ধর্ষণ করে এক বা একাধিকজনে, উপভোগ করে পুরো সমাজ

:নজরুল ইসলাম:

তিনটি বর্ণের একটি শব্দ নিয়ে আজকে একটু আলোচনা করতে চাই।

সব কিছুতে মাতব্বরি ভাল না তা জেনেই সাহস করে শুরু করেই দিয়েছি।

যাক বর্ণ তিনটি মিলে যে শব্দ চয়িত হয়েছে তা হলো ”ধর্ষণ”!

অনেক পরিচিত শব্দ তাই না? এই শব্দের সাথে মিশে আছে থুথু-ঘৃণা উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও অনিশ্চয়তা। চেষ্টা অব্যাহত থাকবে মূল বিষয় বস্তুর আশে পাশে থেকেই আলোচনা শেষ করতে।

আমাদের কমন সমস্যা হচ্ছে আমরা যা বলি তা করি না। আর কলম মাইক্রোফোন opportunity হাতের কাছে পেলে তো আর কথাই নেই। ধর্ষণের মত এত নোংরা একটি শব্দ বিশ্লেষণে রুচিতে বাঁধলেও সামাজিক awareness আলোচনার স্বার্থে একটু আলোচনা করে নিচ্ছি। প্রথমেই জেনে নেই ধর্ষণ কি?

ধর্ষণ শব্দটি শুনলেই প্রাথমিকভাবে আমাদের মনে হবে যে নোংরা রুচিহীন দৃশ্যপট ভেসে ওঠে তা হলো-অপরিচিত কোনো নারীকে নির্জন কোনো স্থানে বা প্রকাশ্যে বিপরীত লিঙ্গের কারো দ্বারা জবরদস্তী করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করা। শুধু অপরিচিত মানুষ দ্বারা জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্কই ধর্ষণ নয়, এর বাহিরেও অনেক প্রকার ধর্ষণ আছে যেমন. প্রেমিকাকে নির্জন স্থানে ডেকে নিয়ে তার অমতে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন।

বেআইনীভাবে কারো মতের বিরুদ্ধে তার সাথে যৌনাচার করাই ধর্ষণ।

পাঠক মনে রাখবেন ধর্ষণ মানে প্রচণ্ড আবেগ কিংবা অন্তরঙ্গ শারীরিক সম্পর্ক নয়। ধর্ষণ হচ্ছে এক প্রকার আগ্রাসন এবং সহিংস অপরাধ যা প্রায়ই জোরপূর্বক সংগঠিত হয়।

কোনো সিরিয়াস বিষয় নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা, জনসচেতনতা, করতে গিয়ে আপনি নিজেই যদি সিরিয়াস হয়ে যান তাহলে আলোচনা ব্যাহত হওয়ার সম্ভবনাই বেশি। তাই ভাবছি একটি হাসির জোকস বলে মূল আলোচনা শুরু করলে কেমন হয়।

ঐদিন লন্ডনে সমাজের হালচাল ও আমাদের ছেলে-পেলে, ছোট ভাইদের সামাজিক ও নৈতিক অধঃপতন প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে কথা বলছিলাম আমার এক বন্ধুর সাথে। প্রসঙ্গ ওঠে স্কুল পড়ুয়া বাচ্ছাদের ধর্ষণের মত জগণ্যতম কাজে সম্পৃক্ত হওয়া নিয়ে।

আলোচনার এক পর্যায়ে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ফোনের ওপার থেকে সে আমাকে বলল ওয়েল ”অস্ত্র তো সবার কাছে একটা আছে এখন কে কাকে কখন এট্যাক করে সেটাই প্রশ্ন! তাৎক্ষণিক না বুঝলেও বেশ একটা সময় লাগেনি হাসির জোকসটি।

আজকাল টিনএজ বাচ্চার অভিভাবক হওয়ার মতো বড় চ্যালেঞ্জ আর কিছু হয় না।

বর্তমানে আমরা অভিভাবকরা টের পাচ্ছি সন্তানকে যথাযথভাবে বড় করার প্রক্রিয়াটি যে কতটা কঠিন হয়ে উঠছে।

