ওয়াটনি মার্কেট আইডিয়া স্টোর : ছবি মাইক ব্রোক
ব্রিটবাংলা ডেস্ক : টাওয়ার হ্যামলেটসের ব্যস্ততম এবং ঘনবসতি এলাকা ওয়াটনি মার্কেটের আইডিয়া স্টোর থেকে এনএইচএসের করোনা টেস্ট এন্ড ট্রেইসিং সেন্টার সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় কাউন্সিলর রাবিনা খান এবং ব্যবসায়ীরা।
কমার্শিয়াল রোডের পাশে ব্যস্ততম ওয়াটনি মার্কেট। এখানে দিনের বেলা প্রচুর স্টল বসে। বাঙালী কমিউনিটির কেন্দ্র বিন্দু ওয়াটনি মার্কেটের আইসল্যান্ডের সামনেই আইডিয়া স্টোর এবং পাবলিক লাইব্রেরী।
এই ঘনবসিতপূর্ণ এলাকার আইডিয়া স্টোরে গত সেপ্টেম্বর থেকে টেস্ট এন্ড ট্রেইস সেন্টার বসিয়েছে সরকার। বিষয়টি জানাজানি হবার পর থেকে এলাকার বাসিন্দা এবং ওয়াটনি মার্কেটের নিয়মিত ক্রেতাদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এর ফলে মার্কেটের কেনাকেটাও কমে গেছে। ক্রেতারা আসছেন না। স্টল মালিক এবং অন্যান্য ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এই সেন্টার স্থাপনের পর থেকে ভয়ে ক্রেতারা ওয়াটনি মার্কেটে আসা কমিয়ে দিয়েছেন। এমন কি যারা এখানে ব্যবসা করছেন তাদের মধ্যেও এক ধরনের ভয় কাজ করছে। সেন্টার থেকে বের হয়ে কয়েক কদম হাঁটলেই স্টল, আইসল্যান্ডসহ অন্যান্য দোকান। টেস্ট করাতে এসে করোনা উপসর্গ নিয়ে কেউ যে স্টলে বা অন্যান্য দোকানে কেনা কাটা করতে যাচ্ছে না, এই নিশ্চিয়তা কেউ দিতে পারবে না। এ কারণে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে ভয় কাজ করছে বলে জানান ক্যাম্পেইনাররা।
কাউন্সিলর রাবিনা খান : ছবি মাইক ব্রোক
শেডওয়েল ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রাবিনা খান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, কারো সঙ্গে কোনো পরামর্শ না করেই এই ঘণবসতি এলাকাতে টেস্ট এন্ড ট্রেইস সেন্টার বসানোর সুযোগ দিয়েছে কাউন্সিল। সেন্টারটি এখান থেকে সরিয়ে নিরব এলাকায় স্থানান্তরের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। প্রয়োজনে হাইওয়ের পাশে তুলনামূলক নিভৃত এলাকা শেডওয়েল সেন্টার সরিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন কাউন্সিলর রাবিনা খান।
এদিকে টেস্ট এন্ড ট্রেইস সেন্টারটি ঘনবসতি এলাকা থেকে স্থানান্তর করতে কাউন্সিলে পিটিশ করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। পিটিশনে বলা হয়েছে, ওয়াটনি মার্কেট এলাকায় বাঙালীদের ঘনবসতি। আর বাঙালীরা এমনিতেই বিএএমই কমিউনিটির মধ্যে সবচাইতে বেশি করোনা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। তাই ঘনবসতি বাঙালী এলাকা থেকে সেন্টারটি কম ঘনবসিপূর্ণ এলাকায় সরানোর আব্দার জানানো হয়েছে পিটিশনে।
বস্ত্র ব্যবসায়ী ফারুক উদ্দিন : ছবি মাইক ব্রোক
ক্যাম্পেইনারদের অন্যতম বস্ত্র ব্যবসায়ী ফারুক উদ্দিন জানিয়েছেন, ভয়ে ক্রেতারা ওয়াটনি মার্কেটে আসা বন্ধ করে দিয়েছে। প্রতিদিন কাস্টমাররা টেলিফোন করে এই টেস্ট এন্ড ট্রেইস সেন্টারের ব্যাপারে অভিযোগ করছেন। তিনি আরো বলেন, ক্রেতাদের মধ্যে কার করোনা উপসর্গ আছে আর কার নেই সেটা বলা মুশকিল। টেস্টের জন্যে এসে উপসর্গকে হালকাভাবে নিয়ে যে কোনো দোকানে কেনা-কাটা করতেও আসতে পারে যে কেউ। তাই এ নিয়ে ভয়-ভীতি কাজ করছে সবার মধ্যে।
স্টল মালিক মোহাম্মদ এনায়েত : ছবি মাইক ব্রোক
আরেক স্টলহোল্ডার মোহাম্মেদ এনায়েত বলেছেন, টেস্ট সেন্টারটি দোকানপাটের এতো কাছে যে, ক্রেতা বা সাধারণ মানুষ এদিকে আসতে ভয় পাচ্ছে। তিনি বলেন, সেন্টারের পাশ দিয়ে প্রতিদিন স্কুল শিক্ষার্থীরাও আসা যাওয়া করে। পাশে প্রাইমারী এবং সেকেন্ডারী স্কুল এবং একটি মাদ্রাসাও রয়েছে। এতো ঘনবসতি এলাকায় টেস্ট সেন্টারে বসানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ওয়াটনি মার্কেটের আরেক জুয়েলারী ব্যবসায়ী এমডি মাহফুজুর রহমান। তিনি বলেন, সেন্টার থেকে বের হয়েই চোখের সামনে বিভিন্ন ধরনের স্টল এবং আইসল্যান্ডসহ অন্যান্য দোকান। সেন্টার থেকে বের হয়ে অনেকেই এখানে কেনাকাটা শুরু করে।
উল্লেখ্য টাওয়ার হ্যামলেটসে ওয়াটনি মার্কেটের আইডিয়া স্টোর এবং পাবলিক লাইব্রেরী, বেথনালগ্রীন পাবলিক লাইব্রেরী এবং মাইলএন্ড ইকোলজি প্যাভিলিয়নে টেস্ট এন্ড ট্রেইস সেন্টার রয়েছে।