়া হয়েছিল। ভারতে ফিরতে দেয়া হয়নি। অথচ ভারতীয় দলে সে ছিল না। সে ছিল তখন নেট বোলার। একবার ভাবুন, একজন ম্যাচ উইনারকে বলা হচ্ছে নেট বোলার হতে। তার ওপর বাবা হওয়ার সময় তাকে ছুটিও দেয়া হচ্ছে না। অস্ট্রেলিয়া সিরিজ শেষে অর্থাৎ জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহের আগে মেয়ের মুখ দেখতে পারছে না সে। উল্টোদিকে দলের অধিনায়ক বাবা হবে বলে প্রথম টেস্ট খেলেই দেশে ফিরে আসছে। একেকজনের জন্য একেকরকম নিয়ম।’

এরপর রবিচন্দ্রন অশ্বিনের উদাহরণ তুলে গাভাস্কার লিখেছেন, ‘অশ্বিনকেও মাঝেমাঝেই এমন বৈষম্যের শিকার হতে হয়েছে। তার বোলিং নিয়ে একজন মূর্খও প্রশ্ন তুলবে না। কিন্তু টিম মিটিংয়ে সোজাসাপটা কথা বলার জন্য, বুদ্ধি-বিবেচনা প্রয়োগ করার জন্য তাকে বিপদে পড়তে হয়েছে। একমত না হলেও বাকিরা যেখানে চোখ বুজে, মাথা নেড়ে সবকিছুতে সায় দিয়ে যায়, অশ্বিন সেটা করে না। তাই একটা ম্যাচে একটু বেশি উইকেট না পেলেই ওকে পরের ম্যাচে বসিয়ে রাখা হয়। এটা কিন্তু প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যানদের ক্ষেত্রে হয় না।’

গাভাস্কার অভিযোগের সুরে লিখেছেন, ‘এটাই ভারতের ক্রিকেট। ভিন্ন ভিন্ন ক্রিকেটারের জন্য ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম। আমার কথা বিশ্বাস না হলে একবার অশ্বিন বা নটরাজনকে জিজ্ঞেস করে দেখুন।’

প্রসঙ্গত, আগামী ২৬ ডিসেম্বর, ৭ ও ১৫ জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিনটি টেস্ট খেলবে ভারত। জানুয়ারির শুরুতে সন্তানসম্ভাবা স্ত্রী আনুশকার পাশে থাকলে এই তিন টেস্ট না খেলেই দেশে ফিরছেন কোহলি।

Advertisement