আমাদের আসপাশের ১২ থেকে ২০ বছর বয়সী বাচ্চাদের নিয়ে বাবা-মায়ের কত দুশ্চিন্তা।

একেকটা বাচ্চার সমস্যা একেক রকম, কারও বাচ্চা পড়াশোনা করছে না, কেউ বা সারাক্ষণ ফেসবুকিং করছে, কেউ মাদক গ্রহণ করছে, কেউ পড়ে আছে বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে, কেউ ভিডিও গেম বা ইন্টারনেট জগতে ব্যস্ত, কারও কারও সমস্যা প্রেম থেকে পর্নোগ্রাফি পর্যন্ত গড়িয়েছে, কারও বাচ্চা মা -বাবার কথা শুনছে না, কেউ বা নিজেকে সমকামী বলে ঘোষণা দিচ্ছে আবার কেউ বা নাম লিখিয়েছে ধর্মীয় মৌলবাদী সংগঠনের খাতায়।

অভিভাবকবৃন্দ আপনার টিনেজ, স্কুল বা কলেজ পড়ুয়া ছেলের দ্বারা সম্পাদিত সৃষ্ট ধর্ষণের মত অপরাধের দায় আপনি এড়িয়ে যেতে পারেন না।

বাচ্চাকে শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসার দায় আমরা কেউ এড়িয়ে যেতে পারি না। আপনার প্রতিবেশির বাচ্চা নষ্ট হয়ে গেছে বলে হাটে ঘাটে মাঠে ময়দানে তাদের নেগেটিভ সমালোচনা করতে করতে আপনি অস্থির, ছেলে ফেলে সবার বড় হচ্ছে আপনার বাচ্চা যে নষ্ট হবে না তার গ্যারান্টি কোথায়? আপনার বাচ্চার মতিগতি আপনাকে বুঝতে হবে। আপনার ছেলে ধর্ষণের মত একটা জগন্য অপরাধ প্রবণতায় জড়িত হয়েছে আপনি উন্মাদ তাকে কি ভাবে তার কুকর্ম থেকে বাঁচাবেন। এই ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সে দিকটি কি আপনার বিবেচনায় রাখা উচিৎ না?

আমরা অভিভাবক একেকজন একেকভাবে আমাদের বাচ্চাদের সমস্যাগুলো সমাধান করছি। আমরা অভিভাবকেরা কেউ কেউ বাচ্চার প্রতি ছোটবেলা থেকে উদাসীন থাকি। তাদের পর্যাপ্ত সময় দিতে পারি না। কেউ সন্তানকে অতিরিক্ত নজরদারিতে রাখার চেষ্টা করি। কারো বেলায় ভালোবাসার বাড়াবাড়ি চলে একটু বেশি।

কেউ কেউ সন্তানকে সময় দিতে না পেরে জিনিসপত্র দিয়ে অভাব মেটানোর চেষ্টা করি। কেউ মনে করি বাচ্চাকে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আধুনিক সিটিজেন হিসেবে গড়ে তুলতে হবে, তাই consequence না ভেবেই তথ্য প্রযুক্তি হাতে তুলে দিই, এরপর আর কোনো নজরদারি রাখি না। মনে হচ্ছে বিষয়বস্তু থেকে দূরে সরে গিয়ে অভিভাবকদের বাণী বিবৃতি দেওয়া শুরু করেছি। পাঠক, আমিও আপনাদের মত অভিভাবক। আলোচ্য সমস্যা গুলো আমাদের সমস্যা, সবাইকে মিলেই উত্তরণের জন্য কাজ করতে হবে।

মূল বিষয় বস্তুতে ফিরছি -সমাজে ধর্ষণ করে একজন বা একাধিকজনে আর ধর্ষণ উপভোগ করে সমগ্র সমাজ। ধর্ষক বুক ফুলিয়ে কলার উঁচু করে বীরের বেশে এলাকায় ঘুরে বেড়ায় আর ধর্ষীতার স্থান হয় নির্জন ঘরের কোনে যদি সে বেঁচে থাকে–বড়ই মর্মান্ত্রিক! একটি মেয়ের শারীরিক ধর্ষণের পর শুরু হয় মানসিক ধর্ষণ।

