গভীর রাতেও ভিসি নাসিরের পদত্যাগ দাবিতে উত্তাল বশেমুরবিপ্রবি

ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ভিসি খোন্দকার নাসির উদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে সোমবার গভীর রাতেও বিক্ষোভ করেছেন আন্দোলনকারীরা।

এ সময় শিক্ষার্থীদের স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।

এ ছাড়া ভিসি নাসিরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও কেলেঙ্কারি নিয়ে গান, কবিতা, ছড়া আবৃত্তি করেন আন্দোলনকারীরা।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

এদিকে শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে পদত্যাগ করা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মো. হুমায়ুন কবীর নিরাপত্তা চেয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

এতে আন্দোলনে নতুন মোড় নিয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এ ঘটনারও বিচার দাবি করে বিক্ষোভ করেছেন।

এর আগে সোমবার সকাল থেকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে পঞ্চম দিনের মতো ভিসি নাসিরের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন হল থেকে মিছিল নিয়ে তারা ক্যাম্পাসে একত্রিত হন।

কর্মসূচি চলাকালে শিক্ষার্থীদের হাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মচারী লাঞ্ছিত হন।

ভিসি নাসিরের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের সূত্রপাত হয় একটি ফেসবুক পোস্ট নিয়ে ১১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাংবাদিক ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে বহিষ্কারের মধ্য দিয়ে।

এর মধ্যে জিনিয়া ও ভিসির কথোপকথনের একটি অডিও ভাইরাল হয়, যেখানে ওই ছাত্রীকে বকাঝকা ও হুমকি-ধমকি দিতে শোনা যায় উপাচার্যকে। মেয়েটির বাবাকে নিয়েও তির্যক মন্তব্য করেন তিনি। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে গত বুধবার জিনিয়ার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

পর দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ১৪টি বিষয় মেনে নেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়। এর মধ্যে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বাকস্বাধীনতার নিশ্চয়তা, ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ ছাড়া বহিষ্কার না করা, অভিভাবকদের ডেকে এনে অপমান না করা এবং ফেসবুক পোস্ট ও কমেন্টকে কেন্দ্র করে কোনো শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার না করার কথা রয়েছে।

তবে এতে সন্তুষ্ট না হয়ে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে অনশনসহ আন্দোলন অব্যাহত রাখেন, যার পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা হয়।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগত ক্যাডারদের হামলায় নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দেন ভিসি প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিন। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়। ৫ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।

তদন্ত কমিটিতে বিএনপি-জামায়াত ঘরানার একজন শিক্ষককে আহ্বায়ক করায় এ নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রোববার জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা ক্যাম্পাসে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির প্রতি সমর্থন জানান।

এতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মনোবল চাঙ্গা হয়ে ওঠে। ভিসির অপসারণের এক দফার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার শপথ নেন তারা।

Advertisement