নমিনেশন কেচকি মাছের ভাগাই সেনদা !!

তওহীদ ফিতরাত হোসেন

বুক পকেটের কলম মানেই শিক্ষিত না। মাথায় টুপি মুখে দাড়ী মানেই সাচ্চা মুসলমাননা।
জয়-বাংলা শ্লোগান দিলেই মুজিব প্রেমি না।
তবে এরা কারা চারিদিকে মুজিব কোট আর জয় বাংলা শ্লোগান ? ভাল করে শুনলে শোনা যায় এরা জয় বাংলা যতবার বলে তার চেয়ে বেশী বলে লালভাই কালা ভাইয়ের নাম।

এরা নৌকার লোক না ! নৌকার পালে হাওয়া লেগেছেতো তাই তাড়াতাড়ি সকলে পাড়ি দিতে চায়।
নরেন্দ্র মোদী চা বিক্রেতা যদি ভারতের মতন দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারে , বাস কন্ট্রাকটর রজনিকান্ত্ যদি সুপারষ্টার হতে পারে তবে আমরা পারবোনা কেন ? বুক পকেটেতো কলম আছেই।
বাংলাদেশের একাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য মনোনয়নের জন্য দৌড় দেখে কেচকি মাছের ভাগা বিষয়ক বাবু সুরন্জিত সেন গুপ্তের বিখ্যাত উক্তিটির কথা বারবার মনে পড়ে।

আসলেই নমিনেশন পাওয়া যেন কেচকি মাছের ভাগা

পকেটে টাকা থাকলেই কিনে নেওয়া যায়। তিনশ আসন আগ্রহী প্রার্থী ৩০ হাজার। বড় দুই রাজনৈতিক দলের ১০/১৫ কোটি টাকার উপার্জন। মাশাআল্লাহ।
সরকারী দল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ফেইসবুক দেখে মনে হয় তারা এক একজন সংসদ সদস্যই হয়ে গেছেন। বর্তমান এমপিকে পচাইতে রাস্থা ঘাটের করুন দশার ফটো দিচ্ছেন। ২৫০ সীটের অবস্থাই কাহিল ? কোন কাজ হয়নি। কয়েকটা হেভিওয়েট সীট ছাড়া সকলেই বদনামী। নমিনেশন পাবার জন্য বর্তমান এমপি কোন কাজের না প্রমান করতে গিয়া পুরো দলের বিরুদ্ধই করছেন। তিনশত সীটের প্রধান সমালোচক দলের মানুষই বেশী। আওয়ামীলীগ বলছে দেশ উন্নয়নের মহা সড়কে আর মনোনয়ন প্রত্যাশীরা বলছেন তার এলাকায় কোন কাজ হয়নি। তিনি গিয়ে সোনা রুপা দিয়ে এলাকাকে মুড়িয়ে দেবেন।

বিএনপিতেও তাই। কে কবে কি করেছেন। কে সরকারের দালাল , ১/১১ এ কে সংস্কারবাদী ছিলেন তাই নিয়া একে অন্যকে ঘায়েল করছেন। কাদা ছুড়াছুড়ি নিজেদের মধ্যে করে সত্য মিথ্যা বলে ক্ষতিসাধন হয় দলের। নিজ স্বার্থের কাছে দল ও দেশ কিছুই না।

দলের কেন্দ্রীয় কমিটি আছে। বিচার দিতে হয় দলের প্রধানের কাছে দেওয়া যায়। এটা প্রকাশ্যে সভা সমাবেশ করে যারা তাদের মগজ কতটুকু আর দলীয় আনুগত্য কতটুকু বুঝে নেওয়া যায়। প্রতিটি দলের উচিত দলীয় ফোরামে দলের ভুল ত্রুটির আলোচনা সমালোচনা করা। ব্যথয়ে এদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া।
দুই চারজন সাবেক ছাত্র নেতাকে চিনি যারা নিজস্ব বলয়ের কিছু মানুষ নিয়া নৌকা মার্কার জন্য মাঠে। বিগত ২০/২৫ বছর এলাকার সাথে কোন যোগাযোগ নাই। কেন এক কালে কোন কলেজের ভিপি জিএস ছিলেন , রাজনিতীর কোন অবদান না থাকলেও লেজুড় বৃত্তিতে উস্তাদ। কলেজ কমিটিতে বড় পদে ছিলেন এখন ইংল্যান্ড বা আমেরিকায়। ইদানীং দলের বিদেশী শাখার বড় নেতা। কোন ভাবে দু এক কেন্দ্রীয় নেতাকে বাসায় দাওয়াত খাইয়ে এখন মার্কার দাবীদার। কি করেছেন দলের প্রয়োজনে ? না দেশে না বিদেশে কি অবদান দলের জন্য ? কর্মীর জন্য ?
নিজেকে আয়নায় না দেখে বড় মাথা করা ঠিক না। মাথার টাক পরচুলা দিয়ে ঢাকা মানেই সব লুকিয়ে ফেলা না। বাংলার পোড় খাওয়া মানুষ কাক আর কোকিল দুটোই চেনে।
নমিনেশন কেচকি মাছের ভাগা নয় সেন দা। এই খয়ের খা রা বেশীদিন থাকবেনা। জনগনের জন্য নিবেদিত দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক মাঠ কর্মীরই মুল্যায়ন হবে অবশেষে। সংসদে জনগনের কথা বলবে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা।

তওহীদ ফিতরাত হোসেন

(রাজনৈতিক বিশ্লেষক সাবেক জিএস,এম সি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ সিলেট)

Advertisement