পত্রিকার পাতায়, কলমে, কলামে, থানায় পুলিশের ডাইরিতে, আদালতে উকিলের আপত্তিকর জেরায়, বিশেষ করে হলুদ সংবাদিকদের তত্ব ভিত্তিহীন খবর শিরোনামে। আমাদের মৌলভীবাজারের প্রয়াত এমপি সমাজকল্যান মন্ত্রি সৈয়দ মহসিন আলী সাহেব কিন্তু অতিষ্ট হয়েই ক্ষেপেছিলেন সাংবাদিক নামের সেইসব হলুদ সাম্বাদিকদের উপর।

ধর্ষণের মত একটি আপত্তিকর পীড়াদায়ক ঘটনাকে নিয়ে সমাজের মুখোশধারী দালাল বাটপার, হলুদ সাংবাদিক, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের আচার-আচরণ প্রায়ই উদ্বেগজনক ও প্রশ্নাতীত।

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রাসঙ্গিক খবর শিরোনাম প্রায়ই চোখে পড়ে। এই সমাজের অন্যায় অনিয়ম, আপত্তিকর ঘটনা রটনা নিয়ে কথা বলার মানুষের সংখ্যা কি দিন দিন ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে?

ইসলাম ধর্মে নারীদের যেমন পর্দা করতে বলা হয়েছে তেমনি পুরুষকে পর্দা করার কথা না বললেও দৃষ্টি অবনত করার কথাও বলা হয়েছে। আমার এক মরোক্কান Moroccan colleague কলিগ এর কথা বলছি। আউট অফ আওয়ার বা ব্রেইক টাইমে আমরা যখন ফ্ৰী থাকি তখন বিবিসি নিউজ এর পাশাপাশি অন্য চ্যানেলও যখন দেখি তখন প্রায়ই অপত্তিকর দৃশ্য টিভি স্ক্রীনে চোখে পড়ে। আমার কলিগ আপত্তিকর দৃশ্য আসলেই হাত দুটি দিয়ে চোখ বন্ধ করে রাখে আর বলে- লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ -যার অর্থ শয়তানের কোনো ওয়াসওয়াসা বা দুরভিসন্ধিমূলক কোনো প্রতারণা থেকে আমাদের বাঁচাও।

এখানে তার নৈতিক চারিত্রিক শিক্ষা কততুকু শক্তিশালি তার একটা উদাহরণ আপনাদের বলছি। তাই বলছি, ধর্ষণ ইভটিজিং এ সবার পিছনের কারণ হিসেবে নারীর পোশাক নিয়ে হৈচৈ করা হলেও পুরুষের কূ-দৃষ্টির কথা সেভাবে বলা হয়না আর এই বিষয়টি ভাবিয়া দেখবার সময় এসেছে বোধহয়।

ধর্ষণ কেন হচ্ছে এমন প্রশ্নের উত্তর একেকজন একেক ভাবে দেয়ার চেষ্টা করেন।

কেউ বলেন ধর্মীয় অনুশাসনের অভাব, কেউ বলেন ইন্টারনেট ব্যবহারের কুফল, কেউ কেউ স্বয়ং সেই মেয়েটির চরিত্র আর পোশাক নিয়েই প্রশ্ন তুলেন! আসলেই কি যুক্তি গুলো যথার্থ?

আমার কাছে কেবল মাত্রই ধর্মীয় অনুশাসনের অভাব সেটা যথার্থ মনে হয় না। কারণ প্রায়ই দেখা যায় মসজিদের ইমাম, মাদ্রাসার শিক্ষক, ধর্মীয় শিক্ষা দিতে আসা প্রাইভেট টিউটর অনেকেই ধর্ষণের সাথে জড়িত হচ্ছেন। এসব ঘটনা দেখলে কি মনে হয় ধর্মীয় অনুশাসনের অভাবের কারণে ধর্ষণের হার বাড়ছে? যেখানে ধর্ম গুরুরাই এসবের সাথে জড়িত। তবে অনেক গুলো identify করনের মধ্যে ধর্মীয় অনুশাসনকে আমি ছোট করে দেখছিনা।

আমাদের ব্যক্তি পারিবারিক সামাজিক জীবনে অধঃপতনের অনেক গুলো কারণের মধ্যে অন্যতম হলো ইসলামী জীবন বিধান থেকে আমরা অনেক দূরে সরে আসছি। আমাদের সমস্যা আমরা identify করতে পারলেও উত্তরণের পথে বাঁধা আমাদের ঈমান, আমল এবং ইনসাফ।

