ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেফতার বন্ধু লোকমানকে নিয়ে যা বললেন পাপন

ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: সরকারের চলমান শুদ্ধি অভিযানে গ্রেফতার হয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়া।

ক্যাসিনোকাণ্ডে জড়িয়ে তার নাম। র‌্যাব জানিয়েছে, অবৈধভাবে টাকা উপার্জনের জন্যই তিনি মোহামেডান ক্লাবের কয়েকটি রুম ক্যাসিনোর জন্য ভাড়া দিয়েছিলেন।

বাসা থেকে বেশ কয়েক বোতল অনুমোদনহীন বিদেশি মদসহ লোকমান ভুঁইয়া গ্রেফতারের পর অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন কী বলছেন! এ বিষয়ে তার প্রতিক্রিয়া কী জানতে উৎসুক ক্রীড়ামহলসহ দেশের অনেকেই।

ব্যক্তি জীবনে লোকমান ভুঁইয়ার সঙ্গে নিবিড় বন্ধুত্ব রয়েছে পাপনের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একসঙ্গে পড়ালেখাও করেছেন।

সেই লোকমান হোসেন ভূঁইয়া মোহামেডানের মতো ঐতিহ্যবাহী ক্লাবে ক্যাসিনো ভাড়া দেয়ার অভিযোগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক।

অবশেষে এ বিষয়ে মুখ খুললেন পাপন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে গুলশানে নিজের বাসায় ক্যাসিনোকাণ্ডে বন্ধু গ্রেফতারের প্রসঙ্গে নাজমুল হাসান পাপন বলেছেন, আমি যে লোকমান হোসেনকে চিনতাম বা চিনি, সেই লোকমান মদ্যপানও করেন না, জুয়ার সঙ্গেও জড়িত নন।

তবে কী র‌্যাব-২ এর সদস্যরা ভুল বলেছেন?

এ বিষয়ে পাপনের জবাব, ‘আমি যে লোকমানকে চিনি সে জীবনেও মদ খায়নি। কোনো দিন জুয়াও খেলেনি। এটা যেমন সত্যি, আবার এটাও সত্যি যে সে ক্যাসিনো ভাড়া দিয়েছে। এখানে অস্বীকার করার তো কোনো পথ নেই। সে যদি অপরাধ করে থাকে, তাহলে তার বিচার হবে। আমরা তাকে যেভাবে চিনি এবং জানি সেটাই বললাম।

তবে প্রমাণিত হওয়ার আগে তো এ বিষয়ে তেমন কিছু বলতে পারছেন না বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপরই ছেড়ে দেয়া উচিত। দেশে আইন আছে। তাদের ওপর আমাদের আস্থা আছে। তারা আগে দেখুক, বুঝুক। আসলে কে কি করেছে। যে দোষ করেছে তার শাস্তি হবে, এটি নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই।’

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি এখন যেহেতু এটি প্রক্রিয়াধীন আছে, তা কোন চরম মন্তব্য না করাই। যেমন ধরেন দুদক থেকে সম্পদের হিসেব তো অনেকের কাছেই যায়, যে কারো কাছেই যেতে পারে দুদক। এটার মানে এখনই বলা যাবে না যে সে অনৈতিক বা বেআইনি কোনো কাজ করেছে।’

এভাবেই বন্ধু লোকমানের সাফাই গাননি পাপন। আবার পক্ষেও কিছু বলেননি।

বিসিবি সভাপতি স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, ‘এখানে বিব্রত হওয়ার কিছু নেই। বেসিক জিনিসটি যেটি বুঝি, যে কেউ যদি অন্যায় করে থাকে তাহলে তার শাস্তি হবে। এটাতে তো কারো কোনো দ্বিমত হওয়ার প্রশ্নই উঠে না।’

চলমান ক্যাসিনো অভিযান বিষয়ে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘আমি এটুকু জানি যে এখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে পদক্ষেপটি নিয়েছেন, এটাকে ভালো না বলার কোনো কারণ নেই। কারণ এমন একটা সাহসী পদক্ষেপ তার পক্ষেই নেয়া সম্ভব, আর কারো পক্ষেই নেয়া সম্ভব না। মানে এটা তো আজকের না, হঠাৎ করে না। অনেক বছর ধরে হয়ে আসছে।’

প্রসঙ্গত গত ২৫ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়াকে রাজধানীর তেজগাঁও মুনিপুরীপাড়ার নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

র‌্যাব-২-এর কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ সেদিন রাত সোয়া ১টার দিকে জানান, মোহামেডান ক্লাবে অবৈধ ক্যাসিনো ভাড়া দিয়ে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেছেন লোকমান। তার এ টাকা অস্ট্রেলিয়ায় কমনওয়েলথ ও এএনজেড ব্যাংকে রাখা আছে।

Advertisement