দেখে নিন, কিভাবে হিসাব হয় ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতি

ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: ক্রিকেটের জটিল অঙ্কের নাম ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতি। আর সেই পদ্ধতিতে সবার আগে দেখা হয় কোন দলের কাছে কত সম্পদ রয়েছে। আর তার ভিত্তিতেই দেখা হয় কেমন হবে পরে ব্যাট করা দলের টার্গেট। নিয়মটি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা করা যেতে পারে নিচের তথ্য থেকে।

ম্যাচের শুরুতে ব্যাটিং টিমের কাছে দুটি সম্পদ থাকে –
* ৩০০ বল
* ১০ উইকেট

খেলতে খেলতে এগুলো শেষ হয়ে যায়, হয় ৩০০ বল শেষ হবে নয়তো সবাই প্যাভিলিয়নে ফিরে যাবে। ব্যাটিং টিম ওভার হারানো মানে, তারা তাদের সম্পদের পূর্ণ ব্যবহার থেকে বঞ্চিত হলো। ডিএলএস মেথডে তাই তাদের টার্গেট পুনঃনির্ধারণ করা হয় দুই দলের কাছেই কত সম্পদ বাকি আছে তার ভিত্তিতে। সব সময় এই সম্পদের ব্যবহার একভাবে হয় না। তাই টার্গেট পুনঃনির্ধারণের সময় দেখা হয় –

* কত ওভার নষ্ট হয়েছে
* কত উইকেট হাতে আছে
* ইনিংসের কোন পর্যায়ে বৃষ্টির হানা এসেছে

এটা সাধারণ হিসাব যে, প্রথমে ওভার নষ্ট হওয়ার থেকে, শেষের দিকে খেলা বিঘ্নিত হলে সেই ওভারের মূল্য বেশি হবে– কারণ প্রথমে ওভার নষ্ট হলে পুনঃপরিকল্পনা করে সময় নিয়ে খেলতে পারে, শেষের দিকে হলে সে সুযোগ কম থাকে। আর এটা ক্রিকেটের প্রতিষ্ঠিত সত্য যে, ইনিংসের প্রথম ১০ ওভার থেকে শেষ ১০ ওভারে রান বেশি হয়। প্রথম ২০ ওভার খেলার পর, বৃষ্টি এলো। এখন ডি এল এস দেখবে, কত সম্পদ আছে হাতে এই মুহূর্তে। যে দল ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে এই বিশ ওভারে, আর যে হারিয়েছে ৩ উইকেট, তাদের মধ্যে নিশ্চয়ই বাকি সম্পদের পরিমাণের পার্থক্য আছে।

যদি প্রথম ইনিংসের মাঝপথে বিঘ্ন ঘটে এবং প্রথম ইনিংস কম ওভারে শেষ করতে হয়, তখন দ্বিতীয় ইনিংসের টার্গেট আবার নতুন করে সেট করা হয়। এ ক্ষেত্রে প্রথম ইনিংসে কত ওভার বাকি ছিল, কত রান হয়েছে আর কত উইকেট ছিল, এই সব কিছুর ওপর ভিত্তি করে হিসাব হয়। এগুলিকে বলা হয় রিসোর্স পয়েন্ট।

সাধারণত এসব ক্ষেত্রে লক্ষ্য দ্বিতীয় ইনিংসে বেড়ে যায়। এ ক্ষেত্রে যুক্তি, প্রথম ইনিংসের কিছুটা অংশ জুড়ে প্রথমে ব্যাট করা দল ভেবেছিল তাদের হাতে আরো সময় আছে। ওভার কমে যাওয়ার কথা আগে জানলে তারা আরো দ্রুত রান নেওয়ার উদ্দেশে ব্যাটিং করত। সেই রানটা ব্যালান্স করা হয় লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে।

যদি দ্বিতীয় ইনিংসেও বিঘ্ন ঘটে, ওই ইনিংসের ওভার সংখ্যাও কমাতে হয়, তাহলে ডিএল মেথড অনুযায়ী হাতে থাকা রান, ওভার ও উইকেট অনুযায়ী তাদের টার্গেট আবারো ঠিক করা হয়। এই নির্ধারণ ‘রিসোর্স’-এর ভিত্তিতে করা হয়। এই রিসোর্স হলো হাতে থাকা ওভার এবং উইকেট মিলিয়ে একটা শতাংশের হিসাব।

ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতি যেভাবে প্রয়োগ করা হয়, তাহলো-ইনিংসের শুরুতে রিসোর্স পার্সেন্টেজ যত ছিল, বিরতির ফলে যেটুকু রিসোর্স নষ্ট হবে, বাকি যা রিসোর্স থাকবে।

এখন, পরে ব্যাট করা দলের রিসোর্স যদি প্রথমে ব্যাট করা দলের থেকে কম হয়, তা হলে দুই দলের বাকি থাকা রিসোর্সের অনুপাত করতে হবে। এরপর পরে ব্যাট করা দলের টার্গেট হবে প্রথমে ব্যাট করা দলের স্কোরকে সেই রেশিও দিয়ে ভাগ করে।

যদি পরে ব্যাট করা দলের রিসোর্স প্রথমে ব্যাট করা দলের রিসোর্সের থেকে বেশি হয়, তাহলে প্রথম দলের রিসোর্সকে দ্বিতীয় দলের রিসোর্স থেকে বাদ দিয়ে দিতে হবে। এরপর এটাকে ২২৫ (আইসিসি নির্ধারিত ওডিআইয়ের গড় স্কোর)-এর পার্সেন্টেজ তৈরি করতে হবে। এরপর সেটাকে প্রথমে ব্যাট করা দলের রানের সঙ্গে যোগ করে পরে ব্যাট করা দলকে টার্গেট।

Advertisement