জীবনে কখনও বিদ্যুৎ ব্যবহার করেননি এই নারী!

প্রখর গ্রীষ্ম। গরমে দরদর করে ঘামছেন। ঘরে পাখা চালিয়েও রেহাই নেই। একটু অর্থের সংস্থান থাকলেই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র, নিদেনপক্ষে কুলার তো চাই-ই চাই। কিন্তু একেবারে বিদ্যুৎহীন হয়ে থাকতে হয় যদি, তাও মহারাষ্ট্রের গরমে! এ যে একেবারে অসম্ভব। এই অসম্ভবকেই সম্ভব করেছেন মহারাষ্ট্রের এক অধ্যাপিকা।

ভারতের মহারাষ্ট্রের অধ্যাপিকা হেমা সানে। বয়স ৭৯। কোনওরকম বিদ্যুৎ সংযোগ ছাড়াই একটা মাটির ঘরে বাস করছেন এই অধ্যাপিকা। পুণের বুধওয়ার পেথে এলাকার বাসিন্দা তিনি।

প্রকৃতিকে ভালবেসে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। হেমা সানে সাবিত্রীবাঈ ফুলে পুণে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট করেন। তিনি পুণের গারওয়ারে কলেজে পড়াতেন। একটি ছোট কুঁড়ে ঘরে প্রচুর গাছপালা ঘেরা পরিবেশে থাকেন তিনি। সঙ্গে থাকে তাঁর পোষ্য কুকুর, বিড়াল, বেজি ও অসংখ্য পাখি।

হেমা বলেন, ‘প্রকৃতিরই সম্পত্তি সবকিছু, আমার নয়। আমি ওদের দেখাশোনা করার জন্য এখানেই আছি। মানুষ আমাকে বোকা বলে। আমি মানসিক ভারসাম্যহীন হতেই পারি কিন্তু বিদ্যুৎহীনভাবে থাকা আমার কাছে কোনও ব্যাপার নয় কারণ এরকম জীবনযাপনই আমার পছন্দ।’

হেমা পরিবেশ সংক্রান্ত এবং গাছপালা নিয়েও অসংখ্য বই লিখেছেন এই ঘর থেকেই। হেমার কথায়, তিনি বিদ্যুতের প্রয়োজন অনুভব করেননি। বরং কেউ তাঁকে এই প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ নিয়ে এক জন কী ভাবে বাঁচেন?

তাঁর কাছে অনেকেই এই বাড়ি ফার্ম হাউসের জন্য কিনতে চেয়েছেন। কিন্তু সকালবেলা যাদের ডাকে ঘুম ভাঙে, সারাদিন যাদের সাহচর্যে থাকেন তিনি, তাদের ক্ষতি করতে পারবেন না। গাছ বা পাখিদের যত্ন নিজের হাতেই নিতে চান তিনি।

আর যারা তাঁকে পাগল বলে, তাঁদের কী বলেন হেমা? প্রকৃতির এই মানুষ বলেন, ‘আমি কাউকে কোন বার্তা বা জ্ঞান দিই না, বরং আমি বুদ্ধের বিখ্যাত কথাটাই উচ্চারণ করি।’

হেমা ব্যক্তিগতভাবে গৌতম বুদ্ধের একটি বাণীতে বিশ্বাস করেন, সেটি হল নিজের জীবনের পথ নিজেকেই বেছে নিতে হবে। তাই প্রকৃতিকে ভালবেসেই এমন সিদ্ধান্তে অনড় বৃদ্ধা।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা, এনডিটিভি

Advertisement