সমাজে বাড়ছে নারীর প্রতি সহিংসতা বর্বরতা। ধর্ষণ ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছে নারীরা। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন ধর্ষণের জন্য পোশাকের কোনো দায় নেই। বরং দায়ী হচ্ছে ধর্ষকের মানসিকতা আর বিচারহীনতার। বাসে ছেলেরা হিজাব পরে চলাফেরা করা মেয়ের গায়েও হাত দেয়, বোরখা পরা মেয়েরাও ধর্ষণের শিকার হয়। তাই বলছি যতক্ষণ পর্যন্ত ছেলেদের মানসিক অবস্থার উন্নতি হবে না ততদিন এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন। মানবাধিকার কর্মীদের সাথে একটু হালকা ভাবে দ্বিমত পোষণ করছি নোট করছি যা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া ঠিক হবে না। মানুষের দৃষ্টি কাড়ে এমন ওয়েস্টান ডিজিট্যাল পোশাক পরিচ্ছেদ কু-স্বভাবের লোকদের দৃষ্টি কাড়তে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তাই এ ব্যাপারে আমাদের একটু অন্য ভাবে চিন্তা করতে হবে। আচার আচরণে সৃজনশীল মন মানসিকতায় আপনি যদি সুন্দর আকর্ষণীয় না হন যতই ওয়েস্টান পোষাক পরিচ্ছেদ পরেন না কেন আপনাকে সুন্দর দেখাবেনা।

বিচারহীনতার কারণে ধর্ষনের ঘটনা বেশি ঘটছে। সমাজে একটি অন্যায় কাজ সম্পাদিত হল। সমাজপতিদের মুখ বন্ধ, জনপ্রতিনিধিরা আকাশ থেকে মাটিতে নেমেছেন এমনটাই ভাব, ধর্ষণের মত ঘটনা তারা যেন এই প্রথম শুনলেন। বিচার কার্যে দীর্ঘতা, সৃষ্ট জটিলতার কারণে প্রতিটা অপরাধ দুর্বল হয়ে যায়। যখন একটি দেশের আইন ও বিচার ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে রাজনৈতিক instability বিরাজ করে তখন আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা অসম্ভব হয়ে পড়ে। অপরাধীরা মনে করে দুর্বল নারীরা কিছু করতে পারবে না। তাই নারী ও শিশুরা নির্যাতনের শিকার হয় বেশি। সারা দেশে প্রতিনিয়তই এসব ঘটনা ঘটছে -একটা দু’টো ঘটনা যখন আলোচিত হয় তখন সবার নজরে আসতে থাকে। অপরাধীরা যতই ক্ষমতাশালী হোক না কেন তাদের আইনের আওতায় এনে দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করে শাস্তির বিধান করলে নারী ও শিশুদের ওপর নির্যাতন অনেক কমানো সম্ভব। এই প্রক্রিয়ায় কোনো রাজনৈতিক দলের প্রভাব, ফোনকল, স্বজনপ্রীতি দুর্নীতি জিরোতে নিয়ে আসতে হবে একটি মানবিক কারনে যে, তাদের কাছে আমাদের কারো স্ত্রী বোন কেউ নিরাপদ নয়।

একটা বিষয় লক্ষনীয়, সমাজে প্রায়ই ধর্ষিতার পক্ষে কেউ থাকে না সবাই ধর্ষকের পক্ষে। প্রশাসন মিডিয়া সমাজ কিংবা রাষ্ট্র একযোগে কাজ করে ধর্ষককে বাঁচানোর জন্য। তার বিরুদ্ধে মামলা নেয়া হয় না, থানার ওসি ইচ্ছে করলে অপরাধীকে নিমিষেই গ্রেফতার করতে পারে কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য গ্রেফতারের জন্যে অপরাধীকে হাতের কাছে পেয়েও খুঁজে পাওয়া যায় না। গ্রেফতার হলেও বিভিন্ন স্থান থেকে সুপারিশ চলে আসে যার কারনে কয়েক ঘন্টার বেশি আসামিকে হাজতে থাকতে হয় না। হাজত থেকে বেরিয়ে এসে ধর্ষিতার পরিবারকে ক্রমাগত হুমকি দেয়া চলতে থাকে যাতে মামলা তুলে নেয়া হয়—এটাই হচ্ছে আমাদের সমাজের বাস্তব চিত্র।

