ত্রিশ বছর ফুল দেইনি!

ত্রিশ বছর ফুল দেইনি!
১৪ ই আগস্ট রাত ৮ টা ১০ মিনিট।

বাংলাদেশফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের বিভাগীয় কমিটির সাধারণ শংকর দাস ফোন করলেন আমার মোবাইলে।

জানতে চাইলেন পাভেল ভাই-আপনি কোথায়? বললাম- বাসায়। শংকর বললেন-সিলেট সুরমার নুরুল ইসলাম উত্তরপূর্বের নুরুল ইসলাম, যুগান্তরের মামুন হাসানসহ ফটো জার্নালিস্টের বিভিন্ন জনের সাথে তিনি কথা বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে ১৫ আগস্ট সকাল ১০টায় শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পনের কথা। আমার মতামত জানতে চাইলেন।

আমি বললাম সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলী দিতে হবে। শংকর বললেন- বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের বিভাগীয় কমিটির সভাপতি ও বন্ধ হয়ে যাওয়া সিলেটের ডাকের ফটো সাংবাদিক আব্দুল বাতিন ফয়ছল ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদনে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।

আমি বললাম-কালের কন্ঠের ফটো সাংবাদিক আশকার আমিন রাব্বিকে ফোন দেওয়ার জন্য। শংকর বললো-রাব্বির সাথে কথা হয়েছে সিলেট প্রেসক্লাব ও সিলেট জেলা প্রেসক্লাব যদি শ্রদ্ধাঞ্জলী জানায়, তবে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদনে আপত্তি থাকার কথা নয়।

আমি রাব্বিকে ফোন করলাম। বললাম- দুই প্রেসক্লাবই ফুল দেবে। সে বললো- ফটো জার্নালিস্ট শ্রদ্ধাঞ্জলী দিলে আমি যাবো। আমি শংকরকে ফোনে বললাম- রাব্বির মত আছে, তুমি সবাইকে দাওয়াত দাও। রাত ১২টা ২৫ মিনিটে শংকর ফোন দিলো। বললো- আব্দুল বাতিন ফয়ছলের সঙ্গে একটু আগে কথা হয়েছে। ফয়ছল বলেছেন, ৩০ বছর থেকে বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের বিভাগীয় কমিটি বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে কখনো ফুল দেয়নি। তুমি নতুন কোনো নিয়ম চালু করনা! ভেজাল সৃষ্টি করো না। শংকর আমার কাছে জানতে চাইলো-ফুল কি দেওয়া হবে, না হবে না। আমি তাকে দৃঢ়তার সাথে বললাম, সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদন করা হবে, তুমি সবাইকে দাওয়াত দাও। ১৫ আগস্ট সকালে বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের বিভাগীয় কমিটির পক্ষ থেকে ৩০ বছর পর সে নিয়ম ভেঙে আমরা জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করলাম।

রাত সাড়ে ১২টার পর থেকে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনের আগ পর্যন্ত বার বার চিন্তা করছিলাম, হে বিবেক- যে নেতার জন্ম না হলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না।

একটি স্বাধীন দেশে আমার জন্ম হতো না। জন্মহতো না আমার উত্তরসূরিদের।

সেই অবিসংবাদিত নেতাকে শ্রদ্ধা জানাতে একজন সচেতন সিনিয়র ফটো সাংবাদিক আব্দুল বাতিন ফয়ছলের মতো ব্যক্তি কেন অপারগতা জানালেন-চিন্তার বিষয়।

ফেসবুকে কখনো আমি লাইক শেয়ার ছাড়া মন্তব্য করি না। কিন্তু জাতির জনককে অবমাননা করা একজন সিনিয়র ফটো সাংবাদিক ফয়ছল সাহেবের কান্ডজ্ঞানে নিজেকে মন্তব্য করা থেকে থামাতে পারলাম না।

নাজমুল কবীর পাভেল
১৫ আগস্ট ২০১৭

Advertisement