দুই টুকরা হয়ে গেল মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর!

ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: নিজের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীর পরিবারের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে ইউক্রেনকে বাধ্য করতে গিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুধু অভিশংসনের মুখেই পড়েননি; এবার ক্ষোভ ও উদ্বেগ ছড়িয়ে দিচ্ছে দেশটির প্রভাবশালী পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যেও। সম্প্রতি বিশ্বের নানা প্রান্তে কাজ করা পররাষ্ট্র দপ্তরের এক ডজন কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেছেন, ট্রাম্পের ইউক্রেন বিতর্ক এ বিভাগে সুস্পষ্ট বিভাজনের সৃষ্টি করবে। আর অভিশংসন তদন্তকে কেন্দ্র এই বিভাজন আরো বাড়িয়ে দিচ্ছেন স্বয়ং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও।

অন্যদিকে অভিশংসনের বিরুদ্ধে লড়তে থাকা ট্রাম্প প্রশাসন ডেমোক্র্যাট আইন প্রণেতাদের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ করেছে। ট্রাম্প ও তাঁর সমর্থকরা যখন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হুইসেলব্লোয়ারের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন, তখন দ্বিতীয় হুইসেলব্লোয়ারের আগমনের খবর শুনিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস।

সিএনএন জানায়, পররাষ্ট্র দপ্তরের এক ডজন কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেছেন, ট্রাম্পের ইউক্রেন বিতর্ক পররাষ্ট্র দপ্তরের রাজনৈতিক নিয়োগপ্রাপ্ত পেশাদার কূটনৈতিকদের মধ্যে বিভাজন বাড়িয়েছে। তাঁদের অনেকেই বলছেন, অন্য দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মৈত্রীকে ক্ষতিগ্রস্ত করার মাধ্যমে এই দপ্তরকে রাজনীতিকরণ করা হয়েছে। তাঁরা আরো বলেন, ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আইনজীবী রুডি জিউলিয়ানির সৃষ্টি এই তৎপরতার গতি আরো বাড়ানোর চেষ্টা করছেন স্বয়ং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও, যাতে পেশাদার কূটনীতিকদের মধ্যে হতাশা বাড়াচ্ছে। এ ছাড়া কর্মকর্তাদের অনেকে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিশোধ ব্যবস্থা গ্রহণের আতঙ্কেও আছেন।

কূটনীতিকদের এই দুশ্চিন্তা এরই মধ্যে প্রকাশ পেয়ে গেছে। ইউক্রেনে কর্মরত এক পেশাদার কূটনীতিকের এসংক্রান্ত একটি খুদে বার্তাও গত বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হয়েছে।

অন্যদিকে এএফপি জানিয়েছে, গত শনিবার ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও অভিযোগ করেছেন, অভিশংসন তদন্তকে কেন্দ্র করে ডেমোক্র্যাট নেতৃত্বাধীন কংগ্রেসনাল কমিটিগুলো পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তাদের হয়রানি এবং তাদের ওপর ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। তিনি বলেন, ‘এটা পরিষ্কার হয়রানি এবং আমি কখনোই আমার টিমের বিরুদ্ধে এমনটা ঘটতে দিতে পারি না।’ তিনি এই তদন্তকে সংকীর্ণ খেলা বলে অভিহিত করেন।

অন্যদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হুইসেলব্লোয়ার বিরুদ্ধে ট্রাম্প ও তাঁর সমর্থকরা ক্রমাগত আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিয়ে আসছেন। কিন্তু এরই মধ্যে দ্বিতীয় আরেকজন হুইসেলব্লোয়ারের আগমন ঘটতে যাচ্ছে। নিউ ইয়র্ক টাইম প্রকাশ করা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, যদি দ্বিতীয় হুইসেলব্লোয়ারের আগমন ঘটে এবং তিনি যদি ইউক্রেনকে ট্রাম্পের চাপ দেওয়ার বিষয়ে সুস্পষ্ট তথ্য দেন, তাহলে তা অভিযোগ খণ্ডনের জন্য আরো কঠিন হয়ে পড়বে। তবে দ্বিতীয় ব্যক্তির আগমনের খবরও ট্রাম্পকে তাঁর আক্রমণাত্মক বক্তব্য থেকে বিরত রাখতে পারছে না। তিনি এক টুইটে তাঁকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘তোমরা তাঁকে আসতে দাও। পত্রিকাটির প্রতিবেদনে জানানো হয়, গোয়েন্দা বাহিনীগুলো মহাপরিদর্শক মিচেল অ্যাটকিনসন এই ঘটনাকে কেন্দ্র যাঁদের সাক্ষ্য নিয়েছেন, দ্বিতীয় হুইসেলব্লোয়ার হতে যাচ্ছেন তাঁদের একজন।

Advertisement