প্রিয় পাঠক, অত্যন্ত অগোছালো ভাবে যখন যা মনে হচ্ছে আলোচনা করছি। একটি বার ভাবিয়া দেখিনি আমার আলোচনা সমালোচনায় ধারাবাহিকতা আছে কিনা। আমার মনে হচ্ছে ইতিমধ্যে আপনাদের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছি। আজকের আলোচনার পরিসমাপ্তি ঘটাইতে চাই। কিন্তু একের পর এক ঘটনা প্রবাহ মনে উকি দিচ্ছে। পরিশেষে নিজেকে কিভাবে ধর্ষণের হাত থেকে রক্ষা করতে পারেন একটু আলোচনা করেই শেষ করবো কথা দিচ্ছি।

দেখেন, ধর্ষণের ভয়ে আমাদের নারীরা ঘরে বসে থাকবে না। ধর্ষণের ভয়ে মেয়েদের দেশের বাহিরে যাওয়ার কথাও না। প্রতিকূল পরিস্তিতি মোকাবেলা করেই আমাদের এই সমাজে বসবাস করতে হবে। টেকনিক বদলাতে হবে, নিজেকে অতিউৎসাহী ডিজিটাল বা আধুনিক রমনী ভাবা থেকে বিরত থাকতে হবে। একটু সতর্ক হতে হবে, উদাসীন ভাবকে পরিহার করতে হবে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে মানবীয় গুণাবলী সম্পন্ন আধুনিক স্মার্ট হতে হবে আর নোট করতে হবে —

আপনার বন্ধু, ক্লাসমেট, কলিগ বা সঙ্গী আপনাকে কোনো নির্জন স্থানে নিতে চাইলে যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি তাকে সম্পূর্ণ বিশ্বাস করতে না পারবেন তার কথায় কোনো নির্জন স্থানে যাবেন না! কারণ মানুষের সাথে শয়তান তো আছেই আর নির্জন স্থানে শয়তানের আছর প্রভাব একটু বেশিই। তাই কোনো গোপন স্থানে দেখা করা থেকে বিরত থাকুন, এমনকি পুরুষটি যদি আপনার সোনার ময়না পাখিও হয়। এমন কোনো ব্যক্তির সাথে সম্পর্ক রাখবেন না যে চরিত্রহীন এবং সুযোগ সন্ধানী। প্রিয় স্কুল মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রী বন্ধুরা আপনাদের ক্লাস শুরু সকাল ১০ ঘটিকায় ৮ ঘটিকায় স্কুলে আসার প্রয়োজন আছে কি? আড্ডা মারতে ২ ঘন্টা পূর্বে স্কুলে এসে প্রায়ই যখন ডংএ রং হচ্ছে সংযত সচেতন থাকুন এবং থাকতে শিখুন। কোথাও ঘুরতে গেলে অনেক বন্ধু বান্ধবের সাথে যান এবং একজন আরেকজনের প্রতি নজর রাখুন। লোক লজ্জার ভয়ে নিশ্চুপ থাকবেন না, ধর্ষনের হুমকিতে পড়লে গর্জে উঠুন, অাত্মরক্ষার কৌশল শিখুন।

প্রিয় পাঠক ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি আপনাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করার জন্য। পরিশেষে যা বলতে চাই,-সামাজিক অবক্ষয় রোধ থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ নতুন প্রজন্মকে নৈতিকতায় উদ্বুদ্ধ করানো। পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে, আমার প্রিয় বাংলাদেশ আধুনিক ডিজিটাল হচ্ছে। কিন্তু প্রায়ই মনে হয় মানবীয় গুণাবলীসম্পন্ন সুনাগরিক তৈরিতে আমরা এখনো পিছিয়ে আছি।

নজরুল ইসলাম

ওয়ার্কিং ফর ন্যাশনাল হেল্থ সার্ভিস, লন্ডন
মেম্বার, দি ন্যাশনাল অটিষ্টিক সোসাইটি ইউনাইটেড কিংডম
আজীবন সদস্য, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন ঢাকা বাংলাদেশ
trade.zoon@yahoo.com

Advertisement