জ্বলছে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চল

ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: জ্বলছে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চল। একদিকে লাশ আর লাশ। অন্যদিকে অবকাঠামোতে বোমার আগুন। ধোয়ায় কালো হয়ে যাচ্ছে আকাশ। মানুষের আর্তনাদে আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। দেশটির উত্তরাঞ্চলে কুর্দিদের অবস্থানস্থল লক্ষ্য করে তুরস্কের হামলায় এমন এক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে তারা সিরিয়ার রাস আল আইন শহর দখল করে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এমন অবস্থায় কুর্দিদের বিরুদ্ধে সামরিক হামলা স্থগিত রাখতে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়্যিপ এরদোগানের প্রতি ফোন করে আহ্বান জানিয়েছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।

এ সময় তিনি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। জানিয়েছেন, তুরস্কের এমন লড়াইয়ে সিরিয়ার মানবিক পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। তাই তিনি যুদ্ধিবিরতিতে পৌঁছার জন্য এরদোগানকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন। এরই মধ্যে এই কুর্দিদের সঙ্গে তুরস্কের এই যুদ্ধে কুর্দি যোদ্ধাগোষ্ঠী ওয়াইপিজির সদস্য ও বেসামরিক মিলে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। বৃটেনের একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে এ কথা বলা হয়েছে।

এমন অবস্থায় এরদোগানকে ফোন করে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেছেন, বৃটেনের গুরুত্বপূর্ণ একজন অংশীদার তুরস্ক। একই সঙ্গে তারা ন্যাটো জোটেরও গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। এ সময় তিনি দায়েস বা আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তুরস্কের অগ্রণী ভূমিকা স্বীকার করে নেন। তবে বরিস জনসন পরিষ্কার করে বলেন, তুরস্কের এই সামরিক অভিযান সমর্থন করতে পারে না বৃটেন। তাই তিনি এরদোগানকে অপারেশন বন্ধ করে আলোচনা শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি আরো জানিয়েছেন অস্ত্রবিরতিতে মধ্যস্থতা করতে বৃটেন ও আন্তর্জাতিক অংশীদাররা প্রস্তুত রয়েছে।

সিরিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তারপরই সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে কুর্দিদের অবস্থানস্থলে হামলা চালানো শুরু করে তুরস্ক। তবে এর ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতির মুখে এরই মধ্যে কুর্দিদের কাছে আটক থাকা আইএসের ৫ জন বন্দি পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। শনিবার সকালে তুরস্ক দখল করে নিয়েছে সিরিয়ার রাস আল আইন শহর। সেখানে আবাসিক এলাকাগুলোতে অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তুরস্কের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা। তবে কুর্দিরা তুরস্কের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস (এডিএফ) বলেছে, রাস আল আইন শহরে এখনও তারা প্রতিরোধ গড়ে রেখেছে। তুর্কি সেনাদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ চলছেই।

মানবাধিকার বিষয়ক গ্রুপ সিরিয়ান অবজার্ভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলছে, তুরস্কের প্রধান টার্গেট হলো রাস আল আইন। এখনও তারা ওই শহর পুরোপুরিভাবে দখলে নিতে পারে নি। তবে তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রী টুইটে বলেছেন, রাস আল আইন আবাসিক এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেয়া হয়েছে সফল অভিযানের মাধ্যমে। বুধবার সিরিয়ার ভিতর প্রবেশ করে হামলা শুরু করে তুরস্ক। ফলে এরই মধ্যে একটি শহর দখল করে নেয়াকে তুরস্কের বড় অর্জন বলে দেখা হচ্ছে। তবে এই দখল নেয়ার পর তারা ওই শহরটি সিরিয়ার কাছে হস্তান্তর করবে নাকি তুরস্কের মানচিত্রের সঙ্গে যোগ হবে সে বিষয়ে কিছু বলে নি।

Advertisement