চিত্রনায়ক ফারুকের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শোক

বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা ও সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন পাঠান ফারুক মারা গেছেন। সোমবার (১৫ মে) স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্য হয়।“মিয়া ভাই” খ্যাত অভিনেতা ফারুকের মৃত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।গণমাধ্যমে পাঠানো এক শোক বার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, “চিত্রনায়ক ফারুকের মৃত্যু দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। তার অভিনীত চলচ্চিত্র দেশের সমাজ ও সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে। চলচ্চিত্র অঙ্গনে তার অবদান দেশের মানুষ আজীবন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।”

রাষ্ট্রপতি মরহুম আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।ফারুকের মৃত্যুতে গভীর দুঃখপ্রকাশ করে এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “এ দেশের চলচ্চিত্রে নায়ক ফারুক এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। অভিনয়ের পাশাপাশি রাজনীতি ও সংস্কৃতি অঙ্গনে তার অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।”প্রধানমন্ত্রী তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।অভিনেতা ফারুক দীর্ঘদিন ধরে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সর্বশেষ ২০২১ সালে মার্চ মাসের প্রথম দিকে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সিঙ্গাপুরে যান এই অভিনয়শিল্পী ও রাজনীতিবিদ। পরীক্ষায় তার রক্তে সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর থেকেই শারীরিকভাবে অসুস্থতা অনুভব করছিলেন তিনি। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসকের পরামর্শে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। হাসপাতালে ভর্তির কয়েক দিন পর তার মস্তিষ্কেও সংক্রমণ ধরা পড়ে। সেখানেই তার চিকিৎসা চলছিল।

১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন ফারুক। এইচ আকবর পরিচালিত “জলছবি” চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে ঢাকাই সিনেমার তার অভিষেক হয়। এরপর ১৯৭৩ সালে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র খান আতাউর রহমানের পরিচালনায় “আবার তোরা মানুষ হ” ও ১৯৭৪ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতার “আলোর মিছিল” সিনেমায় পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি।তার অভিনীত শতাধিক চলচ্চিত্রের মধ্যে “লাঠিয়াল”, “সুজন সখী”, “নয়নমনি”, “সারেং বৌ”, “গোলাপী এখন ট্রেনে”, “সাহেব”,“মিয়া ভাই” উল্লেখযোগ্য।

“লাঠিয়াল” সিনেমায় অভিনয়ের জন্য ১৯৭৫ সালে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন ফারুক। ২০১৬ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আসরে তাকে দেওয়া হয় আজীবন সম্মাননা। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তিনি সবচেয়ে সফল ও সেরা নায়কদের একজন হিসেবে স্বীকৃত।২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৭ আসন থেকে আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ফারুক। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি দলটির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ১৯৬৬ সালে ছাত্রনেতা হিসেবে যোগ দেন ছয় দফা আন্দোলনে। সে সময় তার নামে ৩৭টি মামলা হয়। এরপর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন ফারুক।

Advertisement